×

খেলা

নিউজিল্যান্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২১, ১২:০৩ এএম

নিউজিল্যান্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

রবিবার দুবাইয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নাার দুইটি নান্দনিক ফিফটি তোলে শিরোপা জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। ছবি : ভোরের কাগজ

নিউজিল্যান্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

ট্রফি নিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের উল্লাস

নিউজিল্যান্ডের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া

ট্রফি নিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়দের উল্লাস

দুবাইয়ের মাঠে ম্যাচ জয়ের পরিসংখ্যান ভারী পরে ব্যাট করা দলের। তাই টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। দুবাইয়ে রবিবার (১৪ নভেম্বর) টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ১৭৩ রান করে শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শ ফিফটি হাঁকিয়ে অজিদের প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি শিরোপা জিততে সহায়তা করেন। ডেভিড ওয়ার্নার ৩৮ বলে ৫৩ রান করে সাজ ঘরে ফিরলেও অন্য প্রান্তে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন মিচেল মার্শ। তিনি ৫০ বলে ৭৭ রানে অপরাজিত থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার যে দুটি উইকেটের পতন ঘটে তা নেন পেসার টেন্ট্র বোল্ট। তিনি ৪ ওভারে দিয়েছেন ১৮ রান। ১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। তৃতীয় ওভারে অজিরা হারায় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে। বোল্টের বল এগিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে মিচেলের হাতে ক্যাচ দেন। ৭ বলে ৫ রান করেন ফিঞ্চ। এরপর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে প্রতিরোধ গড়েন মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনের প্রতি আক্রমণে পাওয়ার প্লেতে লড়াই করেন তারা। চতুর্থ ও পঞ্চম ওভারে ২৫ রান তুলেছেন দুই ব্যাটসম্যান। সব মিলিয়ে ৬ ওভার শেষে তাদের রান সংগ্রহ ১ উইকেটে ৪৩। ‘পাওয়ার প্লে’ ঠিকঠাক মতো কাজে লাগাতে না পারলেও পরের ৪ ওভারে দাপট দেখায় অস্ট্রেলিয়া। ১০ ওভারে গিয়ে রান দাঁড়ায় ৮২তে।

ডেভিড ওয়ার্নার ও মিচেল মার্শের দৃঢ়তায় পাল্টা জবাব দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের জন্য দরকার ৯১ রান। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ড শেষ ১০ ওভারে ১১৫ রান তুলেছিল। ওয়ার্নার যেন আজ কেন উইলিয়ামসরে বিধ্বংসী ব্যাটের বিপক্ষে জবাব দিতে নেমেছিলেন। ওয়ার্নার আরও বেশি ভয়ংকর হওয়ার আগে তাকে সাজঘরে ফেরান কিউই ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। ওয়ার্নার ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন। তার ইনিংসে চারটি চার ও তিনটি ছক্কার মার ছিল। অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে মিচেল মার্শ ঝড়ে অব্যাহত রাখেন। তিনি ৩১ বলে সমান ৩ বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারিতে ফিফটি তুলে নেন। দলের লক্ষ্য তখন অনেকটা ছোট হয়ে আসে।

প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। পর পর দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে শিরোপা হাতছাড়া করেছে তারা। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি নিতে নিজেদের সর্বোচ্চ টা দিতে চেষ্টা করেছে কিউইরা। অন্যদিকে পাঁচ বারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় বার খেলছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১০ সালে ট্রফি হাত ছাড়া করলেও আজ তারা সুযোগ দিতে চাননি কিউইদের। দুই ওশেনীয়দের মধ্য প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ট্রফি জেতার লড়াই।

এর আগে দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সপ্তম বিশ্বকাপের ফাইনালে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা মারমুখী ছিলেন দুই কিউই ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল ও ড্যারেল মিচেল। তবে নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি বড় হতে দেননি জশ হ্যাজেলউড। দারুণ এক স্লোয়ারে ফিরিয়েছেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের সেমিফাইনালের নায়ক ড্যারেল মিচেলকে। তার ক্রস সিম ডেলিভারিতে আলতো টোকা দিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মিচেল। ৮ বলে ১১ রান করে ফিরেছেন তিনি। ২৮ রানে প্রথম উইকেট হারাল নিউজিল্যান্ড। এরপর কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিল সতর্কতার সঙ্গে এগোতে থাকেন। অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রান তোলা যেন ভুলেই গেছে নিউজিল্যান্ড। তবে তাদের জুটি ভয়ও দেখাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়াকে। দুজনই থিতু হয়েছিলেন। খোলস থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছিলেন। বিপজ্জনক এ জুটি ভাঙার দরকার ছিল। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কাজটা করলেন অ্যাডাম জাম্পা। তার ঘূর্ণিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন গাপটিল। ৩৫ বলে ২৮ রান করে ফেরেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার। ভাঙে দুজনের ৪৮ রানের জুটি। তবে উইলিয়ামসন হঠাৎই যেন মারমুখী হয়ে ওঠেন। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন। তার সঙ্গে ব্যাট চালাতে থাকেন তৃতীয় উইকেটে নামা গ্লেন ফিলিপসও। দলীয় ১৪৪ রানে কিউইরা হারায় তাদের তৃতীয় উইকেট। ফিলিপস ওভার বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ম্যাক্সওয়েলের হাতে বন্দি হন। জশ হ্যাজেলউডের বলে ফিরে যাওয়ার আগে ফিলিপস ১ বাউন্ডারি ও ১ ওভার বাউন্ডারির সাহায্য ১৭ বলে ১৮ রান করেন। একই ওভারে দুবাইয়ে ঝড় তুলতে থাকা কিউই অধিনায়ককেও ফেরান হ্যাজেলউড। সীমানার ওপর দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে স্টিভ স্মিথের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সাজঘরের ফেরার আগে ৪৮ বলে ৮৫ রানের একটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। তার ইনিংসটি ১০ বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারিতে সাজানো ছিল। এরপর উইকেটে নেমে বাকি দায়িত্বটা সারেন জিমি নিশাম ও টিম সেইফার্ট। নিশাম ৬ বলে ১৩ রানে এবং সেইফার্ট ৫ বলে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্য সবচেয়ে সফল জশ হ্যাজেলউড ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। ২৬ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট শিকার করেন স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের যাত্রাটা ২০০৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে। প্রথম আসরে পাকিস্তানকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত। দ্বিতীয় আসরে ২০০৯ সালে আক্ষেপ ঘুচিয়ে শিরোপা ঘরে তোলে পাকিস্তানও। তৃতীয় আসরে ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে হেরে শিরোপা হাতছাড়া করে অস্ট্রেলিয়া। চলতি আসরের আরেক ফাইনালিস্ট এর আগে গত আসরের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়। এরপর তিন আসরের দুইটি জেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, একটি শ্রীলঙ্কা। এশিয়ার পরাশক্তির দলগুলোর মধ্য বাংলাদেশই শুধু জেতেনি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনো ট্রফি। ২০০৭ সালে প্রথম আসরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি মাত্র জয় ছাড়া মূলপর্বে আর কখনো জয়ের মুখই দেখেনি বাংলাদেশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App