×

সারাদেশ

দক্ষিণাঞ্চলের দ্বার পায়রা সেতু খুলে যাচ্ছে রবিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২১, ১১:৪১ এএম

পটুয়াখালীর পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার (২৩ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এই সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অপার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।

প্রধানমন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব-১ ইসমাত মাহমুদা স্বাক্ষরিত চিঠিতে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে পায়রা নদীর ওপর পায়রা সেতু উদ্বোধনে সম্মতি দিয়েছেন। ২৪ অক্টোবর সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এই সেতু উদ্বোধন করবেন তিনি। এ কারণে এখন পায়রা সেতু এলাকায় সাজ সাজ রব পড়েছে।

পায়রা সেতু প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার লেবুখালী এলাকার পায়রা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পায়রা সেতু। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, সরকার ২০১২ সালের মে মাসে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। বিদেশি অর্থায়নে নির্মিত এই সেতু ২০১৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সে সময় ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪১৩ দশমিক ২৮ কোটি টাকা।

পায়রা সেতু প্রকল্প পরিচালক আবদুল হালিম বলেন, মূল সেতু, সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২৪ অক্টোবর এই সেতুর উদ্বোধন করবেন। এখন শেষ মুহূর্তে সেতু এলাকায় সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে যাবে এই সেতু। পায়রা সেতু উন্মুক্ত হলে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন যান চলাচল স্থাপিত হবে। পরবর্তীতে পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ হলে ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

ভাগ্য বদল : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বিরাট সুযোগ সৃষ্টি করবে পদ্মা ও পায়রা সেতু। পর্যটন করপোরেশনের কুয়াকাটার ব্যবস্থাপক সুভাষ চন্দ্র নন্দী জানান, পদ্মা ও পায়রা সেতুকে সামনে রেখেই পায়রা সমুদ্রবন্দর, গঙ্গামতী, কাউয়ারচর, কুয়াকাটাসহ বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় গড়ে উঠছে আধুনিক মানের হোটেল-মোটেল, শিল্পায়নসহ নানা স্থাপনা। একই সঙ্গে এসব অঞ্চলের সঙ্গে গড়ে উঠবে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসায়িক সম্পর্ক।

মাত্রাতিরিক্ত টোল : দক্ষিণাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের লেবুখালী পায়রা সেতুতে মাত্রাতিরিক্ত টোল নির্ধারণে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যানবাহনের মালিক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে পায়রা সেতু পারাপারে অতিরিক্ত টোল নির্ধারণের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বিতর্কের ঝড় বইছে। গত ১৮ মার্চ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের (টোল অধিশাখা) উপসচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক গেজেটে সেতুর টোল নির্ধারণ করা হয়। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বরিশাল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, ফেরি ও সেতুর টোলের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। সড়ক পরিবহন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে টোল নির্ধারিত হয়ে থাকে। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।

৪০ বছরের দুর্ভোগের অবসান : পায়রা সেতু উদ্বোধনের পরই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ফেরিপথ লেবুখালী ফেরিঘাট। দীর্ঘদিন এ ঘাটের কর্মচাঞ্চল্য হারালেও খুশি এখানকার বাসিন্দারা। ফেরি মাস্টার মো. শাহ আলম বলেন, ফেরি বন্ধ হলে ১০ জন চালক ছাড়া বাকিদের অন্য কোথাও বদলি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ তারা সরকারি তালিকাভুক্ত নয়।

জানা যায়, ১৯৮০ সালের দিকে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে কয়েকটি নদীতে ফেরি চলাচল চালু করে তৎকালীন সরকার।

লেবুখালী ফেরিঘাট সুপারভাইজার মো. আফজাল হোসেন জানান, এ ঘাটে চারটি নতুন এবং দুটি পুরনো ফেরি চলাচল করে।

পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসান জানান, সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকা থেকে ফেরির বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App