×

অর্থনীতি

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক: সিপিডি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২১, ০৬:৪১ পিএম

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক: সিপিডি

বুধবার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে অভিমত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি। ছবি: ভোরের কাগজ

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক: সিপিডি

বুধবার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে অভিমত তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। ছবি: ভোরের কাগজ

করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার পরিস্থিতিতে দাম বাড়ানো যৌক্তিক হয়নি বলে দাবি করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।  এসময় তারা করোনা মহামারির পরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সহজ করতে এবং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয়ের বোঝা কমাতে সরকারকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।

বুধবার (১০ নভেম্বর) ‘জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি কতটুকু প্রয়োজন ছিল?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ সুপারিশ ও অভিমত তুলে ধরে সিপিডি। মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিত মূল্যায়ন করে সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে স্বাধীন পর্যালোচনা’ বিষয়ক দল এ অভিমত দেন।

গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলছে, কেরোসিন ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যুক্তিসঙ্গত নয়। সরকারের নীতিমালার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং রাজনৈতিকভাবে এটা কোনো আলোকিত সিদ্ধান্ত না। জ্বালানির সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধি জনগণের ব্যয়ের বোঝাকে আরও তীব্র করে তুলবে। ইতোমধ্যেই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার মাধ্যমে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সিপিডির নিবন্ধে বলা হয়, শুল্ক প্রত্যাহার বা ভর্তুকির মাধ্যমে বিপিসির ঘাটতি পূরণ করা যেতে পারে। বিভিন্ন দেশে জ্বালানি তেলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করা হয়। তাই দেশে মূল্য সমন্বয়ের প্রক্রিয়া ঠিক করা দরকার। এর সঙ্গে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) যুক্ত করা দরকার।

নিবন্ধে আরও বলা হয়, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে ইতোমধ্যেই বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লঞ্চের ভাড়া বেড়েছে। বিদ্যুৎ ও কৃষি উৎপাদন ব্যয় দ্বিগুণ হবে। এতে বাড়বে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়। এছাড়া করোনা মহামারির প্রভাবে মানুষের আয় কমে যাচ্ছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের চড়া দামের কারণে আগে থেকেই ভোক্তারা চাপে আছে। এ পরিস্থিতিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। সরকারিভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতির যে তথ্য দেওয়া হয়, বাস্তবের সঙ্গে তার কোনো মিল নেই।

সিপিডি বলছে, সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম নিয়মিত ওঠানামা করে। ২০১৬ সালে প্রতি ব্যারেল ৪২ ডলার হওয়ার পর দেশে ডিজেলের দাম কমিয়ে ৬৫ টাকা করা হয়। এরপর করোনা মহামারির প্রভাবে গত বছর দাম ২৩ ডলারে নেমে এলেও দেশে কমানো হয়নি। চলতি বছর ৮৩ ডলারে পৌঁছালে প্রতি লিটারে দেশে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। অথচ গত সাত বছরে বিপিসি মুনাফা করেছে ৪৩ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বিপিসি লোকসান করেছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। সব মিলিয়েও লাভজনক অবস্থান ধরে রেখেছে বিপিসি। তাই অর্থনৈতিক বিবেচনায়ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি সঠিক হতে পারে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App