ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার বলেছেন, দ্বিতীয় ধাপের ভোটে সাত জনের প্রাণহানি হয়েছে এটা সঠিক। এর জন্য কমিশন ব্যথিত। যেকোনো কারণে রাষ্ট্রের একজন নাগরিক নিহত হোক এটা আমরা কখনো চাইবো না। এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। নির্বাচনে যে সাত জন মারা গেছে তারা কেউ আমাদের ভোট কেন্দ্রে মারা যায়নি। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী যারা তাদের মধ্যেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সহিংসতা হয়েছে এবং তারা মারা গেছে। তবে দেশে ভোট ভালো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন ভবনে দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, যে ৮৩৪টি ইয়নিয়ন পরিষদে ভোট হয়েছে আমরা সব জেলা-উপজেলায় খোঁজ নিয়েছি, প্রার্থীরাও কেউ কেউ আমাদের কাছে তাদের অভিমত জানিয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি ভোটটি খুব সুন্দর হয়েছে, উৎসবমুখর হয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, এ ধাপের ৮৩৪টি ইউপি নির্বাচনে আট হাজার ৪০০ ভোট কেন্দ্র। আমরা গণমাধ্যম ও ল মনিটরিং সেন্টারের মাধ্যমে রিপোর্ট পেয়েছে ১০টি কেন্দ্রে ব্যালট ছিনতায়ের চেষ্টা করেছে। আমাদের প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ওই ১০ কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিয়েছেন। এগুলো পরবর্তীতে ভোটগ্রহণ করা হবে। অন্যান্য কেন্দ্রগুলো রেজাল্ট নিয়েও যদি ডিসিশন না হয় তখন পরবর্তিতে ভোট নেওয়া হবে। আমরা মনে করি পুরো দেশে ভালো ভোট হয়েছে।

ভোটকেন্দ্রের বাইরের সংঘর্ষ ঘটলে সেটি নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের বাইরে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে যে ইউপি নির্বাচন হয়েছে সেসব নির্বাচনের ডাটাগুলো আপনাদের গণমাধ্যমেই আমরা নিয়েছি। সে তথ্যে আমরা দেখেছি মোট ৮৪ জন মানুষ মারা গেছেন। কিন্তু এবার আজকে যে ছয় জন মানুষ মারা গেছেন সেটি নিঃসন্দেহে কমিশনের জন্য দুঃখজনক ব্যাপার। এটি নির্বাচন কমিশনেরর কাছে জেলা প্রশাসক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তারা যেভাবে ফোর্স চেয়েছেন আমরা সেটি ডেপ্লয় করেছি। আমরা মনে করি এখানে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট, রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা সবাই অত্যন্ত একটিভ ছিলেন এবং তারা চেষ্টা করেছে ভালো কাজ করার জন্য সে কারণে ভোটটি সুষ্ঠু হয়েছে।

ইসি সচিব বলেন, একটি কথা মনে রাখতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কিন্তু ঘরে ঘরে প্রতিযোগিতা হয়, পাড়ায় পাড়ায় প্রতিযোগিতা হয়। আপনারা দেখবেন একটি পাড়া আরেকটি পাড়ার উপর প্রভাব বিস্তার করতে চায়। এই প্রভাব বিস্তার করার একটি প্রতিযোগিতা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে থাকে। প্রার্থী যারা তারা কিন্তু অতি আবেগী হয়ে যায় বিজয়ের জন্য। এ সব কারণেই কিন্তু এই নির্বাচনে সহিংসতা হয়ে থাকে। তারপরও বলব যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তার জন্য নির্বাচন কমিশন মনে করে এই ঘটনাগুলো না ঘটলে আরো ভালো হতো। আমরা মনে করি নেক্সট টাইম আরো ভালো ভোট হবে।

কত শতাংশ ভোট পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতে শতাংশ ভোট পড়েছে সেটি এই মুুহূর্তে বলা কঠিন, যেহেতু ভোট গণনা হচ্ছে। আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্য পেয়েছে ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।

সামনের ধাপের নির্বাচনে হতাহত কমাতে নতুন কোন চিন্তা করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ যে ভোটটি হয়ে গেছে এটি বসে এনালাইসিস করব। এনালাইসিস করে দেখব আর কোন জায়গায় বেশি আমাদের জোর দিতে হবে, যাতে ভোট আরো ভালো হয়।