×

জাতীয়

জাহাঙ্গীরকে মেয়র পদ থেকে যেভাবে অপসারণ করা সম্ভব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২১, ০৮:৪৪ এএম

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের পর গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে এখন তার পদ থেকে কীভাবে সরানো হবে- এ নিয়ে বিধিবিধান ঘাঁটতে শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে কী আছে জাহাঙ্গীরের ভাগ্যে- শনিবার (২০ নভেম্বর) রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে সে বিষয়ে ষ্পষ্ট কোনো ব্যাখা পাওয়া যায়নি। কারণ সিটি করপোরেশন আইনে এ বিষয়ে কিছু বলা নেই।

অনেকেই বলেছেন, জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকে সরানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে সরকার। এখন সরকার চাইলে সামান্যতম সময়ের মধ্যে তাকে সরিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি এবং জাতির পিতাকে অসম্মান করার জন্য তার বিরুদ্ধে আরেকটি ফৌজদারি মামলা হতে পারে। মামলা হওয়ার পর সেই মামলায় অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলেই তাকে মেয়রপদ থেকে অপসারণের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিন্তু সরকার কোন পথে হাঁটছে তা এখনো খোলাসা হয়নি।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে গাজীপুর সিটি করপোরশেন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম। বঙ্গবন্ধু ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য শুক্রবার তাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হওয়ায় এখন তার মেয়র পদ থাকবে কিনা, তা প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হওয়ার পর দল থেকে সিটি মেয়র বহিষ্কার হলে তার মেয়রপদ থাকবে কিনা- এ নিয়ে সিটি করপোরেশন আইনে কিছু বলা না থাকায় অপসারণের প্রক্রিয়া নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। তবে আজ রবিবার এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে নথি ঘেঁটে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। ওই সূত্র মতে, গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীরকে শোকজ করতে পারে মন্ত্রণালয়। এরপর সাময়িক বরাখাস্তের আদেশ আসতে পারে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, জাহাঙ্গীর আলম ২০১৮ সালে দলীয় মনোনয়নে গাজীপুরের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। এখন দল থেকে বহিষ্কার করায় তিনি মেয়র পদে থাকতে পারবেন না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও বলেছেন, জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে এবং এরপর মন্ত্রণালয় আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

দল বহিষ্কার করায় জাহাঙ্গীরের মেয়র পদে থাকা নিয়ে কোনো সংশয় আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ভোরের কাগজকে বলেন, আইনে এ বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ব্যাখ্যা নেই। এটা তো আমাদের জন্য নতুন একটা অভিজ্ঞতা। আইনের মধ্যে কিন্তু সুষ্পষ্ট কিছু লেখা নেই। আইনের মধ্যে শুধু লেখা আছে- ফৌজদারি মামলা, দুর্নীতি বা রাষ্ট্রের ক্ষতি করলে পদ হারাবেন। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীর আলম দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত। এখন দলই তাকে বহিষ্কার করেছে। যেহেতু দল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সেহেতু তিনি আর মেয়র পদে থাকতে পারেন কিনা তা আজ রবিবার অফিসে গিয়ে বিধিবিধান ঘেঁটে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ায় মেয়র পদে থাকতে পারবেন কিনা, তা স্পষ্ট করতে পারলেন না স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামও। তিনি বলেন, আইন দেখে পরবর্তীতে এ ব্যাপারে মন্তব্য করা হবে। এখন মেয়র আছেন। কতদিন থাকবে, সেটা আইন দ্বারা নিষ্পত্তি করা হবে। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রে দল থেকে বহিষ্কার হলে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বিধান আছে। সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে নির্বাচন কমিশনকে এ সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে কী হবে- সেই প্রশ্ন এখন সামনে এসেছে। দলীয় প্রতীকে সিটি মেয়র পদে নির্বাচন শুরু হওয়ার পর নির্বাচিত কোনো মেয়রকে তার দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা এই প্রথম। দল থেকে বহিষ্কৃত হলে কী হবে, সে বিষয়ে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। তবে নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে মেয়রদের কেউ আদালতে দণ্ডিত হলে তাকে অপসারণের বিধান আইনে রয়েছে। আইন অনুযায়ী, কোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত আমলে নিলে এবং অসদাচরণ প্রমাণ হলে মেয়রদের দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা যাবে। এ অবস্থায় শুধু দল থেকে বহিষ্কারের কারণে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদ হারাবেন কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। জাহাঙ্গীর আলমের ক্ষেত্রে দল থেকে আইনিব্যবস্থা নেয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে দল কী ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেয়, তার ওপরও জাহাঙ্গীরের ভাগ্য নির্ভর করছে।

এমন পরিস্থিতিতে জাহাঙ্গীর আলমকে তার মেয়র পদ থেকে সরানো সম্ভব কিনা- প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, এমন কোনো বিধান না থাকলেও সরকার চাইলে সামান্যতম সময়ের মধ্যে তাকে অপসারণ করতে পারে। তিনি বলেন, দল থেকে বহিষ্কার হওয়ায় তিনি আর ওই পদে থাকতে পারেন না। জাহাঙ্গীর আলমের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে পদত্যাগ করলে তিনি হয়ত কিছুটা সম্মান পাবেন। নতুবা সিটি করপোরেশনের একজন মেয়রকে অপসারণের অনেক পথ সরকারের কাছে আছে। অসদাচরণ বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য মেয়রকে প্রথমে শোকজ করে পরে সাময়িক বরখাস্ত করা যেতে পারে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে পারেন। সাবেক নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক মনে করেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দল থেকে বহিষ্কার হলে মেয়র পদেও থাকতে পারেন না। তিনি বলেন, কারণ, দলে তো তিনি আর নেই, তাহলে দল থেকে বহিষ্কার করলে তো আর (মেয়রের) চেয়ার থাকে না। এটা সাধারণ হিসাব।

এদিকে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার জেরে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্য পদ হারানো জাহাঙ্গীর আলমের মেয়র পদ বাতিলের দাবি তুলছেন তার বিরোধীরা। দল থেকে বহিষ্কারের কারণে নৌকা নিয়ে নির্বাচিত এই নেতা আর পদে থাকতে পারেন না- এমন দাবি তাদের। তবে দল বহিষ্কার করলে মেয়র পদ যাবে, এমন বিষয় স্থানীয় সরকার আইনে বলা নেই। জাতীয় সংসদেও দেখা গেছে দল থেকে বহিষ্কার করার পরও একাধিক ব্যক্তি তার সংসদ সদস্য মেয়াদের পুরোটা পার করেছেন। তবে স্থানীয় সরকার আইনে এমন কিছু বিধান আছে, যে কারণে জাহাঙ্গীরের মেয়র পদ ঝুঁকিতে পড়ে যাবে।

আইন করার মধ্য দিয়ে দেশে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন শুরু হয় ২০১৬ সালে। সিদ্ধান্ত হয়, সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের প্রার্থী দিতে পারবে দলীয় প্রতীকে। সে বিধান অনুযায়ী নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে প্রথম দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয়। এরপর একে একে দেশের সব সিটি করপোরেশনে দলীয় প্রতীকে ভোট হয়। ২০১৮ সালের ২৭ জুনের ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দলীয় প্রতীক নৌকা নিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন জাহাঙ্গীর। এই নির্বাচন হয়েছে ২০০৯ সালে প্রণীত স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইনে। সেখানে করপোরেশনের মেয়র বা কাউন্সিলরদের যোগ্যতা, অপসারণ বা পদচ্যুতির বিষয়ে নানা শর্তের কথা বলা আছে। তবে দল বহিষ্কার করলে পদ হারাবেন- এমন কোনো কথা বলা নেই।

জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘরোয়া আলোচনায় তিনি বঙ্গবন্ধুর দেশ স্বাধীন করার উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের শহীদ হওয়ার প্রতিষ্ঠিত তথ্যের সত্যতা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। বেশ কয়েক বছর আগে রাজধানীতে এক আলোচনায় এমন ধরনের বক্তব্য দেয়ার পর বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখনো সে মামলা চলছে। তবে স্থানীয় সরকার আইনে বলা আছে, ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করলে সরকার লিখিত আদেশের মাধ্যমে মেয়র বা কাউন্সিলরকে বরখাস্ত করতে পারবে। কাজেই ওবায়দুল কাদের যে আইনিব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন, সেটি যদি নেয়া হয়, যদি তদন্তে প্রমাণ মেলে এবং যদি মেয়রের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হয়, তাহলেই পদ হারানোর প্রসঙ্গটি আসে।

যেসব কারণে মেয়রকে অপসারণ করা যায় : স্থানীয় সরকার আইনে বলা আছে, মেয়র অথবা কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হবে যদি তিনি যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া সিটি করপোরেশনের পর পর ৩টি সভায় অনুপস্থিত থাকেন। যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে আদালতে দণ্ডিত হন। যদি তিনি দায়িত্ব পালনে অস্বীকার করেন বা শারীরিক বা মানসিক অসামর্থ্যরে কারণে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন। যদি তিনি অসদাচরণ বা ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন। বার্ষিক ১২টি মাসিক সভার বদলে ন্যূনতম ৯টি সভা গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যতীত করতে না পারেন বা সভায় উপস্থিত থাকতে ব্যর্থ হন। এই অপসারণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে তদন্ত করতে হবে এবং অভিযুক্তকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। আবার মেয়রকে অপসারণ করা হলে, আদেশের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে আপিল করতে পারবেন। আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপসারণ আদেশটি স্থগিত থাকবে। রাষ্ট্রপতি অপসারণ আদেশটি পরিবর্তন, বাতিল বা বহাল রাখতে পারবেন। তবে অভিযোগপত্র দেয়া ছাড়া আরো একটি কারণে মেয়রকে অপসারণ করা যায়। যদি কাউন্সিলররা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে এবং সেটি দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে পাস হয় তাহলেও পদ হারাতে পারেন জাহাঙ্গীর।

আইনে বলা আছে, গুরুতর অসদাচরণের অভিযোগে করপোরেশনের মেয়র বা কোনো কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে। তবে এই অনাস্থার প্রক্রিয়াটি বেশ দীর্ঘ। অসদাচরণের ব্যাখ্যায় আইনে বলা আছে ক্ষমতার অপব্যবহার, এই আইন অনুযায়ী বিধি-নিষেধ পরিপন্থি কার্যকলাপ, দুর্নীতি, অসদুপায়ে ব্যক্তিগত সুবিধা গ্রহণ, পক্ষপাতিত্ব, স্বজনপ্রীতি, ইচ্ছাকৃত অপশাসন, নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব দাখিল না করা বা অসত্য তথ্য প্রদান। নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে হলে কাউন্সিলরদের সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের সই নিয়ে একটি প্রস্তাবের নোটিস একজন কাউন্সিলরকে দাখিল করতে হবে। অনাস্থা প্রস্তাব প্রাপ্তির পর এক মাসের মধ্যে অভিযোগের প্রাথমিকভাবে তদন্ত হবে এবং তাতে প্রমাণ পেলে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হবে। নোটিসের জবাব সন্তোষজনক বিবেচিত না হলে অনধিক ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনাস্থা প্রস্তাবটি বিবেচনার জন্য কাউন্সিলর সভা ডাকা হবে। সভায় মোট নির্বাচিত সদস্য সংখ্যার অর্ধেক সদস্য সমন্বয়ে কোরাম হবে। সেখানে অনাস্থা প্রস্তাবটির ওপর ভোট হবে গোপন ব্যালটে। প্রস্তাবটি মোট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে গৃহীত হলে সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মেয়র পদশূন্য বলেয়া ঘোষণা করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App