×

অর্থনীতি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো যৌক্তিক বললেন অর্থমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২১, ০৪:২৪ পিএম

সরকার টাকা প্রিন্ট করে না। তাই আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায়, বাড়তি দাম জনগণের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারের পক্ষে যেটুকু ভর্তুকি বহন করা সম্ভব, সেটুকু ভর্তকি দেবে। বাকিটা জনগণকে বহন করতে হবে বলে জানিয়েছেন অর্থন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বুধবার (১১ নভেম্বর) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, দাম সমন্বয় না করলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। দেশ অনেক পিছিয়ে যাবে। ৭ বছরে বিপিসির ৪৩ হাজার কোটি টাকা মুনাফার সময় কেন দাম কমানো হয়নি, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, তখন তেলের দাম অনেক কম ছিল।

তিনি আরও বলেন, ভালো দিক দেখবেন না, তেলের দাম কি আমরা বাড়িয়েছি? আমাদের সরকার বাড়িয়েছে? কোনো জাহাজে যদি করোনা আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায় তাহলে সেই জাহাজ কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। এই যে জাহাজ চলতে পারে না, মাসের পর মাস সাগরে আটকে আছে; সেই চার্জ শিপিং কোম্পানিকে করা হয়। চার্জগুলো সব একত্র হয়ে পুরো চার্জটা আমরা পাই।

ডিজিলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ পড়বে, এর কোনো বিকল্প ছিল কিনা জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বীকার করি। যখন দাম কমে আমরা দাম কমাই, যখন বাড়ে বাড়াই। এখন কি পরিমাণ দাম বেড়েছে সেটা জানেন? আগামী মিটিংয়ে আমরা আপনাদের জানাবো গত দুই বছর কী পরিমাণ বেড়েছে? আমরা কতটা বাড়িয়েছি। আপনারা তাহলে বুঝতে পারবেন সরকার কতটা বহন করতে পারে। যারা ভোক্তা, কিছুটা তাদের বহন করতে হবে। আপনাদের বুঝতে হবে এখনকার দাম কত। বাকিটা সরকারকে বহন করতে হচ্ছে।

বিপিসি ৪৩ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে, কিন্তু জ্বালানির দাম কমেনি এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, সরকার টাকা নিয়ে কী করবে? এই যে সেফটিনেট প্রকল্পগুলো আছে, এগুলো তো সরকার টাকা প্রিন্ট করে চালাচ্ছে না। সরকারকে টাকা আয় করে চালাতে হয়। এগুলো তো শেয়ার করতে হয়। তারপরও সরকার যতটুকু পারে শেয়ারিং করে। সামান্য যেটা না হলে নয় সেটা ভোক্তার ওপর দেই।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি বলেছে, বাস ভাড়ার ৪০ শতাংশ তেলের উপর নির্ভর করে। সে হিসাবে ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়তে পারে। কিন্তু বেড়েছে ২৭ শতাংশ সিপিডি’র এই ব্যাখার জবাবে মন্ত্রী বলেন, সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ভাড়া পর্যালোচনার অনুরোধ জানাবেন তিনি।

বাসভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি পুনর্বির্বেচনার দাবি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আগে আমাকে জানতে হবে মূল্য বৃদ্ধির কারণ। আমি যদি দেখি কোনো ভিত্তি ছাড়া দাম বাড়ানো হয়েছে, সেটা বিবেচনা করার অবশ্যই সুযোগ রয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম যখন আন্তর্জাতিক বাজারে কম ছিলে সেই সুবিধা কি আমরা সবাই পাইনি? সবাই সুবিধা পেয়েছে। এখন দাম বেড়েছে, কী পরিমাণ বেড়েছে নেটে গেলে পাবেন। আমরা তেল উৎপাদন করি না, আমরা ভোক্তা। আমরা রিসিভিং করি, আমাদের এখানে হাত দেয়াও সম্ভব নয়। তারপরও আমরা চেষ্টা করবো যে পরিমাণ বাড়বে সে পরিমাণ যেনো আমাদের ভোক্তারা সহ্য করতে পারেন সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা হবে। আমি একজন নাগরিক ও অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি বলছি।

তিনি আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী হিসেবেও আমার দায়িত্ব আছে। আমাকে রেভিনিউ জোগান দিতে হয়। রেভিনিউ জোগান দিতে না পারলে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে না। আমরা পিছিয়ে যাবো, আমরা পিছিয়ে যেতে চাই না। আমরা শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে কাজটি করবো। আমরা শেয়ার করবো, যতক্ষণ পারবে সরকার বহন করবে। সরকার বহন না করতে পারলে আপনারা জানতে পারবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App