×

খেলা

ডাচদের উড়িয়ে আইরিশ রূপকথা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২১, ০৮:৪৩ এএম

ডাচদের উড়িয়ে আইরিশ রূপকথা

সোমবার টি-টোয়েন্টির বাছাইপর্বে নেদারল্যান্ডকে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে গতকাল নেদারল্যান্ডসকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। প্রথম ব্যাট করতে নামা ডাচদের এদিন দাঁড়াতেই দেননি কুর্তিস ক্যাম্পার ও মার্ক আদাইররা। নির্ধারিত ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের ইনিংস গুঁড়িয়ে যায় মাত্র ১০৬ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫.১ ওভারে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় আইরিশরা। ম্যাচে চার বলে চার উইকেট তুলে নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েন আইরিশ বোলার কুর্তিস ক্যাম্পার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্যাম্পারই প্রথম চার বলে চার উইকেট নেয়া কীর্তি গড়েছেন। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ফাস্ট বোলার ব্রেটলির পরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিকের রেকর্ডটি গড়েন তিনি।

শেখ আবু জায়েদ স্টেডিয়ামে গতকাল ব্যাট করতে নেমে যেন ছন্দ ফেলে নেদারল্যান্ডস। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে, টি-টোয়েন্টি আসরেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে শতভাগ সাফল্য ডাচদের। অতীত সব পরিসংখ্যান যেন এবার উল্টে গেল। আইরিশদের কাছে পাত্তাই পেল না ডাচরা। আবুধাবিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে গতকাল নেদারল্যান্ডসকে ২৯ বল আর ৭ উইকেট হাতে রেখে হেসেখেলেই হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড। রান তাড়ায় শুরুটা অবশ্য অত ভালো ছিল না আইরিশদের। ৩৬ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন কেভিন ও’ব্রায়েন ও অ্যান্ড্রু বালবির্নি। ও’ব্রায়েন ১০ বলে ৯ রান নিয়ে ব্রেন্ডন গ্লোভারের বলে তালুবন্দি হন। আর বালবির্নি ৬ বলে ৮ রান করে ফ্রেড ক্লাসেনের বলে তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তবে লক্ষ্য যেহেতু মাত্র ১০৭, তাই সে ধাক্কা কোনো সমস্যাই হয়ে দাঁড়ায়নি আইরিশদের জন্য। তৃতীয় উইকেটে পল স্টারলিং আর গ্যারেথ ডেলানির ৪৬ বলে ৫৯ রানের জুটিতে ম্যাচ হাতে নিয়ে নেয় আইরিশরা। ২৯ বলে ৪৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ডেলানি যখন সিলারের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরছেন, তখন ৪৪ বলে মাত্র ১২ রান দরকার ছিল আয়ারল্যান্ডের। বাকি কাজটা অনায়াসে সেরেছেন স্টারলিং আর কুর্তিস ক্যাম্পার। স্টারলিং ৩৯ বলে ৩০ আর ক্যাম্পার ৭ বলে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা নেদারল্যান্ডসকে ইনিংসের প্রথম থেকেই চাপে রেখেছিলেন আইরিশ বোলাররা। তবে সেই চাপ সামলে একটা সময় ২ উইকেটে ৫২ রান ছিল ডাচদের। সেখান থেকে কুর্তিস ক্যাম্পারের ঝলক। এক ওভারেই টানা চার বলে চার উইকেট (ডাবল হ্যাটট্রিক) নিয়ে নেদারল্যান্ডসকে কোণঠাসা করে দেন এ আইরিশ পেসার। ধুঁকতে থাকা ডাচরা শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে মাত্র ১০৬ রান তুলতে সক্ষম হয়।

আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং নেয় নেদারল্যান্ডস। শুরুটা ভালো করতে পারেনি তারা। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ৬ ওভারে ২ উইকেটে তোলে মাত্র ২৫ রান। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় নেদারল্যান্ডস। ম্যাক্স ও’দাউদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউটের কবলে পড়েন বেন কুপার। ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় ডাচরা। পঞ্চম ওভারে আবারও বিপদে পড়ে নেদারল্যান্ডস। এবার অদূরদর্শী এক শট খেলতে গিয়ে পেছনের স্টাম্প উন্মুক্ত করে দেন বেস ডি লিডে (১১ বলে ৭)।

লিটলের দারুণ ডেলিভারি উপড়ে দেয় স্টাম্প। ২২ রানে ২ উইকেট হারানো দলকে এরপর টেনে তোলার চেষ্টা করেছেন ও’দাউদ আর কলিন অ্যাকারম্যান। তবে তাদের ২৮ বলে ২৯ রানের জুটিটা ঠিক টি-টোয়েন্টির সঙ্গে মানানসই ছিল না। দশম ওভারে এসে দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিক করে বসেন কুর্তিস ক্যাম্পার। আইরিশ পেসারের লেগ সাইডে বেরিয়ে যাওয়া বল পুল করতে গিয়ে ব্যাটে হালকা ছোঁয়া লেগে যায় অ্যাকারম্যানের। আম্পায়ার যদিও আউট দেননি শুরুতে, রিভিউ নিয়ে জিতে যায় আইরিশরা। পরের বলে ক্যাম্পারের এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন বিশ্বকাপে সবচেয়ে বয়স্ক ক্রিকেটার রায়ান টেন ডেসকাটেকে। চতুর্থ বলে একই পরিণতি হয় স্কট এডওয়ার্ডসের। এবারও আম্পায়ার নাকচ করে দিয়েছিলেন। রিভিউ নিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ক্যাম্পার। এখানেই থামেননি তিনি। ওভারের পঞ্চম বলে ক্যাম্পার বোল্ড করেন রিওলফ ভ্যান ডার মারউইকে। এতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ডাবল হ্যাটট্রিকের ইতিহাসও গড়া হয়ে গেছে আইরিশ পেসারের। ২ উইকেটে নেদারল্যান্ডসের স্কোরবোর্ড মুহূর্তে উল্টে হয়ে যায় ৬ উইকেটে ৫১। সেই ধাক্কা সামলে আর বড় স্কোর গড়তে পারেনি তারা। একটা প্রান্ত ধরে লড়ে গেছেন ও’দাউদ। ৪৪ বলে ফিফটি ছোঁয়া এই ব্যাটারকে শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারে আউট করেছেন মার্ক অ্যাডায়ার। ৪৭ বলে ৭ বাউন্ডারিতে ও’দাউদের ব্যাট থেকে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৫১ রান। আইরিশ বোলারদের মধ্যে স্বভাবতই সবচেয়ে সফল ডাবল হ্যাটট্রিক করা ক্যাম্পার। ২৬ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন এ পেসার। তবে ডাচদের ১০৬ রানে বেঁধে ফেলতে ভূমিকা রাখে মার্ক আদাইরের কিপ্টে বোলিং। ৪ ওভার বল করে মাত্র ৯ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট তুলে নেন এই ফাস্ট বোলার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App