×

জাতীয়

খালেদা জিয়ার প্রতি অনেক মানবিকতা দেখিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০৬:১৩ পিএম

খালেদা জিয়ার প্রতি অনেক মানবিকতা দেখিয়েছি: প্রধানমন্ত্রী

বুধবার যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়া আমাকে হত্যা করতে চেয়েছেন। তারা আমার মা, বাবা, ভাইসহ সবাইকে হত্যা করেছে। কিন্তু তবুও আমি মানবিকতা দেখিয়েছি। আমার পক্ষে যতটা সম্ভব করেছি।

বুধবার (১৭ নভেম্বর) যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে তার সদ্য সমাপ্ত সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, হত্যাকারীকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে আনবো আমি? আর কতবার মানবিকতা দেখাব। আমি যা করার করেছি, বাকিটা আইন করবে। খালেদা জিয়ার জন্য যা করেছি তাই কি বেশি না? আমিতো অমানুষ না। তাই বাসায় থাকার ব্যবস্থাটুকু করে দিয়েছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কোটালিপাড়ায় হামলার আগে তিনি বলেছিলেন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীতো দূরের কথা বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবেন না। কারণ তখন তিনি জানতেন আমিতো মরে যাবো। কিন্তু কথায় আছে রাখে আল্লাহ মারে কে। আমি এভাবেই বেঁচে আছি। সেই হত্যাকারীর কথা আমাকে কি করে আপনারা বলেন।

এর আগে তিনি রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায় নিয়ে কথা বলেন। বিচারকের যোগ্যতার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে কতকগুলো নীতিমালা আছে। তারা তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী নিয়োগ পান। আর বিচারকদের ব্যাপারে তো আমার কোনো এখতিয়ার নেই। এটি রাষ্ট্রপতির হাতে আছে।

তিনি বলেন, আদালতে যিনি এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন, এটি একান্তই তার ব্যক্তিগত। তাছাড়া এ ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটাই বাস্তবতা।

এর আগে জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের নেতৃত্বে সবচেয়ে বেশি ৪৮টি জলবায়ুু ঝুঁকিপূর্ণ দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের দ্বারা ঢাকা-গ্লাসগো ঘোষণা গৃহীত হওয়া জলবায়ু কূটনীতিতে আমাদের দেশের অগ্রণী ভূমিকার ফল।

শেখ হাসিনা বলেন, কপ২৬-এর প্রধান কৃতিত্ব হল বিশ্বের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা প্যারিস চুক্তি এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-র সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দসহ জলবায়ু তহবিল প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে সম্মত হয়েছেন। বাংলাদেশসহ ১৪১টি দেশ ২০৩০ সালের মধ্যে সকল ধরনের অরণ্য নিধন রোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়।

তিনি বলেন, কোভিড-পরবর্তী বিশ্ব ব্যবস্থায় ৪৮টি দেশের সংগঠন ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম-সিভিএফ-এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে কপ-২৬ শীর্ষ সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ বাংলাদেশ এবং সিভিএফ সদস্য দেশগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

এছাড়া, তিনি সম্প্রতি ইউএনএফসিসিসি’র কাছে হালনাগাদকৃত ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশন (এনডিসি) প্রদান, মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্লান এন্ড বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগের বিষয় অবহিত করেন। পাশাপাশি, সিভিএফ-এর সভাপতি হিসেবে তিনি ক্লাইমেট ইমারজেন্সি প্যাক্ট গঠনের প্রয়াসের কথা বিশ্ব নেতাদের সামনে তুলে ধরেন।

এসময় বিশ্ব নেতৃত্বকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তান উত্থাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রস্তাবগুলো হচ্ছে: প্রধান প্রধান কার্বন নির্গমনকারী দেশসমূহকে উচ্চাভিলাষী এসডিসি প্রণয়ন, উন্নত দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় অভিযোজন ও প্রশমনের জন্য ৫০:৫০ অনুপাতে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুত অর্থায়ন নিশ্চিত করা, পরিবেশবান্ধব উন্নত প্রযুক্তিতে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা, ক্ষয় ক্ষতিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যার সমাধানে একযোগে কাজ করা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা।

প্রধানমন্ত্রী ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত গ্লাসগো, লন্ডন ও প্যারিসে সরকারি সফরকালে কপ২৬-এ বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ২০২১, ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান, ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সম্মেলন, প্যারিস শান্তি ফোরাম, ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী ১৪ নভেম্বর তিনি সফর শেষে দেশে ফিরেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App