×

জাতীয়

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা বেড়ে গেছে, আমরা উদ্বিগ্ন: সিইসি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২১, ০৯:২০ পিএম

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতা বেড়ে যাবার জন্য কমিশন ‘বিব্রত ও উদ্বিগ্ন’ বলে মন্তব্য  করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। বিষয়টি স্বীকার করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ইতিবাচক নয় বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।

মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনাররা। রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে সিইসি ছাড়াও তিন জন নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা অংশ নেন। তবে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার উপস্থিত ছিলেন না। আগামী বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও বৈঠক করবে ইসি।

বৈঠকের পর সিইসি বলেন, নির্বাচনি সহিংসতা বেড়ে যাচ্ছে ঠিকই। আমরাও তা প্রত্যক্ষ করছি। মাঠ পর্যায়ে কী ধরনের নির্দেশনা দেওয়া দরকার, সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করছি। আগামী বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

নির্বাচনি সহিংসতা বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক ঘটনা ঘটেছে, তাতে বিব্রত ও উদ্বিগ্নতা কাজ করছে। সেগুলো কীভাবে নিরসন করা যায়, তা নিয়ে কমিশনারদের সঙ্গে আরও বিস্তারিত আলোচনা করে মাঠ পর্যায়ের যারা আছেন, তাদের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

নির্বাচনি পরিস্থিতি ইসির নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমাদের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ আছে। নির্বাচনে যারা অংশ নেন, যেমন- রাজনৈতিক দল, ভোটার ও প্রার্থীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নির্বাচন সুষ্ঠু হয়। সুতরাং, আমরা এখানে যতই যা করি না কেন, মাঠ পর্যায়ে যদি সহনশীলতা না থাকে, তাহলে এ নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

সিইসি বলেন, নির্বাচন প্রতিযোগিতামূলক হবে, কিন্তু প্রতিহিংসামূলক হবে না- এটা আহ্বান করি। মাঠ পর্যায়ে নির্বাচনে সহিংসতা যে বেড়েছে, তা সবার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার।

নির্বাচনি সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক দলের ভূমিকা আছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিন্তু দুঃখজনকভাবে সত্য যে আমরা খুব পজিটিভ দেখছি না। এসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় ভূমিকা থাকা দরকার। নির্বাচনের বিষয়টি শুধু নির্বাচন কমিশনের নয়, এটা সবারই। আমরা শুধু নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় থাকি। তারা (রাজনৈতিক দল) আরও একটু প্রো-অ্যাকটিভ হলে সহিংসতা কমবে।

আইন প্রয়োগে শিথিলতায় সহিংসতা বেড়েছে কিনা, প্রশ্নের জবাবে নূরুল হুদা বলেন, আমাদের কাছে যখনই যেসব অভিযোগ আসছে, সেগুলোর বিষয়ে পদক্ষেপ নেই। অন দ্য স্পট যত ফৌজদারি ঘটনা ঘটে, সেগুলোর বিষয়ে প্রস্তুতি থাকে না। হঠাৎ ক্রিমিনাল অফেন্স ঘটে যায়। তখনই আমরা ব্যবস্থা নেই। এসব ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত হয় না, হঠাৎ ঘটে যায়। যে কারণে প্রশাসন আগে থেকে তা জানতে পারে না। ফৌজদারি যেসব ঘটনা ঘটে, সেগুলো সেই ফৌজদারি আইনে নির্ধারিত হবে। এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে।

শরীয়তপুরের চিতলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে জাল সইয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে ইসির পদক্ষেপের বিষয়ে সিইসি বলেন, এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। একজন যুগ্ম-সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি সেখানে পাঠিয়েছি। রিপোর্ট পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে সিইসির পাশে থাকা নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের সব দিক নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। তাদেরও জবাবদিহির অধীনে আনবো। রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও ভোটারদের বলতে চাই-দয়া করে আপনারা যেন একটু শান্ত থাকার চেষ্টা করেন, যেন সহিংসতা না হয়। শান্ত থাকলে এ ধরনের ঘটনা সীমিত হয়ে আসবে। এই কমিশনার বলেন, আইনে যা আছে সেই অনুযায়ী কাজ করছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App