×

খেলা

বিশ্বকাপে সবার সেরা সাকিব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০২১, ১০:৪৯ এএম

বিশ্বকাপে সবার সেরা সাকিব

ফাইল ছবি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চলতি আসরে বেশ কিছু রেকর্ডের হাতছানি ছিল সাকিব আল হাসানের সামনে। তবে সাকিব সে মাইলফলকগুলো খুব অল্প সময়ে স্পর্শ করে ফেলেছেন। প্রথম ম্যাচেই লাসিথ মালিঙ্গাকে ছুঁয়ে বনে গিয়েছিলেন টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। এবার শহিদ আফ্রিদির বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ডটাও নিজের করে নিলেন সময়ের সেরা এই অলরাউন্ডার।

পাকিস্তানি অলরাউন্ডার যেখানে ৩৪ ম্যাচে ৩৯ উইকেট শিকার করেন, সেখানে সাকিব ২৮ ম্যাচ খেলে সমানসংখ্যক উইকেট তুলে নেন। বৃহস্পতিবার পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ম্যাচে ৯ রানের বিনিময়ে চার উইকেট তুলে নিয়ে সাকিব রেকর্ডটি গড়েন। এর আগে ওমানের বিপক্ষে সাকিব ভারতের যুবরাজ সিংকে পেছনে ফেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেরা অলরাউন্ডারের আসনটি দখল করে নিয়েছেন।

ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান স্বপ্নের মতো এক আসর কাটিয়েছেন। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরে এসেই একের পর এক ঝলক দেখাচ্ছেন টাইগার অলরাউন্ডার। যদিও আসরের শুরু একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। সংযুক্ত আরব আমিরাতে মূলপর্বে যাওয়ার আগে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে ওমানে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৬ রানে হারে বাংলাদেশ। ফলে মূলপর্বে যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশের পরিসংখ্যানই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে বাঘের গর্জন সময় মতোই দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। বাঘের প্রতিনিধি সাকিব বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে এসে নিজেকে আসীন করেছেন বিশ্বকাপের দুইটি রেকর্ডের আসনে। ২৮ ম্যাচে ৩৯ উইকেট নিয়ে সাকিব এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।

অন্যদিকে ব্যাট হাতে ৬৭৫ রানের সঙ্গে ৩৯ উইকেট বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেরা অলরাউন্ডার এখন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের শুরুর পূর্বে এসব রেকর্ড গড়তে সাকিবের প্রয়োজন ছিল ২৭ রান ও ১০ উইকেট। আফ্রিদির চেয়ে কম ম্যাচে তিনি ৩৯ উইকেট পাওয়ায় ৯ উইকেট পেয়েই গড়ে ফেলেছেন বিশ্ব রেকর্ড। এর আগে প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাট হাতে সাকিব ২৮ বল খেলে ২০ রান করেন আর বল হাতে ১৭ রান দিয়ে তিনি তুলে নেন ২ উইকেট। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ২৯ বলে ৪২ রান এবং বল হাতে ২৮ দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। আর গতকাল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে নিজেদের শেষ ম্যাচে সাকিব পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭ বলে ৪৬ রান করেন। আর বল হাতে বিধ্বংসী রূপে মাত্র ৯ রান দিয়ে তুলে নেন ৪ উইকেট। একই সঙ্গে এই ম্যাচটি ৮৪ রানে জিতে সুপার টুয়েলভব নিশ্চিত করে ফেলেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকিবের অভিষেক ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর তিনি একে একে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ছয়টি আসর, আর চলমান রয়েছে তার সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা। বিশ্বকাপে সাকিব কাল পর্যন্ত খেলেছেন ২৮টি ম্যাচ। বিশ্ব আসরে ২৭ ইনিংসে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৬৭৫ রান। বিশ্বকাপে সাকিবের সর্বোচ্চ ৮৪ রানের ইনিংস পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। আসরগুলোতে সাকিবের কোনো শতক না থাকলেও আছে তিনটি অর্ধশতক রানের ইনিংস। আর বল হাতে সাকিব কাল পর্যন্ত ২৮ ম্যাচ থেকে নিয়েছেন ৩৯টি উইকেট। এতদিন বিশ্বকাপে তার সেরা বোলিং ফিগার ছিল ১৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট, ২০১৬ সালে ওমানের বিপক্ষে। আর গতকাল পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে নেয়া ৯ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট বিশ্বকাপে এখন তার সেরা বোলিং ফিগার।

বিশ্বকাপে সাকিব ৪ উইকেট শিকার করেছেন তিনবার, ৩ উইকেট চারবার, ২ উইকেট চারবার আর এক উইকেট করে নিয়েছেন সাত ইনিংসে। ব্যাটে বলে পারদর্শী টাইগার অলরাউন্ডার বিশ্বকাপে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন তিনবার। তার মধ্য দুইবার চলতি আসরেই।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অলরাউন্ডারদের মধ্যে ৫৯৩ রান আর ১২ উইকেট নিয়ে ভারতের যুবরাজ সিং এখন দুইয়ে নেমে এসেছে। ৫৪৬ রান ও ৩৯ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা তিনে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩৪ ম্যাচে ৩৯ উইকেট নিয়ে উইকেট শিকারির তালিকায় এখন দুইয়ে পাকিস্তানের শহিদ আফ্রিদি। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩৮ উইকেট নিয়ে তালিকায় এরপরের অবস্থানটি শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গার। ৩৬ উইকেট তিনে পাকিস্তানের সাঈদ আজমল।

এদিকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্যাটসম্যানদের মধ্যেও সেরা পাঁচে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে সাকিবের। ৬৭৫ রান করে ভারতের রোহিত শর্মাকে পেছনে ফেলে এখন তালিকার ছয়ে সাকিব আল হাসান। ৭১৭ রান করে পাঁচে ডি ভিলিয়ার্স। এছাড়া ৭৭৭ রান করে চারে বিরাট কোহলি, তিনে থাকা দিলশানের রান সংখ্যা ৮৯৭, দুইয়ে থাকা গেইলের রান ৯২০ আর ১০১৬ রান নিয়ে সিংহাসন দখল করে আছেন মাহেলা জয়াবর্ধনে। কোহলি, গেইল, রোহিতরা ছাড়া অন্যরা অবসরে থাকায় সাকিব সুযোগ পাচ্ছেন সেরা পাঁচে স্থান করে নেয়ার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App