শিকারির খাঁচা থেকে ২০০ বক উদ্ধার করে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর চারটা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত পরিবেশকর্মীরা বিভিন্ন বিলে অভিযান চালিয়ে শিকারির খাঁচায় বন্দি বকগুলো উদ্ধার করেন। এর আগে প্রায় এক হাজার বক উদ্ধার করে উড়িয়ে দেওয়া হয়।

গুরুদাসপুরের মশিন্দা, মাছপাড়া, হাজিরহাট, নয়াবাজার, কাছিকাটা, হাঁসমারী, দড়িহাসমারীসহ প্রায় ১২টি বিলে পরিবেশকর্মীরা অভিযান চালান। এসব অভিযানে সাদা বকগুলো উদ্ধারের সময় শিকারিরা পালিয়ে যান।

পরিবেশকর্মী নাজমুল হাসান, মনির হোসেন, মেহেদী হাসান তানিম বলেন, শীত এলেই পাখি শিকার বাড়িয়ে দেন শিকারিরা। নির্বিচারে পাখি শিকার করার ফলে জলবায়ু পরির্তনে ব্যপক প্রভাব পড়ছে। এ কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তারা নিয়মিত পাখি উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।

তারা বলেন, বৃহস্পতিবার পাখি উদ্ধারের পাশপাশি ২৭টি পাখি শিকার করা ফাঁদ (কিল্লা ঘর) ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২৭টি শিকারি বকও উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে অবমুক্ত করা হয়েছে।

এরপর পরিবেশকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষক, সংস্কৃতিকর্মীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ নিয়ে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে পাখি শিকার বন্ধে উন্মুক্ত আলোচনা সভা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সাংসদ আব্দুল কুদ্দুস।

সভায় সাংবাদিক মাজেম আলী মলিন, শিক্ষক নাসরিন সুলতানা রুমা ও প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু বক্তৃতা করেন। তারা বলেন, পাখি শিকার বন্ধ করা না গেলে পরিবেশে আরো বিরুপ প্রভাব পড়বে। অসাধু পাখি শিকারিদের তৎপরতা রোধে মাইকিং, বিলবোর্ড ফেস্টুন দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, প্রায় প্রতিদিনই ভোর চারটা থেকে প্রত্যন্ত বিলে গিয়ে পাখি শিকার বন্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে। পাখি উদ্ধারের পাশাপাশি শিকারিদের জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে পাখি শিকার বন্ধে গুরুদাসপুরের ছয়টি ইউনিয়নে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি পাখি শিকার বন্ধে সব ধরনের সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে শিক্ষার্থী এবং তাদের পরিবারকে পাখি শিকার এবং সামুক নিধন বন্ধে সচেতন করার মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।