×

জাতীয়

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২১, ০৮:৩২ এএম

শূন্য থেকে মহাশূন্য জয়

প্রতীকী ছবি

প্রায় শূন্য হাতেই যাত্রা শুরু হয়েছিল ডিজিটাল বাংলাদেশের। সময়ের ব্যবধানে আজ তা মহাশূন্যের উচ্চতায় পৌঁছেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এখন বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক। দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে লেগেছে ডিজিটালের ছোঁয়া। কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা রাষ্ট্র পরিচালনায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের অনেক দেশকেই পেছনে ফেলে এগিয়ে গেছে দেশ। ফলে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা দেয়া ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এখন স্বপ্ন নয়, প্রকৃত অর্থেই বাস্তবতা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলার আধুনিক রূপই মূলত ডিজিটাল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্পে তা বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা করা হয়, তখন এ সম্পর্কে মানুষের ধারণা ছিল অস্পষ্ট। অনেকে এ নিয়ে হাসি-তামাশাও করেছেন। তবে এর বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ধারণা বদলাতে শুরু করে। বর্তমানে মানুষের আর্থ-সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবনে ডিজিটাল বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।

বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যাত্রা শুরু : বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল কৃষি। সরকার গঠনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রযুক্তির উন্নয়নকে সামনে নিয়ে আসেন। তিনি ১৯৭২ সালে শিক্ষা ব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করেন, যখন প্রাথমিক শিক্ষাই দেশজুড়ে বিস্তৃত হয়নি। তার সময়ে ১৯৭৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। ১৯৭৪ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন প্রযুক্তিবিদ্যার মাধ্যমে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব ও উন্নয়নের কথা। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় দেশের প্রথম ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন তিনি। তবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থেমে যায় এর গতি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আবারো সরকার গঠন করলে প্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়া হয়। তখন কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার, একচেটিয়া বাজার ভাঙতে নতুন মোবাইল ফোন কোম্পানির লাইসেন্স দেয়াসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরপর ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ‘দিন বদলের সনদে’ ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের রূপকল্প ঘোষণা করা হয় এবং ক্ষমতায় এসে শুরু হয় তা বাস্তবায়নের পালা।

হাতে হাতে মোবাইল-কম্পিউটার-ইন্টারনেট : ২০০৮ সালে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৮ লাখ। তখন ব্যান্ডইউথের ব্যবহার ছিল প্রতি সেকেন্ডে ৮ গিগাবিট (জিবিপিএস)। আর গত ২৬ আগস্ট দেশে ২৬ হাজার ৪৯ জিবিপিএস ব্যান্ডইউথ ব্যবহারের রেকর্ড হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন সাড়ে ১২ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এর মধ্যে মোবাইল ফোনে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি ও ব্রডব্যান্ড ও পিএসটিএনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন প্রায় ১ কোটি। ২০০৮ সালে দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী ছিল প্রায় ৫৬ লাখ। এখন দেশে সক্রিয় মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৭ কোটি ৮০ হাজারেরও বেশি। তখন দেশে ২ জি মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল। আর এখন থ্রিজি, ফোরজির পর চলতি বছরই চালু হতে যাচ্ছে ৫জি নেটওয়ার্ক। ২০০৮ সালে প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ব্যান্ডইউথের মূল্য ছিল ৭৮ হাজার টাকা। এখন তা মাত্র ৩০০ টাকা। ইনফো সরকার প্রকল্পের ফাইবার অপটিক ক্যাবলের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ে ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে দুর্গম ৭৭২ এলাকাকে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আনা হয়েছে। ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষও এখন ব্যক্তিগত যোগাযোগ থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব কিছুতেই মোবাইল ও কম্পিউটারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ : মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট পাঠানোর মধ্য দিয়ে ২০১৮ সালের ১২ মে বাংলাদেশ নতুন এক উচ্চতায় ঠাঁই করে নেয়। যুক্তরাষ্ট্রের কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ করা হয়। নিজস্ব স্যাটেলাইট উৎক্ষেপকারী দেশ হিসেবে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হয় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে রাশিয়ার ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া অরবিটাল স্লটে এখন নতুন আরেকটি স্যাটেলাইট স্থাপনের কাজ শুরু করেছে সরকার। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে-১ এ ২৬টি কে-ইউ ব্যান্ড এবং ১৪টি সি ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। দেশের সব অঞ্চল, বঙ্গোপসাগরের জলসীমা, ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া এর কভারেজের আওতায় রয়েছে। দেশের টেলিভিশন চ্যানেল ও ডিটিএইচ সেবায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ব্যবহার করায় বছরে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া হন্ডুরাস, তুরস্ক, ফিলিপাইন, ক্যামেরুন ও দক্ষিণ আফ্রিকার কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলের ট্রান্সপন্ডার ব্যবহার করছে। দেশে পার্বত্য, হাওড় ও চরাঞ্চলে উচ্চগতিসম্পন্ন ইন্টারনেট সুবিধা দেয়া হচ্ছে এ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে। বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক অচল হয়ে পড়লেও বিকল্প হিসেবে কাজ করবে এ স্যাটেলাইট।

করোনাকালে ডিজিটাল সক্ষমতা : করোনাকালীন ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল সবচেয়ে বেশি দৃশ্যমান হয়েছে। লকডাউনেও মানুষ দৈনন্দিন কেনাকাটা, অফিস-আদালত করেছেন অনলাইনে। সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বিভিন্ন অ্যাপ ও সেবা ব্যবহার করে টিকা রেজিস্ট্রেশন, শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রাখা, জরুরি সহায়তা এমনকি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারও দেয়া হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রস্তুতি না থাকলে বিষয়গুলো এত সহজ হতো না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আইসিটি বিভাগ জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আইসিটি বিভাগ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে। সেগুলো সংসদ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও ফেসবুকে সম্প্রচার করা হয়। ৬ হাজারের বেশি অনলাইন ক্লাস নেয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও ‘ভার্চুয়াল ক্লাস’ প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়। এসব কারণে করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত থেকেছে।

করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় ৯০ লাখ পরিবারকে ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে ঈদ উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত দুই ঈদে কয়েক দফায় সরাসরি উপকারভোগীর কাছে পৌঁছে যায় এ সহায়তা। করোনাকালীন ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে বিচারিক কাজও চলেছে। ১৬ হাজারেরও বেশি জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ ও ১১ হাজারের বেশি ভার্চুয়াল শুনানি হয়।

করোনার দুঃসময়ে আইসিটি বিভাগের ৩৩৩ হেল্পলাইনটি মানুষের ভরসার জায়গা হয়ে ওঠে। এ নম্বরে ফোন করে খাদ্য, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা পেয়েছেন অনেকে। আইসিটি বিভাগের তথ্য মতে, সামাজিক সমস্যা, সাইবার ক্রাইম ও করোনা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে এ পর্যন্ত ৭ কোটি ১৭ লাখের বেশি মানুষ এ নম্বরে ফোন করেন। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষকে খাদ্য সহায়তা ও ৭৪ লাখ টেলি-মেডিসিন সেবা দেয়া হয়। এছাড়া পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবা পেতে ৯৯৯ কল সেন্টার চালুর পর সেটিও বেশ সাড়া ফেলে। এ পর্যন্ত ৭ কোটির বেশি মানুষ এ নম্বরে ফোন করেছেন।

করোনার টিকা দেয়ার ক্ষেত্রে ‘সুরক্ষা’ অ্যাপ ডিজিটাল বাংলাদেশের সক্ষমতার আরেক দৃষ্টান্ত। এ পর্যন্ত ৭ কোটির বেশি মানুষ এই অ্যাপের মাধ্যমে টিকার নিবন্ধন করেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া, কেন্দ্র নির্ধারণ, টিকা কার্ড সংগ্রহ- সবই হয়েছে এই অ্যাপের মাধ্যমে। এ কারণে দেশে দ্রুততম সময়ে জটিলতা ছাড়াই বিশাল জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনা গেছে। অন্যদিকে, ই-কমার্স ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা করোনায় অর্থনীতিকে সচল রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। মানুষ ঘরে বসেই কেনাকাটা ও আর্থিক লেনদেনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে বিকাশ, নগদ, রকেট, উপায়সহ এ চ্যানেলে মোট ৭১ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা লেনদেনের রেকর্ড হয়। প্রতিদিনের গড় হিসেবে যা প্রায় ২ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা।

ই-সেবার আওতায় সরকারি অফিস, ফাইল ও মিটিং : ২০১৪ সালে জাতীয় তথ্য বাতায়ন চালুর মধ্য দিয়ে সরকারের সঙ্গে জনগণের সরাসরি যোগাযোগের পথ তৈরি হয়। দেশের সব ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়সহ ৫১ হাজারের বেশি সরকারি অফিসের তথ্য, কর্মকর্তাদের নাম-নম্বর-ই-মেইল, সেবার ধরন, বিভিন্ন ফরম, আইন, প্রজ্ঞাপন, প্রভৃতি এই ওয়েবসাইটে যুক্ত করা হয়। জাতীয় তথ্য বাতায়নে বর্তমানে ৬৫৭টি ই-সেবা ও প্রায় সাড়ে ৮৬ লাখ কন্টেন্ট রয়েছে। প্রায় ১৯ হাজার সরকারি অফিসকে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়েছে।

সরকারি কাজে গতি ও স্বচ্ছতা আনতে ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন একসেস টু ইনফরমেশন (এ টু আই) পরীক্ষামূলকভাবে ই-নথি ব্যবস্থা চালু করে। ২০১৯ সালে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ই-নথিতে কাগুজে ফাইলের পরিবর্তে সরকারি কর্মকর্তারা কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ফাইল নিষ্পত্তি করতে পারেন। নথি গায়েব, অসাধু উপায় অবলম্বনের পথও বন্ধ হয় অসাধু কর্মকর্তাদের। এ পর্যন্ত ই-নথি ব্যবহার করে ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি ফাইল নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দেশের সব অফিসে ই-নথি চালুর প্রক্রিয়া চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সফরে থেকেও বিভিন্ন ফাইল এ ব্যবস্থায় নিষ্পত্তি করছেন। ফলে করোনাকালীন তার কার্যালয় বন্ধ থাকলেও কাজ থেমে থাকেনি।

অন্যদিকে, সরকারের আইসিটি বিভাগ দেশের জেলা-উপজেলা পর্যন্ত উচ্চমানের ভিডিও কনফারেন্সিং নেটওয়ার্ক তৈরি করায় মাঠপর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন সহজ হয়। প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ৬৯৬টি ভিডিও কনফারেন্স করেন। ২০২০ সালে ৪৭৫টি ও চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত তিনি ১০ হাজার ৮৩টি অনলাইন অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

আইন, বিধি ও নীতিমালা প্রণয়ন : ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের জন্য বেশ কয়েকটি আইন প্রণয়ন ও সংশোধন করেছে সরকার। এছাড়া অনেকগুলো বিধি, নীতিমালা, কৌশলপত্র ও নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০০৯ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনটির কয়েকটি ধারা ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। ২০১০ সালে করা হয় হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইন। ২০১৮ সালে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন ও ২০১৮ সালে করা হয় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এছাড়া ২০২০ সালে তিনটি আইনের খসড়া করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- এ টু আই বাংলাদেশ ইনোভেশন এজেন্সি আইন, উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি আইন এবং ডাটা প্রটেকশন আইন। ডাটা প্রটেকশন আইনটি পাস হলে ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটারসহ বিদেশি কর্তৃপক্ষগুলো এ দেশে অফিস করতে এবং দেশের তথ্য দেশের ডাটা সেন্টারে রাখতে বাধ্য হবে।

অর্থনৈতিক অর্জন ও কর্মসংস্থান : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে দেশের মানুষের ১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন দিন, ৮ দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ এবং ১ মিলিয়ন বার যাতায়াত কমেছে। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) চালু করায় মানুষ বাড়ির কাছেই সেবা পাওয়ায় সময়, খরচ ও ভোগান্তি কমেছে। আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ও আইটিসেবা সরবরাহ হচ্ছে। এখাতে রপ্তানি ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। ৩৯টি হাইটেক পার্ক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি শেষ হলে ৩ লাখের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। চালু হওয়া ৫টি পার্কে ১২০টি প্রতিষ্ঠান ৩২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। আইটিতে দক্ষ ১৩ হাজারের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে আইওটি, রোবোটিকস, সাইবার সিকিউরিটির উচ্চ প্রযুক্তির ৩১টি বিশেষায়িত ল্যাব স্থাপন ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশের অর্থ হচ্ছে আগামীর উন্নত বাংলাদেশের পথযাত্রা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App