×

খেলা

নিউজিল্যান্ডের ঘাম ঝরিয়ে হারল স্কটল্যান্ড

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০৭:৩৫ পিএম

নিউজিল্যান্ডের ঘাম ঝরিয়ে হারল স্কটল্যান্ড

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বুধবার ৩৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলার পথে বলকে মাঠ ছাড়া করেন নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস

পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও ভারতকে হারিয়ে সেমির পথে একধাপ এগিয়ে নিউজিল্যান্ড। কারণ গ্রুপের বাকি দলকেগুলো শক্তি সামর্থ্যর তুলনায় তাদের চেয়ে পিছিয়ে। তবে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ রানের জয়টা মোটেও সহজ ছিল না কিউইদের। দুবাইয়ের মাঠে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে মার্টিন গাপটিল ঝড়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে ভালো লড়াই চালালেও, সাউদিদের গতিতে পরাস্ত হয়ে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানে থামে স্কটিশদের ইনিংস। স্কটিশ ব্যাটসম্যান মাইকেল লিস্ক শেষ দিকে ঝড়ের গতিতে ব্যাট চালিয়ে  ২০ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। কিউই বোলারদের মধ্য  ট্রেন্ট বোল্ট ২৯ রানের বিনিময়ে তুলে নেন ২ উইকেট। গাপটিল বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে ৯৩ রান করেন।

এর আগে ১৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটে বলে দারূণ জবাব দিতে থাকে স্কটল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা। ওপেনিং জুটিতে জর্জ মুনসে ও কাইল কোয়েতজার নির্ভয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন। কিন্তু দলীয় ২১ রানে তাদের সে জুটি ভেঙে দেন কিউই ফাস্ট বোলার ট্রেন্ট বোল্ট। স্কটিশ অধিনায়ক কোয়েতজার ৪ বাউন্ডারিতে ১১ বলে ১৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে ম্যাথু ক্রস ও মুনসে ধরে খেলার চেষ্টা করেন। বল বুঝে ওঠার পরই তান্ডব চালাতে থাকেন দুই ব্যাটসম্যান। চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করেন স্পিনার ইশ সদি। তার বল লং অনে তুলে মারতে গিয়ে মুনসে টিম সাউদির দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে তালু বন্দি হন। ২ ওভার বাউন্ডারি ও ১ বাউন্ডারির সাহায্য ১৮ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন মুনসে। ৭.৫ ওভারে ৬৬ রান তুলে ২ উইকেট হারালেও, ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল স্কটল্যান্ডের পক্ষেই। এক প্রান্ত আগলে ধরে রানের চাকা সচল রাখেন ক্রস।

তবে ইনিংসের একাদশ ওভারে সাউদির গতিতে পরাস্ত হয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন তিনি। ২৯ বলে ৫ বাউন্ডারির সাহায্য ২৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৭৬ রানে তিন স্কটিশ টপ অর্ডারকে ফিরিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন কেন উইলিয়ামসনরা। দেখেশুনে খেলে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন রিচি বেরিংটন ও ক্যালাম ম্যাকলিওড। দলীয় রান একশোর ঘর পার করতেই ম্যাকলিওডকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান বোল্ড। দলের খাতায় আর ৪ রান যোগ করতেই সোদির শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন বেরিংটন। তিনি ১ বাউন্ডারি ও ১ ওভার বাউন্ডারিতে ১৭ বলে ২০ রান করেন।

এরপর ক্রিস গ্রিভসকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাটিংয়ে ঝড় তোলেন মাইকেল লিস্ক। চার ছয়ে কিউইদের মনে ভীতি ছড়াতে থাকেন তিনি। তিনি মারমুখো ব্যাটিংয়ে কিউই বোলারদের মধ্য ২ উইকেট করে তুলে নেন ইশ সোদি, ট্রেন্ট বোল্ট। এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরুর পর হঠাৎ ছন্দপতন হয় নিউজিল্যান্ডের। এরপর কিউই ব্যাটসম্যান মার্টিন গাপটিল খোলস থেকে বেরিয়ে পড়েন এবং একের পর এক বল পিটিয়ে রানের গতি বাড়ান। সেঞ্চুরি থেকে হাতছোঁয়া দূরে থেকে তার ইনিংস শেষ হয়। প্রথম ওভারে ১৩ আর চতুর্থ ওভারে ১২ রান, উড়ন্ত সূচনা হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের। দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ১ রান দেয়া সাফিয়ান শরীফ পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই বাজিমাত করেন। ড্যারিল মিচেলকে এল-বি-ডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। আম্পায়ার আহসান রাজা তর্জনী তুললে কিউই ওপেনার রিভিউ নেন।

লাভ হয়নি, ১১ বলে ১৩ রানে বিদায় নেন মিচেল। তিন বল কোনোরকমে ঠেকিয়ে চতুর্থ বলে শরীফের বলে উইকেটকিপার ম্যাথু ক্রসের গ্ল্যাভস বন্দি হন কেন উইলিয়ামসন (০)। স্কোর ৩৫ থাকতেই নেই ২ উইকেট। এই ধাক্কাকে খুব একটা পাত্তা দেননি আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিল। পাওয়ার প্লের শেষ অর্থাৎ ষষ্ঠ ওভারে ছয় ও চারে ১৬ রান তোলেন। পাওয়ার প্লেতে সংগ্রহ ২ উইকেটে ৫২। উইলিয়ামসনের পরে নামা ডেভন কনওয়েকে ৩ বল খেলে ১ রানের বেশি করতে দেননি ওয়াট, ক্রসের গ্ল্যাভসে ধরা পড়েন। একটু ধাক্কা লেগেছিল কিউইদের ব্যাটিং লাইনে, পরের বাউন্ডারি আসে ২৪ বল পর। ৫.৪ ওভারে প্রথম পঞ্চাশ করা নিউজিল্যান্ড ১০০ রানের ঘরে পৌঁছায় ১২.৪ ওভারে। তার দুই বল আগে টি-টোয়েন্টিতে নিজের ১৫০তম ছক্কা মেরে ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন গাপটিল।

তারপরও দারুণ সব শটে স্কটল্যান্ডকে হতাশ করতে থাকেন গাপটিল। গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে একশর বেশি জুটি গড়ার পথে আরো তিনটি ছক্কা মারেন তিনি। একটা সময় নিউজিল্যান্ডের স্কোর ২০০ ছাড়িয়ে যাওয়ার আভাস দিচ্ছিল, সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে গাপটিলের তৃতীয় সেঞ্চুরিও। কিন্তু ১৯তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন ব্র্যাড হুইল। পর পর দুই বলে ফিলিপস ও গাপটিলকে ফেরান।

গ্রিভসকে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন ফিলিপস, ৩৭ বলে করেন ৩৩ রান। তার প্রস্থানে ভাঙে ১০৫ রানের জুটি। পরের বলে লং অনে উড়িয়ে মেরেছিলেন গাপটিল, ম্যাকলিওড তা ধরে ফেলেন সীমানা পার হওয়ার আগেই। ৫৬ বলে ৬ চার ও ৭ ছয়ে ৯৩ রানের মারকুটে ইনিংস থামে আক্ষেপ নিয়ে। হুইলকে হ্যাট্রিককের আক্ষেপে পোড়ান জেমস নিশাম। নিশাম ওই ওভারে একটি চার মারেন। শেষ ওভারে শরীফ ৯ রানের বেশি দেননি।  স্কটল্যান্ডের পক্ষে শরীফ ও হুইল সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App