পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে গত ৩১ অক্টোবর হতে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৬) প্রত্যাশা অনুযায়ী যথাযথ প্রাপ্তি না হলেও বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অনেক দাবি পূরণ হয়েছে। এ

বুধবার (১ নভেম্বর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজিত ‘বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন (কপ ২৬): প্রত্যাশা, প্রাপ্তি এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলো কর্তৃক অভিযোজন অর্থায়ন দ্বিগুণ করার পাশাপাশি কপ-২৬ এর বিভিন্ন ডিসিশন টেক্সট এ অভিযোজন ও প্রশমন অর্থায়নের মধ্যে ৫০:৫০ সমতা আনার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও উন্নত দেশগুলো কর্তৃক জলবায়ু অর্থায়নে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের নিমিত্ত ২০২২-২০২৪ সময়ের জন্য একটি এডহক ওয়ার্ক প্রোগ্রাম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে ধনী দেশগুলোকে জলবায়ু তহবিলে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ অন্তত দ্বিগুণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশ ‘গ্লাসগো লিডার্স ডিক্লারেশন অন ফরেস্টস এন্ড ল্যান্ড ইউজ’ অনুমোদন করেছে।

পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কপ-২৬ এর ওয়ার্ল্ড লিডার্স সামিটে-এ অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তৃতা করেন। তিনি ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের বর্তমান চেয়ার হিসেবে সদস্য ৪৮টি সর্বাপেক্ষা বিপদাপন্ন রাষ্ট্রগুলোর পক্ষে অত্যন্ত জোরালো ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়াও স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টারজনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনে বিভিন্ন ইস্যুভিত্তিক আলোচনায় বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশসূহের পক্ষে কার্যকর ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব জলবায়ু সম্মলনের প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির আলোকে আমাদের ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এখনই ঠিক করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য সকল ধরনের ঝুঁকি চিহ্নিতপূর্বক তা মোকাবিলায় আমাদেরকে কাজ শুরু করতে হবে। কেবলমাত্র বৈশ্বিক জলবায়ু অর্থায়নের উপর নির্ভর না করে আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়েই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কার্যকর অভিযোজন এবং প্রশমনমূলক কার্যক্রম গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আশাকরি সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আমরা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সফল হবো।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী, কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, পিকেএসএফ এর চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আইনুন নিশাত, সিভিএফ প্রেসিডেন্সির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মো. মিজানুল হক চৌধুরী এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন প্রমুখ।