×

খেলা

ভুল শোধরে ইংলিশ বধে প্রস্তুত টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩২ পিএম

ভুল শোধরে ইংলিশ বধে প্রস্তুত টাইগাররা

ফাইল ছবি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে বাংলাদেশের যাত্রা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে। অন্যদিকে ইংল্যান্ড শুরু করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে মাটিতে মিশিয়ে। তবে বিশ্বকাপে ইংলিশদের সঙ্গে টাইগাররা বরাবরই গর্জে ওঠেন। টি-টোয়েন্টিতে এখনো দেখা হয়নি দুই দলের। আর ওয়ানডে বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানে দুই দলের জয়ের সম্ভাবনা সমানে সমান। যদিও দুই দলের শেষ ম্যাচের পারফরম্যান্সের হিসেবে বেশ এগিয়ে ইংল্যান্ড। তবে বাংলাদেশ বোলিং কোচও টাইগারদের জয়ের ছক কষে রেখেছেন। আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে উড়িয়ে দারুণ সূচনা করেছে ইংল্যান্ড। এবার সেই ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে সুপার টুয়েলভ শুরু করা বাংলাদেশ। ইংলিশদের বিপক্ষে কঠিন লড়াই হবে এটা অনুধাবন করছেন বাংলাদেশ বোলিং কোচ ওটিস গিবসন। তবে তিনি এটাও জানিয়েছেন তারা সুযোগও কিন্তু দেবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন কথা বলেন গিবসন।

সংবাদ সম্মেলনে গিবসন বলেন, ‘জানি ওরা আমাদের কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি দাঁড় করাবে, পাশাপাশি আমাদের সুযোগও দেবে। যেমন উইন্ডিজের সঙ্গে ৫৫ রান তাড়া করতেই ওদের চার উইকেট গিয়েছিল। তো এই জিনিসগুলোকে আমরা ইতিবাচকভাবে নিতে পারি। আমাদের নিজেদের সেরা খেলা খেলতে হবে এবং মনে রাখতে হবে যে ওরা আমাদের সুযোগ দেবে।’

এর আগে ইংলিশদের বিপক্ষে উইন্ডিজরা মাত্র ১৪.২ ওভারে অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৫৫ রানে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যা তৃতীয় সর্বনিম্ন। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৮.২ বলে ইংল্যান্ড লক্ষ্যে পৌঁছে যায়, তবে তারা হারিয়ে ফেলে ৪টি উইকেট। ২১ থেকে ৩৯ রানের ব্যবধানে এই চারটি উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এখানেই সুযোগ দেখছেন গিবসন। বিশ্বকাপ তো দূরের কথা, ইংল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ এর আগে কখনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচই খেলেনি। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ইংলিশদের সঙ্গে টেক্কা দিয়েছে খুব ভালোভাবেই। এখন পর্যন্ত চার বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়ে ২টিতে জিতেছে, আর হেরেছে ২টিতে। এর মধ্যে ২০০৭ সালে প্রথম দেখায় বাংলাদেশ হারে ৪ উইকেটের ব্যবধানে। এরপর টানা দুই আসরে জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

২০১১ সালে ঘরের মাটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে ২ উইকেটের জয় পায় বাংলাদেশ। এরপর ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ইংলিশদের ১৫ রানে হারায় টাইগাররা। তবে সর্বশেষ ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে তাদের বিপক্ষে ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। অবশ্য হারবেই না বা কেন, ইংলিশদের ওই দলই ২০১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে নেয়। টি-টোয়েন্টিতে র‌্যাঙ্কিংয়ের হিসাবে সবার উপরে অবস্থান করছে ইংল্যান্ড। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে বাংলাদেশ দুই ধাপ নেমে এখন অষ্টম স্থানে। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে কোনো দলকেই এগিয়ে রাখা যায় না। স্বল্প বলের খেলায় একজন ব্যাটসম্যানই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয়ার যোগ্যতাও রাখেন। যার কারণে র‌্যাঙ্কিং বা পরিসংখ্যান এখানে খাটে না। দিনশেষে যে দলের পারফরম্যান্স ভালো হবে সে দলই হাসবে শেষ হাসি।

এদিকে যে কোনো দলকে হারাতে পারে মনে করেন টাইগারদের বোলিং কাচ গিবসন। মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিশ্বাস করি আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি। বাছাইপর্বটা একটু স্নায়ুক্ষয়ী ছিল। সেখানে পরিস্থিতি ভিন্ন। কিন্তু এখন আমরা বড় দলের মধ্যে এসেছি এবং আমাদের সবার পরিমাপ একরকম। তাই আমরা এখানে সংখ্যা বাড়াতে আসিনি অবশ্যই জিততে এসেছি।’

বাংলাদেশ রাউন্ড ওয়ানে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু করেছিল। এরপর ওমান-পাপুয়া নিউগিনিকে হারিয়ে নিশ্চিত করে সুপার টুয়েলভ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে শুরু হয় বিশ্বকাপের মূল লড়াই। এবার সামনে ইংল্যান্ড। তাদের বিপক্ষে লড়াইটা খুব সহজ হবে না। গিবসন তার ব্যাখ্যায় বলেন, ‘ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ খুব শক্ত। ওদের চ্যালেঞ্জ জানাতে হলে আমাদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে।’

এদিকে ইংল্যান্ড দলে বেন স্টোকস, স্যাম কারেন নেই। চোটের কারণে জফরা আর্চারও এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলছেন না। আরেক ফাস্ট বোলার মার্ক উড দলে থাকলেও চোটের কারণে বাংলাদেশ দলের বিপক্ষে ম্যাচে খেলবেন না আজকের ম্যাচে। তবু দৃশ্যত ইংল্যান্ড দলে কোনো দুর্বলতা খুঁজে পাওয়া মুশকিল। স্টোকস-কারেনদের অভাব বুঝতে দিচ্ছেন না ক্রিস ওকস। আর্চার-উডের শূন্যতাও টের পেতে দিচ্ছেন না বাঁ-হাতি ফাস্ট বোলার টাইমাল মিলস। আর বাঘা বাঘা ইংলিশ ব্যাটসম্যানের নাম বলে তো শেষ করা যাবে না। তবু মরগানের ইংল্যান্ড দলকে ভয় পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে দলের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন এ কথাই এমনটাই জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বকাপের কোনো দলকে ভয় পাই না। ইংল্যান্ড খুবই শক্তিশালী ব্যাটিং দল। ওরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে। আমরা এখানে এসেছি প্রতিযোগিতা করতে, জিততে। এটাই করার চেষ্টা করব।’ বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কোচের দায়িত্ব পালনের আগে ইংল্যান্ড দলের কোচ ছিলেন গিবসন। মরগান বাহিনীর মানসিকতা ও খেলার ধরন কেমন হবে, সেটি ভালোই জানা এই জ্যামাইকানের। কাল বাংলাদেশ দলের টিম মিটিংয়ে ইংল্যান্ড নিয়ে তার ভাবনার কথা জানিয়েছেন ক্রিকেটারদের।

সংবাদ সম্মেলনেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের কৌশল কেমন হতে পারে, সেটির আভাস দিয়ে গিবসন বলেন, ‘ইংল্যান্ড ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলবে। আমি আমাদের বোলার ও ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। ওদের বোলাররা সব সময় উইকেট নেয়ার চেষ্টা করবে। ব্যাটসম্যানরাও সব সময় রান করে বোলারদের চাপে রাখতে চাইবে। ওদের বিপক্ষে অস্থির না হওয়ার বার্তা দিয়েছি ছেলেদের। একটা ভালো বল করেও হয়তো মার খাবে। কিন্তু তখন শান্ত থাকতে হবে। এভাবেই তারা খেলে, এটাই তাদের মানসিকতা। সেই সঙ্গে আমরা উইকেট নেয়ার সুযোগও পাব। আমাদের শান্ত থাকতে হবে। দক্ষতা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনোযোগ দিতে হবে। বোলারদের শান্ত থাকতে হবে যতটা সম্ভব।’

তবে বাংলাদেশ দলের ইংল্যান্ড বধের পরিকল্পনা যে অনেকটাই কন্ডিশননির্ভর, সেটিও বোঝা গেল গিবসনের কথায়। বিশাল বাউন্ডারির আবুধাবির উইকেট যদি স্পিন সহায়ক হয়, সে ক্ষেত্রে ইংলিশদের চেপে ধরার সুযোগ থাকবে বাংলাদেশ দলের। কন্ডিশন নিজের পরিকল্পনায় টাইগার বোলিং কোচ বলেন, ‘যদি কন্ডিশন আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে সাহায্য না করে, তখন ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওরা ৫৫ রান তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়েছে। মঈন রানআউট হয়েছিল। কিন্তু বাকি ব্যাটসম্যানরা আগ্রাসী খেলাটা খেলতে গিয়ে আউট হয়েছিল। আমরা যদি আমাদের দিনে ভালো খেলি, তাহলে ওরাই আমাদের জেতার বা ম্যাচে কিছু একটা করার সুযোগ করে দেবে। আমরা যদি ওই সুযোগগুলো নিই, তাহলে ফল আমাদের পক্ষে আসবে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App