ঋণের টাকা শোধ করতে শিশু আফিয়াকে অপহরণ করে রানা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০২১, ০৯:৩৬ পিএম
শিশু আফিয়া
সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে এক যুগ আগে জমি বিক্রি ও ঋণ করে দুবাই যান রানা আহমেদ বাকি। কিন্তু কাগজপত্র সঠিক না থাকায় মাস না পেরুতেই সে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে উল্টো ২৩ দিন জেল খেটে যাকাত ভিসায় দেশে ফেরেন তিনি। এরপর রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। এই অবস্থায় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না রানা। পরে ঋণের টাকা পরিশোধে প্রতিবেশীর তিন বছর বয়সী শিশু আফিয়াকে অপহরণ করে সে।
অপহরণকারী রানা আহমেদ বাকি গ্রেপ্তারসহ অপহৃত শিশুকে উদ্ধারের ঘটনায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৪ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) অতি. ডিআইজি মোজাম্মেল হক। রবিবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্টিত হয়।
র্যাব-৪ এর সিও বলেন, গত ২১ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন পল্লীবিদ্যুৎ, কবরস্থান রোড এলাকা থেকে সাড়ে ৩ বছরের শিশু আফিয়াকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার দিনই অপহরণকারী মোবাইল ফোনে শিশুটির বাবা-মার কাছে ৪ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব-৪ এর গোয়েন্দা দল। আভিযানিক দল প্রথমে অপহরণকারীর নিজ জেলা পাবনা ও শ্বশুর বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় অভিযান চালায়।
পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, অপহরণকারী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানায় দুর্গম চরাঞ্চলে অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার সকাল ৯টার থেকে গতকাল রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানাধীন এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এক পর্যায়ে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর থানাধীন ১০ নং কৈজুরি ইউপির ৭ নং ওয়ার্ডের বাঁধ সংলগ্ন স্লুইস গেট এলাকার একটি বাসা থেকে অপহৃত শিশু আফিয়াকে উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় অপহরণকারী রানা আহমেদ বাকিকে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অপহরণকারী রানা আহমেদ দুই বছর ধরে আশুলিয়া থানাধীন পল্লীবিদ্যুৎ কবরস্থান রোড এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। পেশায় রিকশাচালক রানা বেশিরভাগ সময় রাতে রিকশা চালাতেন। দিনে বাসায় থাকতেন। মাঝে মধ্যে স্থানীয় একটি কয়েল ফ্যাক্টরিতেও কাজ করতেন। ভিকটিম শিশুর বাবা আবুল কালাম আজাদ (২৮) ও মা সোনিয়া বেগম (২৭) দুজনই পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। এ জন্য দীর্ঘ দিনের পরিচিত আনোয়ারা নামে এক নারীর বাসায় শিশু আফিয়াকে রেখে যেতেন তারা। আনোয়ারার পাশের বাসায় ভাড়া থাকতেন রানা। সেই সুবাদে ভিকটিম শিশুর সঙ্গে মামা পরিচয়ে মিশতেন রানা। এ সুযোগকেই কাজে লাগায় সে।