×

মুক্তচিন্তা

নেপোয় মারে দই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২১, ১২:৪৩ এএম

সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুর বিভাজনে সাম্প্রদায়িক অনাচার এখন দেশে দেশে নৃশংসতার নজির সৃষ্টি করে চলেছে। সাম্প্রতিক শারদীয় পূজাকে কেন্দ্র করে কুরআন অবমাননার উছিলার অভিযোগে সুপরিকল্পিত এবং সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের ফলে যে ঘৃণ্য ঘটনা কুমিল্লা থেকে শুরু এবং ক্রমেই সহিংস সেই তাণ্ডব দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিয়ে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় পূজার সাংস্কৃতিক উৎসবটি প্রায় বানচাল করে ছেড়েছিল। নিঃসন্দেহে ঘৃণ্য এই ঘটনায় সাম্প্রদায়িকতার চেয়ে অধিক ছিল রাজনৈতিক। সমাজের কর্মহীন অর্থাৎ ক্ষমতাহীন বেকাররা যাদের কাজ নেই, ক্ষমতা প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। তারা এই সুযোগে ক্ষমতা প্রদর্শন করে দেশের ঐতিহ্য বিনষ্টে নিজেদের ঘৃণ্য ক্ষমতা প্রকাশের সুযোগটি হাতছাড়া না করে ঝাঁপিয়ে পড়েছে মণ্ডপ ভাঙতে, জ্বালাতে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা করতেও। নিঃসন্দেহে আমাদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার ওপর এই আঘাত কেবল নিন্দা জ্ঞাপনে সীমাবদ্ধ থাকার কোনো উপায় নেই। এর বিরুদ্ধে কঠিন ও কঠোর প্রতিবাদ, প্রতিরোধ, দমন ও নির্মূল অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। একটি রাষ্ট্রে নানা জাতি ও সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস আছে এবং থাকবে। এটা খুবই স্বাভাবিক। স্বীকার করছি বিশ্বজুড়ে জাতি-বিদ্বেষ, সম্প্রদায়-বিদ্বেষ, বর্ণ-বিদ্বেষ নানাভাবে ক্রিয়াশীল। সংখ্যাগুরুরা সংখ্যালঘুদের ওপর চরম নিষ্ঠুরতা, নিপীড়ন, বঞ্চনা এমনকি হত্যার ঘটনাও অহরহ ঘটাচ্ছে। এর থেকেও ভয়াবহ যেটি ঘটছে সেটি হচ্ছে শ্রেণি-শোষণ। ওই ক্ষেত্রে কিন্তু সংখ্যালঘুরাই সংখ্যাগুরুদের ওপর শ্রেণি-শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে। অসংগঠিত সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ পুঁজিবাদী বিশ্ব-ব্যবস্থায় শ্রেণি-শোষণের জাঁতাকলে পিষ্ঠ। বিচ্ছিন্নভাবে হলেও প্রতিবাদ, প্রতিরোধে মানুষ ওই ঘৃণ্য ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাদ-প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে কতিপয় রাষ্ট্রের পিছুটান বা সরে আসায় বিশ্বে বুর্জোয়া-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ক্রমেই অপ্রতিরোধ্য রূপে সমষ্টিগত মানুষের ওপর শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার সুযোগ পেয়ে বসেছে। সাম্রাজ্যবাদীদেরও একচেটিয়া দুর্বল রাষ্ট্রের ওপর কর্তৃত্বের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। আমাদের দেশে স্বাধীনতার পর শারদীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে অতীতে যে বিচ্ছিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি, তা কিন্তু নয়। কিন্তু এবারের সুপরিকল্পিত এবং সুদূরপ্রসারী ঘটনাটির ব্যাপকতা অতীতের ঘটে যাওয়া ঘটনাকে অতিক্রম করেছে। তাই ঘটনাস্থল কুমিল্লায় সেটা সীমাবদ্ধ থাকেনি। ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। বিজয়া দশমীর পরও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মন্দিরে, বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর, অগ্নি-সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দেশে একটি কার্যকর সরকার রয়েছে। তাদের ক্ষমতায় আসা ও থাকা নিয়ে নিশ্চয় বিতর্ক আছে। কিন্তু তারা তো দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনা করে আসছে। সরকারের অধীনে আছে বিশাল লটবহর রাষ্ট্র, গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আধা ও পূর্ণাঙ্গ সামরিক বাহিনীও। সরকার ইচ্ছে করলে তাৎক্ষণিকভাবে এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনা ঘটার পূর্বেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারত বলেই মনে করি। সরকার ইচ্ছে করলে সরকারের অসাধ্য কিছু নেই। জঙ্গি দমন, বিরোধী রাজনৈতিক দল ও মতকে ফ্যাসিবাদী কায়দায় যদি দমন করতে পারে। তাহলে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিদের নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি বা হলো না কেন? সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ তবে আছে কেন? কেবল সরকার বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে ও নির্মূলে? তাহলে কি আমাদের প্রশাসনে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে দেশদ্রোহী বিদেশি চর, সাম্প্রদায়িক সহযোগীদের অবস্থান রয়েছে? আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অস্থায়ী সরকারপ্রধান তাজউদ্দীন আহমদ প্রকাশ্যে স্বাধীন দেশের শাসনতান্ত্রিক তিন মূল স্তম্ভের ঘোষণা দিয়েছিলেন। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতার। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সংবিধান রচনাকালে ওই তিন স্তম্ভের শুরুতে জাতীয়তাবাদকে যুক্ত করেছিল জাতীয়তাবাদী শাসকরা। অথচ স্বাধীনতার পরক্ষণে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল। জাতীয়তাবাদী-মাত্রই সাম্রাজ্যবাদবিরোধী। কিন্তু আমাদের জাতীয়তাবাদীরা অনিবার্যরূপে সাম্রাজ্যবাদের তোষণকারী। বাংলাদেশের এ যাবৎ সব বৈধ-অবৈধ শাসকরা নিজেদের জাতীয়তাবাদী অভিধায় প্রচার-প্রচারণা করে এসেছে। আওয়ামী লীগ তো জাতীয়তাবাদী বটেই। জাতীয়তাবাদী দল, জাতীয় পার্টি উর্দি পরিত্যাগকারী সামরিক শাসকরাও রাজনৈতিক দল গঠনে নিজেদের জাতীয়তাবাদী রূপেই আত্মপ্রকাশ করেছিল। ১৯৭৫-এর মধ্য-আগস্টের নৃশংস ঘটনার পর একে একে বদলে যায় সংবিধানসহ শাসনতন্ত্রের স্তম্ভগুলো। ধর্মনিরপেক্ষতার বিপরীতে সাম্প্রদায়িক ধারা সংবিধানে, রাষ্ট্রের প্রায় ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করা হয়, জেনারেল জিয়ার এবং পরবর্তীতে জেনারেল এরশাদের হাত ধরে। রাষ্ট্র আর ধর্মনিরপেক্ষ থাকেনি। রাষ্ট্র বিশেষ ধর্মের হয়ে গেছে। হয়েছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অথচ এরশাদের রাষ্ট্রধর্ম প্রবর্তনের সময় দুই প্রধান দল ও দুই নেত্রী প্রবল বিরোধিতা করেছিলেন। নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর নির্বাচনে বিজয়ী রাজনৈতিক সরকার থেকে আজকের সরকার পর্যন্ত সামরিক শাসকদের সাম্প্রদায়িকীকরণকে বাতিল না করে অক্ষুণ্ন রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দাবিদার বর্তমান সরকার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে সাম্প্রদায়িক ধারাগুলোকে স্থায়ী করেছে। সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে। কওমি মাদ্রাসার সংগঠন হেফাজতে ইসলামের দাবির কাছে নত হয়ে পাঠ্যসূচিতে অসাম্প্রদায়িক রচনাগুলো পরিত্যাগ করে সাম্প্রদায়িক রচনা অন্তর্ভুক্ত করেছে মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচিতে। উচ্চ মাধ্যমিকের জীববিজ্ঞান বইতে কুরআনের আয়াতও যুক্ত করা হয়েছে। হেফাজতের কওমি মাদ্রাসার জন্য দেয়া হয়েছে রেলওয়ের বিশাল ভূমি। ক্ষমতায় স্থায়ীভাবে থাকার অভিপ্রায়ে এ ধরনের অপকীর্তিতে সরকার যে কতটা সিদ্ধহস্ত তার প্রমাণ দিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ এখন কিন্তু আর ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র নয়, নয় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও। তাই অনভিপ্রেত ঘটনাগুলো অনায়াসে ঘটলেও সরকার ও রাষ্ট্র যথার্থ ভূমিকা পালন করতে পারেনি। প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং ভোটের রাজনীতির কাছে পরাভূত হয়েছে দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের সমঅধিকার, সমমর্যাদা, সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠার বিষয়গুলো সাংবিধানিক। সরকার বা রাষ্ট্র সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সংখ্যাগুরুর জোরে এখানে সংখ্যালঘুর ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন হলে যে-সব দেশে মুসলিম সম্প্রদায় সংখ্যালঘু তাদেরও সংখ্যালঘুর কারণে একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। এটা দুর্বৃত্ত ও মৌলবাদীরা একবারও ভেবে দেখেছে কি? এছাড়া এই ঘৃণ্য অপতৎপরতার দায় কি সরকারকে বহন করতে হবে না? দুর্বৃত্তদের ওপর দোষ চাপিয়ে কি সরকার বা রাষ্ট্র তাদের দায়হীনতা এড়াতে পারে? নিশ্চয় পারে না। বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনায় সবচেয়ে বেশি বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে প্রতিবেশী ভারতের প্রগতিশীল ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে এবং সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়কে। আমাদের সীমান্তবর্তী পশ্চিম বাংলা, ত্রিপুরা ও আসাম রাজ্যে বিস্ময়কর উত্থান ঘটেছে হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপির। পশ্চিম বাংলায় তারা এখন দ্বিতীয় বৃহত্তর শক্তি। ত্রিপুরায়, আসামে তো বিজেপি রাজ্য ক্ষমতায় আসীন। ভারতে বিজেপির জনপ্রিয়তা ক্রমাগত তলানির অভিমুখে। কৃষক আন্দোলন, কৃষক হত্যা, রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পত্তি বেসরকারিকরণ, করোনা প্রতিরোধে ব্যর্থতা, ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য-পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ বিজেপির শাসনামলে দলিতদের নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণসহ কর্তৃত্ববাদী শাসনের বৃত্তে আটকে পড়েছে সমষ্টিগত মানুষ। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, বিরোধী-দলগুলোর ওপর দলীয় মাস্তান ও রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্মম নির্যাতন, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার ও হত্যা ইত্যাদি। সঙ্গত কারণেই বিজেপির জনপ্রিয়তা ভাটির মুখে। ঠিক এই সময়ে বাংলাদেশের ঘটনাকে পুঁজি করে বিজেপি কিন্তু বসে নেই, সরব হয়ে উঠেছে। পশ্চিম-বাংলার শান্তিপুরের উপনির্বাচনে নির্বাচনী সমাবেশে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনার পর বিজেপি তিনগুণ ভোটে বিজয়ী হবে’। দলীয় কর্মীদের নির্বাচনী মাঠ ছেড়ে না যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। কুমিল্লার ওপারে ত্রিপুরা রাজ্য। সেখানেও দেখা গেছে জনপ্রিয়তায় তলানিতে থাকা রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি চাঙা হয়ে বাংলাদেশের ইস্যুকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে অতি সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের বাড়িতে-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটনে অপকীর্তি চালিয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যের সম্প্রীতি বিনষ্টে বিজেপির রাজ্য সরকার গঠনের পূর্বে কোনো নজির ছিল না। হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষায় বিজেপির কোনোই বিকল্প নেই- এই প্রচারণা চালিয়ে বাংলাদেশের দিকে আঙুল তুলেছে। এমনকি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গারও সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ যাবৎ বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে টু শব্দটি করেননি। তৃণমূলের এক নেতা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে শারদীয় পূজার ঘটনাটি একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।’ সর্বদা সরব মমতার নীরবতার কারণটি খুবই পরিষ্কার। সেটা হচ্ছে এবারের বিধানসভার নির্বাচনে বিজেপিকে রুখতে এবং তৃণমূলের বিজয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল সংখ্যালঘু মুসলিম জনসংখ্যার একচেটিয়া ভোট। ৩২ শতাংশ মুসলিম পশ্চিম বাংলায় বিজেপিকে ঠেকাতে অকাতরে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। আমাদের রাষ্ট্রে, প্রশাসনে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে দেশদ্রোহী বিদেশি চর যে নেই সে কথাও বলি কীভাবে! ঘটনার আগে ও পরে তাদের ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। বর্তমান সরকার তাদের ওপর শতভাগ নির্ভর করে ক্ষমতায় রয়েছে বলে তারা জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ পেয়েছে। প্রশাসন আন্তরিক হলে কুমিল্লার ঘটনা তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব যেমন ছিল না, তেমনি সম্ভব ছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অনভিপ্রেত ঘটনা নিয়ন্ত্রণেও। শারদীয় উৎসবের অপ্রীতিকর নৃশংস ঘটনায় দেশের রাজনীতি জড়িত ছিল, তার আলামত পাওয়া যায়নি। সরকার কিংবা রাজনৈতিক কোনো দলেরও স্বার্থসিদ্ধি লাভ হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি যে জড়িত তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কথায় আছে নেপোয় মারে দই। এ ঘটনাও ওই নেপোদের দই মারার পথটিই সুগম করে দিয়েছে।

মযহারুল ইসলাম বাবলা : নির্বাহী সম্পাদক, নতুন দিগন্ত। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App