×

মুক্তচিন্তা

পায়রায় বদলে যাবে জনপদ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ০৬:২৪ এএম

পায়রায় বদলে যাবে জনপদ
এক্সট্রাডোজড কেবল স্টেইড প্রযুক্তিতে দেশের দ্বিতীয় পায়রা সেতু। মেগা প্রকল্পের অন্তর্গত পটুয়াখালীর পায়রা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতু ইতোমধ্যে যুক্ত করেছে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা। বড়সড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে অর্থনীতিতে। এটি চালু হওয়ায় দেশের যে কোনো স্থান থেকে সর্বদক্ষিণে উপকূলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ হয়ে গেছে। সড়ক পথের যাত্রী ও যানবাহন চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর অপেক্ষা করতে হবে না। ভোগান্তি কমবে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের। সামগ্রিক প্রভাব ফেলবে জিডিপিতে। সেতু উদ্বোধন হওয়ায় পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার কয়েকটি উপজেলা এবং সাগরকন্যা কুয়াকাটার সঙ্গে বরিশাল তথা সমগ্র বাংলাদেশের সঙ্গে তৈরি হলো সরাসরি সড়ক যোগাযোগ। আগের চেয়ে ২-৩ ঘণ্টা কম সময়ের ভেতরেই সৈকতে পৌঁছতে পারবেন পর্যটকরা। ব্যবসায়িক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে আসবে বড় রকমের পরিবর্তন। নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ব্যবস্থায় বিভাগীয় শহরের সঙ্গে নির্বিঘেœ যাতায়াত করতে পারবে সাধারণ জনগণ। চিকিৎসাসেবা পেতেও ঝামেলা-ঝক্কির মুক্তি মিলবে অবহেলিত দক্ষিণ জনপদের। সেতুর পাশাপাশি লেবুখালী এলাকায় তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। পাশেই চলছে শেখ হাসিনা সেনানিবাসের কাজ। দিনে দিনে সম্প্রসারণ ঘটছে নানান ধরনের ব্যবসায়। রাস্তার পাশে তৈরি হচ্ছে হোটেল, তেলের পাম্প। জমির মালিকরাও তাদের জমি ঘিরে অর্থনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে জোরেশোরে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। বহুল আকাক্সিক্ষত পায়রা বন্দর পুরোদমে চালু হওয়া নির্ভর ছিল পায়রা সেতুর ওপর। সেতুটি চালু হওয়ায় অত্রাঞ্চলে দ্রুত শিল্পের প্রসার ঘটবে। আগের তুলনায় সময় কম লাগায় কমে আসবে খরচও। কমবে ঢাকামুখী পণ্যের মূল্য। পাওয়া যাবে খুব সহজেই। তৈরি হবে টাইম ভ্যালু মানি। চাঞ্চল্যময় হয়ে উঠবে দক্ষিণের অর্থনীতি। উন্নয়নে রূপান্তর ঘটবে দুর্গম উপকূলবাসীর জীবনযাত্রার মান। ধান, তরমুজ, বাঙ্গিসহ মৌসুমি কৃষি পণ্য সেতু হয়ে সহজেই বরিশালে এসে দূরদূরান্তের বাজারে পৌঁছতে পারবে। বাজারজাতকরণে শাকসবজি পচে যাওয়ার ভয় আর থাকবে না। কৃষকরাও পাবেন ন্যায্য দাম। শৃঙ্খলা তৈরি হবে সুষম বণ্টনের। মোদ্দাকথা যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণের মাধ্যমে সম্ভাবনা তৈরি হবে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে। খরস্রোতা পায়রায় সেতুর একটি পিলার ব্যবহারের ফলে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু সার্বিক অবকাঠামোগত কারণে খরস্রোতে ভাঙনের কবল থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা পাবে পায়রা পাড়ের মানুষ। নদীগর্ভে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পাবে গ্রামের পর গ্রাম। উদ্বাস্তু হওয়ার চিন্তা থেকে অনেকটা মুক্তি মিলেছে তাদের। অর্থনৈতিক-সামাজিক পরিবর্তনের এ রকম ইতিবাচক ঊষালগ্নে সেতুর নামকরণ প্রসঙ্গে বরিশালবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারা মানববন্ধন-সমাবেশ করেছেন। সমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন সাংবাদিক, শিক্ষক, লেখক এবং রাজনৈতিকসহ নানা পেশার লোকজন। তারা চেয়েছিলেন সেতুর নাম হবে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে বরিশালের প্রথম শহীদ আলাউদ্দিনের নামে। দীর্ঘ অপেক্ষার সমাপ্তি হয়ে পায়রা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে। পায়রায় চলুক দুর্দান্ত সোয়ার! সজীব ওয়াফি লেখক, ঢাকা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App