×

খেলা

বিবর্ণ ভারতকে হারিয়ে সেমির স্বপ্ন দেখছে কিউইরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১১:০৫ পিএম

বিবর্ণ ভারতকে হারিয়ে সেমির স্বপ্ন দেখছে কিউইরা

ভারতের বিপক্ষে রবিবার ২০ বলে ১৭ রান করেন মার্টিন গাপটিল। ছবি : ভোরের কাগজ

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রবিবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ১১০ রান করে ভারত। জবাবে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৩৩ বল হাতে রেখেই এই রান টপকে যায় নিউজিল্যান্ড। ৮ উইকেটে ম্যাচ জিতে সেমির স্বপ্ন বাঁচয়ে রাখল কিউইরা। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৯ রান করেছেন ডারইয়াল মিচেল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩২ রান করেছেন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ভারতের হয়ে দুটি উইকেটই তুলে নেন জাসপ্রিত বুমরাহ।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে তিনটি ম্যাচে খেলেছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ২০০৭ সালে প্রথম ও ২০১৬ সালে দ্বিতীয়বার খেলে তারা। আগের দুইবার কিউইদের বিপক্ষে হেরেছিল ভারত। এবারো এই একই ভাগ্য বরণ করতে হলো ম্যান ইন ব্লুদের। ভারত পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারে। এখন দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরে তাদের সেমিতে যাওয়ার আশা একটু হলেও ধূসর হয়ে গেল। ভারত তাদের পরবর্তী খেলতে নামবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। এখন সেমির আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে এ ম্যাচটিতে তাদের জয় পেতেই হবে। এ ছাড়া আর কোন উপায় নেই। অন্যদিকে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় পেয়ে নিউজিল্যান্ড সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে এক ধাপ এগিয়ে গেল। বর্তমানে গ্রুপ-২ তিন ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয় পেয়ে শীর্ষস্থানে আছে পাকিস্তান। তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জয় পেয়ে দ্বিতীয়স্থানে আছে আফগানিস্তান। আর দুই পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়স্থানে অবস্থান করছে নিউজিল্যান্ড।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হওয়া এ ম্যাচটিতে টসে জেতেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তিনি টসে জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। আর ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই কিউই বোলারদের তোপের মুখে পরে রবি শাস্ত্রীর শিষ্যরা।

ম্যাচটির প্রথম দশ ওভারে মাত্র ৪৮ রান তোলে ভারত। টি-টোয়েন্টিতে এমন মেজাজে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাট করতে দেখা যায়নি ভারতকে। কিন্তু বিশ্বকাপের বাঁচা-মরার লড়াইয়ে তারা এমন চাপে পরে যায় যে ব্যাটই চালাতে পারছিল না। ইনিংস শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে কোন মতে ১১০ রান করতে সমর্থ হয় ম্যান ইন ব্লুরা। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন রবিন্দ্র জাজেদা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন হার্দিক পান্ডিয়া। অপরদিকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন ট্রেন্ট বোল্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দুটি উইকেট তুলে নেন ইশ সোদি। তিনি দুই বিগ ফিশ রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিকে ফেরান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের সর্বনিম্ন রান হলো ৭৯। নিজ ঘরের মাঠে ২০১৬ বিশ্বকাপে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই মাত্র ৭৯ রানে অলআউট হয়েছিল তারা। বিশ্বকাপে ভারত সেবারই প্রথম ও শেষবারের মতো ১০০ রানের নিচে আউট হয়েছিল। রবিবার এই কিউইদের বিপক্ষে ফের ১০০ এর নিচে রান করার শঙ্কায় পরে তারা। কিন্তু কোনমতে এই লজ্জার হাত থেকে বাঁচে বিরাট কোহলির দল।

ম্যাচটিতে রবিবার ওপেনিংয়ে পরিবর্তন আনা হয় ভারত দলে। লুকেশ রাহুল ও রোহিত শর্মার বদলে ওপেন করতে আসেন ইষান কিষাণ। তিনি পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটিতে ছিলেন না। কিন্তু দলে সুযোগ পেয়ে তিনি এটি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন পুরোপুরি। দলীয় ১১ রানের সময় মাত্র ৪ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে ক্যাচ আউট হন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন রোহিত। কিন্তু এসেই সাজঘরে ফিরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল তার। তবে তার কপাল ভালো তার উঠিয়ে দেয়া ক্যাচ ছেড়ে দেন অ্যাডাম মিলনে। শুরুর ধাক্কা সামলে যখন ভারত একটু এগিয়ে যাওয়ার চেস্টা করছিল ঠিক তখনই আউট হন লুকেশ রাহুল। তিনি দলীয় ৩৫ রানের সময় ১৮ রান করে বাউন্ডারির কাছে গিয়ে টিম সাউদির বলে ক্যাচ আউট হন। এরপর দলের রানের খাতায় আর মাত্র পাঁচ রান যোগ হতে জীবন পাওয়া রোহিত শর্মা ইশ সোদির বলের সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে মাত্র ১৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন। কিন্তু তখন ক্রিজে ছিলেন দলের সবচেয়ে আস্থার প্রতীক অধিনায়ক বিরাট কোহলি। পাকিস্তানের বিপক্ষে দল হারলেও তিনিই সবচেয়ে বেশি রান করেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কোহলি পুরোপুরি ব্যর্থ হন। দলীয় ৪৮ রানের সময় মাত্র ৯ রান করে কোহলিও ইশ সোদির বলে ক্যাচ আউট হন। দলের রানের খাতায় পঞ্চাশ রান যোগ হওয়ার আগেই প্রথম সারির সব ব্যাটসম্যান বিদায় নেয়ায় তখন ভারত চরম চাপে পরে যায়। ফলে ওই সময় ক্রিজে থাকা ঋসভ পন্ত ও হার্দিক পান্ডিয়া আর খুব বেশি হাত খুলে মারতে পারছিলেন না। তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের বোলাররাও দুর্দান্ত বল করছিলেন। সঙ্গে ফিল্ডিংও সমান তালে ভালো করছিল। আর তাই ভারতের রান তোলার গড় খুবই কম ছিল। একটা সময় বল ফুরিয়ে যেতে থাকায় মারার চেস্টা করেন পন্ত। কিন্তু দলীয় ৭০ রানের সময় ১২ রান করে অ্যাডাম মিলনের বলে বোল্ড আউট হয়ে যান তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন জাদেজা। অন্যদিন তিনি ভালো করলেও এদিন আর ভালো করতে পারেননি জাদেজা। তাছাড়া হার্ডহিটার হিসেবে পরিচিত হার্দিক পান্ডিয়াও শট করতে পারছিলেন না। তিনি বলের সমান সমান রান তুলতে থাকেন। কিন্তু বেশিক্ষণ আর টিকেননি। ২৪ বল খেলে ২৩ রান করে বোল্টের বলে আউট হন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App