×

সম্পাদকীয়

স্বাস্থ্যের ১৭ ফাইল চুরি : দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২১, ১২:৩৬ এএম

স্বাস্থ্যের ১৭ ফাইল চুরি : দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হোক

খবরে প্রকাশ, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৭টি নথি গায়েব হয়ে গেছে। খবরটি গতকাল অধিকাংশ পত্রিকা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। ফাইল চুরির ঘটনাটি হালকা বিষয় নয়। জানা গেছে, চুরির ফাইলের মধ্যে যেগুলো রয়েছে সেগুলোর সিংহভাগই স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের অধীন বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও বিভাগের কেনাকাটা সম্পর্কিত। বিষয়টি পরিষ্কার। দেশের অন্যতম সুরক্ষিত কার্যালয় থেকে নথি গায়েব হয় কীভাবে? কৌশলে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতি আড়াল করতে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুর্নীতি-অনিয়ম যে কোনো খাতেই ক্ষতিকর; কিন্তু স্বাস্থ্যের মতো মৌলিক অধিকারের ইস্যুর ক্ষেত্রে এটি অনেক বেশি স্পর্শকাতর। করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র আমাদের দেখতে হয়েছে। সরকারি ওষুধ থেকে শুরু করে জীবাণুরোধক মাস্ক সরবরাহে নানা ধরনের অনিয়মের ঘটনায় অপরাধীরা গ্রেপ্তার হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন কার্যালয়ে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে দুর্নীতির একটি শক্তিশালী দুষ্ট বলয় তৈরি হয়েছে। তারা সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ওষুধ, সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে সিন্ডিকেট গঠন করে স্বাস্থ্য খাতে জনসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি বাজেটের অর্থ আত্মসাৎ করছে। ফাইল চুরির ঘটনায় এ চক্র যুক্ত কিনা খতিয়ে দেখা হোক। ইতোমধ্যে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবজাল হোসেন, সাবরিনা, আরিফুর রহমানের মতো কিছু চুনোপুঁটি ধরা পড়ে কারাগারে গেলেও মাফিয়ারা সব সময়ই থাকেন বহালতবিয়তে। আবজাল যদি কয়েকশ কোটি টাকার মালিক হন, তাহলে তার আশ্রয়দাতা মাফিয়ারা কী পরিমাণ অর্থ লুট করেছেন- এমন প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির বরপুত্র মোতাজজেরুল ইসলাম মিঠু এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবজালের মতো আরো ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু আবজাল ছাড়া আর কারোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের মৌলিক অধিকার। কাজেই এ খাতটির অনিয়ম-দুর্নীতি রোধ না করলে মৌলিক অধিকারের প্রতি অবহেলার মতো প্রশ্নও সামনে আসবে। তাছাড়া এভাবে অনিয়ম-দুর্নীতি চলতে থাকলে আমাদের স্বাস্থ্য খাতের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখা দেবে। প্রতি বছর স্বাস্থ্য খাতে সরকারের পক্ষ থেকে বড় অঙ্কের বরাদ্দ দেয়া হলেও তার সিংহভাগ লুটেরা চক্রের পকেটে যায় এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট। দুর্নীতির নিকৃষ্ট জীবরা যে স্বাস্থ্যব্যবস্থা পঙ্গু করে ফেলেছে সে সত্যটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। স্বাস্থ্য খাতে অনিয়মের যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখে দায়ীদের কোনো ছাড় নয়। গুরুত্বপূর্ণ চুরি হওয়া ফাইলগুলো উদ্ধারে সরকারকে কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে। এবং এ ঘটনার সঙ্গে দায়ীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App