×

শিক্ষা

ভিকারুননিসায় একের পর এক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের প্রশ্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০২ পিএম

ভিকারুননিসায় একের পর এক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের প্রশ্ন

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিভাবকরা।

ভিকারুননিসা নুন স্কুল অ্যান্ড কলেজে একের পর এক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। নিয়োগ পরীক্ষা থেকে পাওয়া টাকা সরকারিভাবে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষ কামরুন নাহার হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে সরকারি নির্দেশনা ভেঙে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। এসব অভিযোগে অধ্যক্ষ কামরুন নাহারের অপসারণ দাবি করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করা অভিভাবক নেতা আনিসুর রহমান আনিস। সাধারণ অভিভাবকবৃন্দ-এর ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আনিসুর রহমান আনিস বলেন, করোনা মহামারির পর সরকার যখন সংক্ষিপ্তভাবে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরাচ্ছে তখন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার একের পর এক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ঝুঁকিতে ফেলছেন। সরকার একেক দিন একেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক মাসে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান দশটি নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছেন। এসব নিয়োগ পরীক্ষায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের দিয়ে কাজ করানো হলেও তাদের যথাযথভাবে সম্মানী দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে নেয়া দশটি নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রার্থীদের সংখ্যা তুলে ধরা হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ গত ১৮ সেপ্টেম্বর এনএসআইয়ের সাড়ে চার হাজার প্রার্থীর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিতে। ২৪ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ১ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটের সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ৮ অক্টোবর এনএসআইয়ের সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ২২ অক্টোবর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ২৩ অক্টোবর ঢাবির ঘ-ইউনিটের সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ২৯ অক্টোবর বিসিএসের সাড়ে ৫ হাজার প্রার্থী, একইদিন বিকেলে ইইডির সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ৫ নভেম্বর ডিপিডিসির সাড়ে ৫ হাজার প্রার্থী, একই দিন বিকেলে ইইডির সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ৬ নভেম্বর সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী, ১২ নভেম্বর ইইডির সাড়ে ৫ হাজার প্রার্থী এবং ১৩ নভেম্বর সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার প্রার্থী প্রতিষ্ঠানটিতে পরীক্ষা দিয়েছে বলে জানানো হয় লিখিত বক্তব্যে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এসব নিয়োগ পরীক্ষার জন্য অধ্যক্ষ টাকা নেন। কিন্তু সে টাকার হিসাব গভর্নিং বডিতে দেয়া হয় না। টাকা প্রতিষ্ঠান ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখা হয় না। অভিভাবকেরা অভিযোগ তোলে বলেন, এসব নিয়োগ পরীক্ষা থেকে পাওয়া সিংহভাগ টাকা অধ্যক্ষ নিজে আত্মসাৎ করেন। প্রতিষ্ঠানটি মূল ব্রাঞ্চের দিবা শাখার প্রধান শাহ আলম এসব নিয়োগ পরীক্ষার জন্য ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা নেন। সাধারণ শিক্ষকদের ১ হাজার টাকা ও কর্মচারীদের ৪০০ টাকা দেয়া হয়। গত জুন মাসে অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষের পিএ দিলরুবা খাতুন সামিয়া পারভিন এবং আজিমপুরের দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক এখনো কর্মরত থেকে এসব টাকা আত্মসাতে অধ্যক্ষকে সহযোগিতা করছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়।

অভিভাবকরা আরো অভিযোগ করেন, মূল ব্রাঞ্চের জুনিয়র শাখার সহকারী শিক্ষক সামিয়া পারভিন এবং আজিমপুরের দিবা শাখার সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠান কাছ থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষকের বেতন এবং শাখা প্রধানের সম্মানী বাবদ অতিরিক্ত নয় হাজার টাকা আদায় করছেন। একই পদে থেকে তারা এ টাকা আদায় করতে পারেন না বলে অভিযোগ তোলা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

অভিভাবকরা প্রতিষ্ঠানটির পার্কিং নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, অবৈধভাবে পার্কিং ভাড়া দিয়ে সে টাকা অধ্যক্ষ নিজে আত্মসাৎ করেছেন। সরকার যখন শিক্ষার্থীদের ফি মওকুফের নির্দেশনা দিয়েছে তখন অধ্যক্ষের পরিচিত কয়েকজনের ফি মওকুফ করা হয়েছে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন জমা নেয়া হয়নি। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবেদন নিয়ে এখনো অধ্যক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সরকারি নির্দেশনা না মেনে অধ্যক্ষ ৩ হাজার টাকা টিউশন ফি নির্ধারণ করেছেন। এসব অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষের অপসারণ দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App