×

খেলা

প্যাটেলের রেকর্ডের দিনে ৬২ রানে গুটিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১, ০৪:৪৬ পিএম

প্যাটেলের রেকর্ডের দিনে ৬২ রানে গুটিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড

অশ্বিনের বলে বোল্ড হেনরি নিকোলস

প্যাটেলের রেকর্ডের দিনে ৬২ রানে গুটিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড
প্যাটেলের রেকর্ডের দিনে ৬২ রানে গুটিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড

মুম্বাইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দারুণ জমে উঠেছে ভারত -নিউজিল্যান্ড টেস্ট। ভারতের ৩২৫ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে আজ ২৮.১ ওভারে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে গেছে কিউইদের প্রথম ইনিংস। ভারতীয় বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং তোপে মাত্র দুই ব্ল্যাক ক্যাপস ব্যাটার দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পেরেছেন। অধিনায়ক টম লাথাম ১৪ বলে ১০ এবং কাইল জেমিসন ৩৫ বলে ১৭ রান করেছেন। অন্য কোনো কিউই ব্যাটার দুই অংকের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। ভারতের বোলারদের মধ্যে পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ১৯ রানে ৩, অক্ষর প্যাটেল ১৪ রানে ২ এবং অশ্বিন ৮ রানে ৪ উইকেট লাভ করেন। অপর উইকেট তুলে নেন যাদব। মুম্বাই টেস্টের আজ দ্বিতীয় দিন। এখনো ২৬৩ রানে পিছিয়ে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। এ টেষ্টে ফলাফল যে আসবে তা দিবালোকের মত স্পর্ট। প্রথম টেস্ট ড্র হয়েছিল।

শুক্রবাব ম্যাচের প্রথমদিন ৪ উইকেট হারিয়ে ২২১ রান করেছিল ভারত। সবকয়টি উইকেটই নিয়েছিলেন এজাজ। শনিবার দ্বিতীয় দিন তার ঘূর্ণি ফাঁদে পড়ে আর ১০৪ রান তুলতে বাকি সব উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা। শনিবার ছয় উইকেটও নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল।  ভারতের সবকটি উইকেট নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন  কিউই স্পিনার প্যাটেল। তার জন্মস্থান মুম্বাইতে গড়লেন তিনি এই ইতিহাস। তিনিসহ টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৪ বছরের ইতিহাসে মাত্র ৩ জনের আছে এই কীর্তি। তিনজনই স্পিনার। ১৯৫৬ সালে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই কীর্তি গড়েছিলেন ইংল্যান্ডের জেমস চার্লস লেকার। ওই টেস্টে তিনি নিয়েছিলেন ১৯ উইকেট। তার ৪৩ বছর পর ঘরের মাঠ দিল্লিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে একই কীর্তি গড়েছিলেন ভারতের অনিল কুম্বলে। কুম্বলের ২২ বছর পর ভারতের মাটিতে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়লেন কিউই স্পিনার আজাজ।

[caption id="attachment_322189" align="aligncenter" width="700"] মুম্বাই টেষ্টের দ্বিতীয় দিনে শনিবার ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের বলে বোল্ড নিউজিল্যান্ডের রস টেইলর[/caption]

১৯৫৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যানচেস্টার টেস্টে ৫৩ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অফস্পিনার জিম লেকার। পরে ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭৪ রানে ১০ উইকেট নেন ভারতের লেগস্পিনার অনিল কুম্বলে। চলতি শতকে প্রথম বোলার হিসেবে লেকার-কুম্বলের দলে যোগ দিলেন কিউই বাঁহাতি স্পিনার এজাজ। যিনি হয়তো খেলতে পারতেন ভারতের হয়েই। ৪৭.৫ ওভার বোলিং করে ১১৯ রান খরচায় এজাজের শিকার পুরো দশটি উইকেট। টেস্টে দশে দশ পাওয়া তিন স্পিনারের মধ্যে  এজাজই বেশি (এক ’শর উপরে) রান দিয়ে দশ উইকেট পেয়েছেন। এজাজের ইতিহাসগড়া ইনিংসে ভারতকে নিরাপদ সংগ্রহে পৌঁছে দেয়ার কৃতিত্বটা মায়াঙ্কের। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরিতে তিনি করেছেন ১৫০ রান। এছাড়া ফিফটি হাঁকিয়ে ৫২ রানে আউট হন অক্ষর। ভারতের ইনিংস থামে ৩২৫ রানে। ঘটনাটা ঘটিয়েই ফেললেন এজাজ প্যাটেল। মুম্বাই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতের ১০ উইকেটের সবগুলোই নিলেন নিউজিল্যান্ডের এই বোলার। সর্বশেষ ২২ বছর আগে এমন ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল ক্রিকেট বিশ্ব। অনিল কুম্বলের কল্যাণে। দেড়শ বছরের ইতিহাসে এর আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন জিম লেকারও।

মুম্বাই টেস্টে শুভমন গিলকে ফিরিয়ে শুরুটা করেছিলেন এজাজ। এরপর টেস্টের প্রথম দিনেই চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলিদের সাজঘরের পথ দেখিয়েছিলেন শূন্য রানে। সেদিনই আউট করেছিলেন শ্রেয়াস আয়ারকেও।

[caption id="attachment_322190" align="aligncenter" width="700"] এই বল দিয়ে ভারতের ১০ উইকেট তুলে নেন কিউই স্পিনার এজাজ প্যাটেল[/caption]

শনিবার যেন আরও ধারালো হয়ে উঠলেন এজাজ। সকালেই অনন্য হয়ে গেলেন ঋদ্ধিমান সাহাকে আউট করে। নিউজিল্যান্ডের প্রথম কোনো স্পিনার হিসেবে প্রতিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেটই তুলে নিয়েছিলেন এজাজ প্যাটেল। পরের বলেই রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে আউট করে শেষ পর্যন্ত ১০ উইকেট তুলে নেন তিনি।  দুর্দান্ত ব্যাট করা মায়াঙ্ক আগারওয়ালই যত দুশ্চিন্তার কারণ ছিলেন। অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে সেই আগারওয়াল আরও ২৮ ওভার কাটিয়ে দিলেন। ততক্ষণে আবার ‘পারফেক্ট টেনে’র আলোচনা থেমে গিয়েছিল। ইনিংসের ১০০তম ওভারে আগারওয়ালকে (১৫০) উইকেটরক্ষকের হাতে বন্দী করে নিজের সপ্তম উইকেট তুলে নিলেন এজাজ। একটু পরই আরেক পথের কাঁটা অক্ষর প্যাটেলকেও (৫২)। আম্পায়ার আউট দিতে চাননি। কিন্তু রিভিউ নিয়ে ঠিকই নিজের উইকেট আদায় করে নিয়েছেন প্যাটেল।

পরের ওভারেই আর দেরি করেননি। দ্বিতীয় বলে জাদেজাকে ক্যাচ বানিয়েছেন। চতুর্থ বলে মোহাম্মদ সিরাজ একটি চার মারলেও কিছু মনে করেননি প্যাটেল। ৯ উইকেট পেয়ে গেছেন। আরেকটি উইকেটেরই শুধু অপেক্ষা। মুত্তিয়া মুরালিধরনের মতো বোলারকেও যেখানে থামতে হয়েছিল, সে বাধায় আটকা পড়লেন না। সিরাজের স্লগ মিড অন পার হলো না। ইতিহাসে জায়গা করে নিলেন। ইনিংসশেষে তার বোলিং ফিগার দাঁড়ালো- ৪৭.৫ ওভার, ৩ মেডেন, ৩৬ রান, ১০ উইকেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App