×

শিক্ষা

‘প্রশ্নে যাই লেখা থাকুক, এসএসসি পরীক্ষা দেড় ঘণ্টাই’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০২১, ০৯:৫১ পিএম

এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রথম দিনেই বিভ্রান্তিতে পড়েছে অনেক পরীক্ষার্থী। সাধারণ ৯টি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা হওয়ার নির্দেশনা থাকলেও এসএসসির প্রথম দিনে পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নে সময় উল্লেখ ছিল ২ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। যদিও শিক্ষার্থীদের দেড় ঘণ্টায় সময়ই পরীক্ষার জন্য দেয়া হয়েছে।

শিক্ষা বোর্ডগুলো পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেড় ঘণ্টা পরীক্ষার নির্দেশনা আসার আগেই প্রশ্ন তৈরি ছিল। তাই সময় নিয়ে প্রশ্নে বিভ্রান্তি। তবে, প্রশ্নে যাই লেখা থাককু পরীক্ষা দেড় ঘণ্টাই অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে সব কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রুটিনের সঙ্গেও এ বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া ছিলো। পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতেও এমনটি থাকতে পারে।

রবিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে এসএসসির পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের অনেকেই বলেন প্রশ্নপত্রে ২ ঘণ্টা উল্লেখ থাকলেও তাদের দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে কিছুটা বিভ্রান্তিও সৃষ্টি হয়।

রাজধানীর উইলস লিটল ফ্ল্যাওয়ার উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, আমার সন্তানের কেন্দ্র মতিঝিল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। পরীক্ষার প্রশ্নের লেখা ছিলো আড়াই ঘন্টা কিন্তু বাস্তবে ছিলো দেড় ঘন্টা। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার পর ছাত্ররা এ বিষয়ে জানতে চাইলে রীতিমতো ধমক দেয়া হয়।

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম আমিরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন আগে তৈরি করা রাখায় এতে সময় লেখা ছিল আগের নিয়মে। প্রশ্ন ছাপাতে প্রায় দুইমাস সময় লাগে। আমরা আগে থেকেই প্রশ্ন প্রিন্ট করে রাখাসহ পরীক্ষার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। পরে সিদ্ধান্ত হয় দেড় ঘণ্টা পরীক্ষা নেওয়ার।

আগে প্রশ্ন ছাপানোয় এমনটি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী পরীক্ষায় তিনঘণ্টাও সময় লেখা থাকতে পারে। তবে, প্রশ্নে যাই থাকুক পরীক্ষা দেড় ঘণ্টাই হবে। আমরা কেন্দ্রেগুলোকে ইতোমধ্যে বলেছি এ বিষয়ে পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের জানাতে। কেন্দ্রগুলো পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের বিষয়টি জানিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয় অবগত আছেন। এ বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তির সুযোগ নেই। মুন্সীগঞ্জের একজন কেন্দ্র সচিব বলেন, আমার কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষার্থীদের তিনটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে বলা হয়েছে, সময় দেওয়া হয়েছে ১ ঘন্টা। মোট নম্বর ১৫। কিন্তু আসলে এটা ছিলো ৩০ নম্বরের এবং দুই ঘন্টার পরীক্ষা।

জানতে চাইলে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, এটি আসলে প্রশ্ন ভুল নয়, এসএসসির প্রশ্ন আগেই ছাপানো থাকার কারণে সেসব প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর আগে পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি পরিষ্কার করতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়। তিনি বলেন, প্রথমদিন সারাদেশে ‘ক’ সেটের প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে লটারি করে সেট নির্বাচন করা হয়ে থাকে। সেটি আগে কারও দেখার সুযোগ থাকে না। তাই এটিকে ভুল বলা যাবে না বলে দাবি করেন তিনি। বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ড থেকে জানা গেছে, সব জেলায় ‘ক’ সেটের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়েছে। আগের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই সেট তৈরি করা হলেও সেটি আর বাতিল করা হয়নি। এ কারণে এ ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ জটিলতার তোপে পড়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলে বিভ্রান্তিতে পড়ে। ফলে অনেকে ভালো প্রস্তুতি নিয়েও আশানুরূপ উত্তর লিখতে ব্যর্থ হয়েছে।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, আগের প্রশ্নে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। ফলে কিছু বিষয়ে পরিবর্তন হলেও তা প্রশ্নের মধ্যে আগের মতো রয়ে গেছে। বর্তমানে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা আয়োজন হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

উপমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে স্কুলগুলোতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর আগে তারা কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থীকে জানিয়ে দেবেন। তারপরও যদি কেউ বিভ্রান্তিতে পড়ে একাধিক প্রশ্নের উত্তর লিখে ফেলে তবে বেস্ট দুটি উত্তর নির্বাচন করে মূল্যয়ন করা হবে। এ জন্য কাউকে চিন্তিত বা উদ্বিগ্ন না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। পরবর্তী পরীক্ষায়ও কী এমন ভুল নির্দেশনার প্রশ্ন বিতরণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষার আগে আমাদের কারও প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই। তাই কোন প্রশ্নে পরীক্ষা হবে সেটি আগে থেকে বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App