প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি ও অনিয়মে সংসদীয় কমিটির ক্ষোভ
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩৭ পিএম
সড়ক ও জনপদ বিভাগের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি কম, বার বার সময় বাড়ানোসহ উন্নয়ন প্রকল্পের অনিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। এসব অনিয়ম নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়কে প্রশ্নবানে জর্জরিত করেছে কমিটি। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মন্ত্রণালয় কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। পরে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটির সভাপতি মো. আব্দুস শহীদের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটি সদস্য চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন, এ বি তাজুল ইসলাম, আহসান আদেলুর রহমান, ওয়াসিকা আয়শা খান এবং খাদিজাতুল আনোয়ার অংশ নেন।
বৈঠকে সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের অধীন ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও গোপালগঞ্জ জোন এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের চলমান প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বেশিরভাগ সময় সড়ক বিভাগের চলমান প্রকল্প কেন সময় মতো বাস্তবায়ন হয় না, বার বার কেন সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়, বাস্তবে হওয়ার কথা না থাকলেও প্রকল্পের আর্থিক ও ভৌত অগ্রগতি কম, কেন দুইই সমান হয়েছে, তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয় কমিটির পক্ষ থেকে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের মত ও যুক্তি দিলে কমিটি তাতে সন্তুষ্ট হয়নি। এ সময় কয়েকটি প্রকল্পে ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। অবশ্য কমিটি ব্যয় না বাড়িয়ে মেয়াদ বাড়ানোকেও এক ধরনের অনিয়ম বলে উল্লেখ করে। এ বিষয়ে কমিটি বলে, প্রকল্প সময় মতো শেষ না হওয়ায় জনগণ তো সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে। তাছাড়া ওই প্রকল্প শেষ না হওয়ার কারণে মানুষকে দুর্ভোগও পোহাতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি আব্দুস শহীদ বলেন, আমরা সড়কের চারটি জোন নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। ওই কাজ কবে শেষ হবে, সেটাও তারা জানাতে পারেনি। তিনি বলেন, আমাদের কাছে যে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে দেখা গেছে- প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি সমান। কিন্তু কোনোভাবেই সমান হওয়ার কথা নয়। এক শতাংশ হলেও তো পার্থক্য থাকবে।
এসব বিষয়ে তারা যুক্তি দিতে পারেনি। আমাদের অনেক প্রশ্নের তারা সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। কোথায় কী অনিয়ম বা সমস্যা হয়, তার বিষয়ে আমরা এক মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছি। আমরা তাদের বলেছি, আপনারা মেধা কাজে লাগিয়ে তামাশা করতেছেন। দ্রুত কাজ শেষ করার পরামর্শ দিয়েছি।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে সড়কের ঢাকা জোনের অসমাপ্ত ৯টি প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির কারণ ও ব্যাখ্যাসহ প্রতিবেদন কমিটির কাছে পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং পাচ্চর-ভাঙ্গা প্রকল্পে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠানোর সুপারিশ করা হয়।