×

রাজনীতি

দেশে জামাতের পুনরুত্থানের আশঙ্খা মেননের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৩৬ পিএম

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আজ ধর্মবাদী রাজনীতির সঙ্গে আপোস বাংলাদেশে জামায়াতের পুনরুত্থান ঘটাবে কিনা বলা যায় না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশ কোনো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র হবে না। হবে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়ার সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সেখানে সংশয় সৃষ্টি করছে। রাইফেলের নল কখন ঘুরে যাবে জানি না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

মেনন বলেন, এই পঞ্চাশ বছরে দেখেছি দুটি সামরিক শাসন এবং একটি সেনা শাসন। এই পঞ্চাশ বছরে গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা যেমনি পর্যুদস্থ হয়েছে তেমনি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিজয়ও হয়েছে। দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের রাজনৈতিক পুনর্বাসন এবং একইসঙ্গে পরবর্তীতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসন এই ধর্মনিরপেক্ষতাকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন। ফিরিয়ে এনেছিলেন ধর্ম নিয়ে রাজনীতির পাকিস্তানি হালাতে। ফিরিয়ে এনেছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযম আর আরেক সামরিক শাসক এরশাদ। আমাদের দুর্ভাগ্য যে ইসলাম আমাদের দেশের মানুষের প্রাণের ধর্ম। সেই ধর্মকে ব্যবহার করা হয় রাজনৈতিক প্রয়োজনে। তারা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করেছে, সংবিধানকে চ্যালেঞ্জ করছে। জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকাকে চ্যালেঞ্জ করছে। তাই দেশে জামায়াতের পুনরুত্থান ঘটাবে কিনা বলা যায় না।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের সঙ্গে যে আপোস করেছিল তারই ফলশ্রুতিতে তালেবানরা যখন কান্দাহার থেকে কাবুল রওনা হয় তখন তিন লাখ সরকারি সেনা আনুগত্য পরিবর্তন করেছে।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর গৌরবের আবার অগৌরবের। এই পঞ্চাশ বছরে আমরা লেস ডেভেলপমেন্ট থেকে ডেভেলপমেন্টের রোল মডেল হয়েছি। একইসঙ্গে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে গতকালই অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের। এজন্য অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীকে।

তিনি বলেন, সমাজতন্ত্র আজ বিশ্বে পর্যুদস্থ। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আমরা যে উদারনৈতিকভাবে উদারনৈতিক অর্থনীতি অনুসরণ করছি তাতে আমাদের উন্নয়ন অন্তর্ভুক্তিমূলক হচ্ছে না। আজ জন্ম নিচ্ছে তীব্র বৈষম্যের। তিনি বলেন, নামে আমরা ১৪ দলীয় জোটের অংশ হলেও আওয়ামী লীগের কাছে ১৪ দলের অথবা অসাম্প্রদায়িক-গণতান্ত্রিক ঐক্যের প্রাসঙ্গিকতা আছে কিনা জানি না।

স্বাস্থ্য খাতের সমালোচনা করে মেনন বলেন, স্বাস্থ্য খাত অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কোভিড মোকাবিলা করা গেছে। কিন্তু কোভিডের আরেকটি ঢেউ কতখানি সামাল দেওয়া যাবে তা জানা নেই। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুনর্গঠিত করতে হবে। কোভিডের কারণে শিক্ষা খাতে বেহাল অবস্থা। একমুখী শিক্ষার নামে বিএনপির আমলে যে ষড়যন্ত্র হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে মনে হয়।

রাশেদ খান মেনন বলেন, শেখ হাসিনার এই তিন টার্মে দেশে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠীর হাতে। কোভিডকালেও কোটিপতিদের সংখ্যা বেড়েছে। ধনীর সংখ্যা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ এই অঞ্চলে প্রথম। গড় জাতীয় আয় বাড়লেও জনগণের আয় কমেছে। কোটিপতিদের সংখ্যা বাড়লেও ৫ লাখ কৃষকের ব্যাংক হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের দারিদ্র সীমার হার ২০ শতাংশ কমিয়ে এনেছিলেন। কিন্তু করোনার দুই বছরে নতুন দরিদ্র্য হয়েছে দুই কোটি ৬০ লাখের ওপরে। অর্থমন্ত্রী এই বেসরকারি হিসাব স্বীকার করেন না। কিন্তু সরকারি কোনো হিসাবও নেই বলে মন্তব্য করেন মেনন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App