×

জাতীয়

আমরা ধর্ষণ করিনি, সত্যের জয় হয়েছে: সাফাত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২১, ০৩:৪৭ পিএম

আমরা ধর্ষণ করিনি, সত্যের জয় হয়েছে: সাফাত

ধর্ষণ মামালা থেকে খালাস পাওয়ার পর আনন্দিত সাফাত আহমেদ। ছবি: ভোরের কাগজ

আলহামদুলিল্লাহ, ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা কাউকে ধর্ষণ করিনি। সত্যের জয় হয়েছে। আমরা এখন আনন্দিত। আমাদের মিথ্যা মামলায় সাজানো হয়। রাজধানীর বনানীর ২৭ নম্বর রোডে দ্যা রেইন ট্রি হোটেলে জন্মদিনের পার্টিতে দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় খালাস পেয়ে ভোরের কাগজকে একথা বলেন আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ। রায়ের পর তাদের খুশি হয়ে কোলাকুলি করতে দেখা যায়। আর চিৎকার করে আলহামদুলিল্লাহ বলতে দেখা যায়।

এর আগে দুপুর ১২ টা ২০ মিনিটের দিকে আসামিদের এজলাসে হাজির করা হয়। এরপর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।

সাফাত বাদে খালাস পাওয়া বাকি আসামিরা হলেন, নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিম, সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। দেহরক্ষী ও গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযুক্তরা মামলার বাদী, তার বান্ধবী ও বন্ধুকে আটকে রাখে। অস্ত্র দেখিয়ে ভয় প্রদর্শন ও অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। বাদী ও তার বান্ধবীকে জোর করে একটি কক্ষে নিয়ে যায় আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ ও তার বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সাদমান সাকিফকে দুই বছর ধরে চেনেন মামলার বাদী। তার মাধ্যমেই ঘটনার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে সাফাতের সঙ্গে দুই শিক্ষার্থীর পরিচয় হয়। ওই দুই শিক্ষার্থী সাফাতের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যান। সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল ও দেহরক্ষী তাদের বনানীর ২৭ নম্বর রোডে রেইনট্রি হোটেলে নিয়ে যান। হোটেলে যাওয়ার আগে বাদী ও তার বান্ধবী জানতেন না যে, সেখানে পার্টি হবে। তাদের বলা হয়েছিল, এটা একটা বড় অনুষ্ঠান, অনেক লোকজন থাকবে। অনুষ্ঠান হবে হোটেলের ছাদে।

সেখানে যাওয়ার পর তারা কাউকে দেখেননি। সেখানে আরও দুই তরুণী ছিলেন। বাদী ও তার বান্ধবী সাফাত ও নাঈমকে ওই দুই তরুণীকে ছাদ থেকে নিচে নিয়ে যেতে দেখেন। এ সময় বাদীর বন্ধু ও আরেক বান্ধবী ছাদে আসেন। পরিবেশ ভালো না লাগায় তারা চলে যেতে চান। এ সময় অভিযুক্তরা তাদের গাড়ির চাবি শাহরিয়ারের কাছ থেকে নিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করেন। ধর্ষণের সময় গাড়িচালককে ভিডিও করতে বলেন সাফাত। বাদিকে নাঈম আশরাফ মারধর করেন।

এ ঘটনার ১ মাস ৭ দিন পর একই বছরের ৬ মে বনানী থানায় ভুক্তভোগী বাদি হয়ে সাফাত, নাঈমসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(১)/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৮(৫)১৭।

আসামিরা হলেন, নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিম, সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন। দেহরক্ষী ও গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার পরের মাসে ৫ জুন পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মোট ৪৭ জনকে সাক্ষী করা হয়। এর পরের মাসে ১৩ জুলাই ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক শফিউল আজম পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের আদেশ দেন। বিচারকাজ শুরু হলে ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

সর্বশেষ এবছরের ৩ অক্টোবর মামলার রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের সকল যুক্তি উপস্থাপন শেষ হলে রায় ঘোষণার জন্য ১২ অক্টোবর দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল। যুক্তি উপস্থাপনে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষ। অন্যদিকে আসামিপক্ষ তাদের নির্দোষ দাবি করা হয়।

কিন্তু ১২ অক্টোবর বিচারক অসুস্থ থাকায় ও মামলার রায় প্রস্তুত না থাকায় রায় পিছিয়ে ২৭ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়। তবে ২৭ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী আবদুল বাসেত মজুমদার মারা যাওয়ায় আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিনটি ধার্য করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App