রাত পোহালেই দীপাবলী উৎসব। এর ফলে ভারতের আনন্দের মাত্রা অনেকটা বেড়ে গেল। টিকে রইল সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্নও। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬৬ রানে হারিয়ে সেমির আশা বাঁচিয়ে রেখেছে বিরাট কোহলিরা। ভারতের ২১০ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান সংগ্রহ করে আফগানরা। ৫ নভেম্বর ভারত স্কটল্যান্ড এবং ৮ নভেম্বর নামিবিয়ার বিপক্ষে খেলবে। এ দুই ম্যাচে জিতলেও সেমিফাইনালে যেতে হলে নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে ভারতকে। ৩ ম্যাচের মধ্য দুটি জিতে সেমিফাইনালের পথে এক পা বাড়িয়ে রেখেছে কিইউরা। ৫ নভেম্বর নামিবিয়া এবং ৭ নভেম্বর আফগানিস্তানের মোকাবিলা করবে নিউজিল্যান্ড। আফগানরা যদি কিউইদের হারিয়ে দিতে পারে তাহলে এ গ্রুপে ভারত, নিউজিল্যান্ড ও আফগানিস্তানের পয়েন্ট ৬ হবে। সেক্ষেত্রে রান রেটে যারা এগিয়ে থাকবে তারা সেমিফাইনালে খেলবে। পাকিস্তান টানা চার ম্যাচ জিতে সবার আগে সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত কেেরছে। বৃহস্পতিবার ভারতের কাছে পাত্তাই পায়নি আফগানরা।

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবাই হট ফেভারিটের তালিকায় রেখেছিলেন ভারতকে। কিন্তু পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে আসরে তাদের আশা ক্ষীণ হয়ে এসেছে। পাকিস্তানের সেমিফাইনাল নিশ্চিত, তবে ব্ল্যাক ক্যাপসদের ভুল ভারতের জন্য সেমির দুয়ার খুলে দিতে পারে। এমন সমীকরণে আবুধাবিতে বৃহস্পতিবার টসে হেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। তবে এদিন আর কোনো ভুল নয়। ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে রাহুল-রোহিতের উদ্বোধনী ১৪০ রানের জুটিতে চলতি আসরে সবচেয়ে বড় সংগ্রহ পায় ভারত। নির্ধারিত ওভার শেষে ভারত ২ উইকেট হারিয়ে ২১০ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। পন্ত ১৩ বলে ২৭ এবং পান্ডিয়া ১৩ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। আফগান বোলারদের মধ্যে গুলবাদিন নাইব ও করিম জানাত ১টি করে উইকেট নেন।

এর আগে আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। ব্যাট হাতে নেমেই তাণ্ডব চালাতে থাকেন দুই ওপেনার রোহিত শার্মা ও লোকেশ রাহুল। দুজনের ঝড়ো গতির ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫৩ রান। এরপর আরো মারমুখী হয়ে ওঠেন রাহুল-রোহিত। চার আর ছয়ের মারে দিশেহারা করতে থাকেন আফগান বোলারদের। ১০ ওভার শেষেও সাফল্যের দেখা পান না রশিদ খান, মোহাম্মদ নবীরা। বিনা উইকেটে তখন ভারতের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৮৫ রানে।

বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৩৭ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কার মারে ফিফটি তুলে নেন রোহিত। ফিফটি হাঁকাতে ভুল করেননি রাহুলও। তিনি ৩৫ বলে ৮ চার ১ ছক্কার মারে ফিফটি তুলে নেন। ফলে ১১.৪ ওভারেই ১০২ রানের বড় সংগ্রহ পেয়ে যায় ভারত। প্রথম উইকেটে দুজনের ১৪০ রানের জুটি ভাঙেন আফগান ফাস্ট বোলার করিম জানাত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি পাকিস্তানের বাবর আজম ও রিজওয়ানের। ভারতের বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে এ রেকর্ড গড়েন বাবররা। ৪৭ বলে ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন রোহিত। এর আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ ছিলেন তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল্ডেন ডাক এবং দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ বলে ১৪ রান করেন তিনি।

এরপর ঋসভ পন্তকে নিয়ে রানের চাকা সচলের চেষ্টা চালান রাহুল। কিন্তু দলের খাতায় ৭ রান যোগ করতেই গুলবাদিন নাইবের শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ বাউন্ডারি ও ২ ওভার বাউন্ডারির সাহায্য ৪৮ বলে ৬৯ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ বলে তিন এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ বলে ১৮ রান করেন তিনি। তার প্রস্থানের পর ঝোড়ো গতিতে ব্যাট চালাতে থাকেন পন্ত ও হার্দিক পান্ডিয়া। পন্ত ৩ ছক্কার মার ও ১ চারে ১৩ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। আরেক প্রান্তে পান্ডিয়া ২ ছক্কা ও ৪ চারে ১৩ বলে ৩৫ করে অপরাজিত থাকেন। ভারত শেষ পর্যন্ত ২ উইকেট হারিয়ে ২১০ রান সংগ্রহ করে।