×

সম্পাদকীয়

রফিকুল ইসলামের প্রয়াণ : তার কর্ম ও সাধনা হোক আমাদের প্রেরণা

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০৪ এএম

রফিকুল ইসলামের প্রয়াণ : তার কর্ম ও সাধনা হোক আমাদের প্রেরণা

বাঙালির বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডলে প্রাজ্ঞজন মানুষ জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম চলে গেলেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮৭ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দেশের মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশে তিনি অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরাও গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। রফিকুল ইসলাম মনেপ্রাণে একজন শিক্ষক ছিলেন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে খুব ভালোবাসতেন। দীর্ঘ ৫০ বছর শিক্ষকতার পেশায় জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম নজরুল অধ্যাপক ও নজরুল গবেষণাকেন্দ্রের প্রথম পরিচালক ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা রফিকুল ইসলাম সেই সময়ের দুর্লভ আলোকচিত্রও ধারণ করেছিলেন। এখন যত ছবি আছে রাষ্ট্রভাষা-বিষয়ক, তার প্রায় ৭০ ভাগ ছবিই রফিকুল ইসলামের ক্যামেরায় তোলা। বাঙালির গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রফিকুল ইসলাম ছিলেন প্রথম সারির সৈনিক। এসব ভূমিকার কারণে ১৯৭১ সালের ১৩ আগস্ট তাকে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তার করে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করে। তিনি অন্তত ৩০টি গ্রন্থের রচয়িতা। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন। সর্বশেষ ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের উপাচার্যের দায়িত্বও সামলিয়েছেন এই জাতীয় অধ্যাপক। শিক্ষা, সাহিত্য ও গবেষণায় অবদানের জন্য পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদক। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদকেও ভূষিত হন। মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র সভাপতি হিসেবে তিনি পালন করে গেছেন ঐতিহাসিক দায়িত্ব। আমাদের সমাজ ও সমকাল উভয়ের জন্যই রফিকুল ইসলামকে বড় বেশি প্রয়োজন। যে মানুষ তার জীবনব্যাপী সাধনায় এই দেশ ও জাতির জন্য অনন্য অবদান রেখে আমাদের ঐতিহ্যের অংশ হয়ে উঠেছেন, সেই অর্জনকে স্থায়ী করে রাখার দায়িত্ব তো তরুণ প্রজন্মেরই। না হলে ক্ষতি হবে তাদেরই, যারা ঐতিহ্যের বিনির্মাণে ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারে না। রফিকুল ইসলামের জীবনকে এজন্যই গভীর যতœ ও মনোযোগসহকারে পাঠ করা প্রয়োজন। রফিকুল ইসলাম সময়ের শুভ ও কল্যাণের জায়গাকে ধারণ করেছেন। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের বিকাশকে গতি দিয়েছেন। গণসচেতনতাকে শ্রদ্ধা করেছেন। জ্ঞানের চর্চায় শিক্ষার ক্ষেত্রকে আলোকিত করেছেন। আমাদের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, হৃদয়ের জাগরণ আপনাকে ছুঁয়ে থাকবে। আপনার আত্মার শান্তি কামনা করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App