×

খেলা

আফগানিস্তানকে হারিয়ে সবার আগে সেমিতে পাকিস্তান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ এএম

আফগানিস্তানকে হারিয়ে সবার আগে সেমিতে পাকিস্তান

পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমকে সাজঘরে ফিরিয়ে রশিদ লতিফের উল্লাস। ছবি : ভোরের কাগজ।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে শুক্রবার আফগানিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তান। এর মাধ্যমে তিনটি ম্যাচের সবগুলোতে জয় তুলে নিয়ে সবার আগে সেমিতে জায়গা করে নিল পাকিস্তান। নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচে পাকিস্তান যথাক্রমে খেলবে নামিবিয়া ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। যদিও অফিসিয়ালভাবে এখনো সেমিতে পাকিস্তানের জায়গা নিশ্চিত হয়নি। তবে শেষ দুটি ম্যাচের মধ্যে একটিতে জয় পেলেই হবে। আর এটি পাকিস্তান খুব সহজেই করবে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

ম্যাচটিতে প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান ৬ উইকেট হাডিরয়ে ১৪৭ রান করে। জবাবে পাকিস্তান এক ওভার হাতে রেখে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জিতে নেয়।

ম্যাচটিতে পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫১ রান করেন অধিনায়ক বাবর আজম। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩০ রান আসে ফখর জামানের ব্যাট থেকে। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৫ রান করে আসিফ আলী। ম্যাচটিতে শেষ দুই ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ২৪ রান। আর এ রান ১৮তম ওভারে চারটি ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেন আসিফ।

এ ম্যাচে মোহাম্মদ হাফিজকে ক্যাচ আউট করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে চতুর্থ বোলার হিসেবে ১০০ উইকেট পূর্ণ করেন রশিদ খান। এই বিশ্বকাপেই পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি উইকে তুলে নিয়ে তৃতীয় বোলার হিসেবে উইকেটের সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন নিউজিল্যান্ডের টিম সাউদি। তাছাড়া তিনি পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমকেও আউট করেন।

এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামে আফগানিস্তান। ওই ম্যাচটিতে স্কটিশ বোলারদের ধবল ধোলাই করে ১৯০ রান তোলে আফগানরা। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষেও এমন কিছু হবে বলে আশা করেছিল সবাই। আজ শুক্রবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তাদের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বি পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামে আফগানিস্তান। তবে স্কটল্যান্ডের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে এমন কিছু করতে পারেনি আফগান ব্যাটসম্যানরা। বলতে গেলে পাকিস্তানের বোলারদের বিপক্ষে ধরাশয়ী হয়েছে তারা। প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান ২০ ওভার খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৭ রান করতে সমর্থ হয়। জিততে হলে এ ম্যাচে পাকিস্তানকে ১৪৮ রান করতে হবে। যদিও প্রথম দিকে তাদের অবস্থাটা খারাপ ছিল আরো। কিন্তু শেষ দিকে অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী ও সাবেক অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব মিলে একটি ছোট খাটো ঝড় তোলেন। তারা যদি শেষ দিকে দ্রুত গতিতে রান না তুলতেন তাহলে আরো কম রানেই থামতে হতো তাদের। পরবর্তীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইট করার রান দাঁড় করতে সমর্থ হয় তারা। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে মোহাম্মদ নবী ৩৫ ও গুলবাদিন নাইবও নবীর সমান ৩৫ রান করে অপরাজিত থাকেন।

ম্যাচটিতে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। তিনি আগেই জানিয়েছিলেন তাদের মূল লক্ষ্য হলো টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় সংগ্রহ করা। আর সেই ভাবনা থেকেই ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

তবে পাকিস্তানের বোলররা শুরু থেকেই চেপে ধরেন আফগানিস্তানকে। যার উপর ভরসা করে আফগানিস্তান বড় সংগ্রহের প্রত্যাশা করে, সেই ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই পুরোপুরি ব্যর্থ হন। তিনি ৫ বল খেলে কোন রান না করেই ইমাদ ওয়াসিমের বলে ক্যাচ আউট হন। জাজাই জোরে শট করবেন এ চিন্তা থেকে ওয়াসিম অফ কাটার স্লো বল মারেন। আর এতেই ধরা পরেন জাজাই। এরপর ক্রিজে আসেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। অপর ওপেনার শেহজাদকে নিয়ে তিনি ইনিংস বড় করবেন এমন চিন্তা ছিল। কিন্তু শেহজাদও টিকতে পারলেন বেশিক্ষণ। দলীয় ১৩ রানের সময় তিনি শাহিন আফ্রিদির বলে বাবর আজমের বলে ক্যাচ আউট হন। আর দ্রুত দুটি উইকেট হারিয়ে ভালোই চাপে পরে যায় আফগানিস্তান। এরপর ব্যাট করতে নামা সাবেক অধিনায়ক আজগর আফগান গুরবাজকে নিয়ে চাপ সামাল দেয়ার চেস্টা করেন। এতে কিছুটা সফলও হন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ১০ রান ও দলীয় ৩৩ রানের সময় আজগর আফগান হারিস রউফের বলে তার হাতেই ক্যাচ হিসেবে ধরা পরেন। এরপর ব্যাটিংয়ে আসেন করিম জানাত। তারা দুজন মিলে পরবর্তীতে ধরে খেলার চেস্টা করেন। কিন্তু এতে লাভ হয়নি। কারণ দলীয় ৩৯ রানের সময় রহমানউল্লাহ গুরবাজ আউট হন হাসান আলীর বলে। তিনি আউট হওয়ার আগে ৭ বল খেলে ১০ রান করেন। ওই সময় ক্রিজে থাকা গুলবাদিন নাইব কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে তিনি ২১ বল খেলে ২২ রান করে শাদাব খানের বলে আউট হন। এরপরই ক্রিজে আসেন মোহাম্মদ নবী ও গুলবাদিন নাইব।

পাকিস্তানের বোলারদের চাপে পরে তার মন্থর গতিতে ব্যাট করতে থাকেন। তবে তাদের পরিকল্পনায় হয়তো ছিল ক্রিজে কতক্ষণ টিকে থেকে শেষ মূহুর্তে গিয়ে ঝড় তুলবেন। আর যেই ভাবা সেই কাজটিই করেন এ দুজন। ম্যাচের ১৭ ওভার থেকে ঝড় তোলেন এ দুজন। গুলবাদিন নাইব একটা সময়ে রানের চেয়ে বল বেশি খেললেও ১৭তম ওভার করতে আসা হাসান আলীর বলে ২১ রান তুলে নেন। এরপরের ওভার করতে আসেন রউফ। তার ওভারেও ব্যাপকভাবে চার্জ করেন নবী ও গুলবাদিন। এ ওভারে তারা দলকে এনে দেন ১৫ রান। তবে পাকিস্তানের হয়ে শেষ ওভারটি করতে আসেন শাহিন আফ্রিদি। আগের দুটি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা শাহীন শেষ ওভারটিতে ভালো করেন। তিনি শেষ ওভারে মাত্র ৭ রান দেন। তবুও শেষ তিন ওভারেই যা করার করে নেন নবী ও গুলবাদিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App