১৫ দিন সেবা না দিলে বিল নেয়া যাবে না: বিটিআরসি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২১, ০৪:০২ পিএম
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের বিল দেয়া নিয়ে আগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি। আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টানা ৩ দিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকলে গ্রাহকদের পুরো মাসের বিল গ্রাহকদের কাছ থেকে না নেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। তবে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবির আপত্তির মুখে ওই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন টানা ১৫ দিন সেবা দিতে না পারলে গ্রাহককে মাসের বিল দিতে হবে না। শনিবার (১৩ নভেম্বর) বিটিআরসি এ নির্দেশনা জারি করে।
আইএসপিএবির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, আগে নিয়ম ছিল টানা ২১ দিন ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ থাকলে গ্রাহকদের বিল দিতে হবে না। কিন্তু বিটিআরসি বাস্তবতা অনুধাবন না করেই এবং আমাদের সঙ্গে বৈঠক না করেই সেটাকে ৩ দিনে নামিয়ে আনে। এরপর আমরা তাদের সঙ্গে বৈঠক করি। কারণ, নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেয়ার বিষয়টি শুরু আইএপিএবির কাজ নয়। অনেক সময় আন্ডার গ্রাউন্ড লাইন কাটা পড়ে, এমটিপিএন ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ থাকে, সিটি করপোরেশন তার কেটে দেয়। সেগুলো সমাধান হতে ৩ দিনের বেশি সময় লাগতে পারে। তখন যদি গ্রাহক মাসের বিল দিতে না চান তবে ব্যবসায় লোকসান হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিটিআরসিকে আমরা বাস্তবতা অনুধাবনের অনুরোধ জানাই। এর প্রেক্ষিতে বিটিআরসি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর আগে বিটিআরসি গত ৫ অক্টোবর গণমাধ্যমগুলোতে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, একদিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মোট বিলের ৫০ ভাগ নিতে পারবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। দুদিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মোট বিলের ২৫ ভাগ নেয়া যাবে। আর টানা তিনদিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে ওই মাসের কোনো বিল গ্রাহকের কাছ থেকে নেয়া যাবে না।
বিটিআরসি জানায়, নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, টানা পাঁচদিন অব্যাহতভাবে ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মোট বিলের ৫০ ভাগ নিতে পারবে সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। আর টানা ১০ দিন ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন থাকলে মোট বিলের ২৫ ভাগ নেয়া যাবে। এছাড়া টানা ১৫ দিন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকলে গ্রাহকদের বিল দিতে হবে না।
এদিকে, গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, কমিশনের কাজ সবার আগে গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু বিটিআরসি এ নির্দেশনার মাধ্যমে কেবলমাত্র আইএসপি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করেছে। এমনকি ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ এর ৪৫ ধারা অমান্য করেছে। এই আইনে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রয় বা সরবরাহ না করলে এক বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান আছে। বিটিআরসির এই নির্দেশনায় দীর্ঘদিন ইন্টারনেট-সেবা না থাকলে গ্রাহক যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হলো তার বিপরীতে গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ কিংবা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান কারণ দর্শানো বা জরিমানা করার কোনো নির্দেশনা নেই।
বিবৃতিতে তিনি বিটিআরসির নির্দেশনা প্রত্যাহার করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার কোয়ালিটি অব সার্ভিস নির্ধারণে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানান।