×

জাতীয়

সাম্প্রদায়িক হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরে বিশিষ্ট নাগরিকদের উদ্বেগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২১, ১০:০১ পিএম

সাম্প্রদায়িক হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরে বিশিষ্ট নাগরিকদের উদ্বেগ

বিশিষ্ট নাগরিকদের উদ্বেগ।

দেশে সংঘটিত সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলা ও প্রতীমা ভাংচুরের বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের পক্ষ থেকে ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে।

সোমবার (১৮ অক্টোবর) রাতে দেয়া বিবৃতিতে তারা বলেছেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার সাথে লক্ষ্য করলাম যে, দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সার্বজনীন দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারলেন না। বিভিন্ন পুজামণ্ডপে হামলা, প্রতীমা ভাঙচুর, কোথাও কোথাও বাড়ী ঘরে হামলা, অগ্নি সংযোগ করে এমন এক ভীতিকর ন্যাক্কারজনক পরিবেশ তৈরি করা হোল, যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্যদিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে কারোর জন্য গ্রহনযোগ্য হতে পারে না।

বিবৃতিতে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত ও এর পেছনের হোতাদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিসহ নিরাপত্তা দিতে প্রশাসনের ব্যর্থতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবারও দাবি জানান এসব বিশিষ্ঠ নাগরিকরা।

বিবৃতিতে তারা বলেন, নানা সময়ে ধর্মকে ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হামলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য নষ্ট করার চেষ্টা চলছে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ফায়দা লোটা হচ্ছে। অতীতেও অসখ্যবার এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও ওইসব ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়নি। বিচার হয়নি। এমনকি কোথাও কোথাও রাজনৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। এই বিচারহীনতা আবার অপরাধ সংগঠিত করতে মদদ জুগিয়েছে বলে তারা মন্তব্য করেন ।

বিশিষ্ট নাগরিকরা মনে করেন, এইসব অপশক্তি এখনও তৎপর। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশগুলিকেও আজকে সংখ্যালঘুসম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ আবাসভূমি হিসাবে গড়ে তোলা যায় নি। ধর্মকে অপব্যবহারের যে কোন ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সজাগ থাকা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিদ্বেষী সকল অপশক্তিকে প্রশ্রয় না দেয়া, জঙ্গি ধর্মভিত্তিক শক্তির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক , সামাজিক, সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে নীতিনিষ্ঠা ভাবে সংগ্রাম পরিচালনা করা জরুরী হয়ে পড়ছে। রাষ্ট্র ও জনসমাজকে সম্মিলিত ভাবে আজ এ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে বলে মন্তব্য করেন তারা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ৫০ বছরের বাংলাদেশকে আমরা পেছনের দিকে নিয়ে যেতে দিতে পারি না। তাই এধরনের অপশক্তির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়া, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং দেশের সর্বত্র মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতির পক্ষের সকল অসম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল শক্তি, ব্যক্তি ও প্রকৃত ধর্মপ্রাণ মানুষদের সমন্বিত উদ্যোগ গড়ে তোলা বিশেষ জরুরি।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- মানবাধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল, প্রাক্তন আইন মন্ত্রী ব্যারিষ্টার শফিক আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ মিউজিয়ামের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাষ্টি ডাঃ সারোয়ার আলি, নিজেরা করি’র সভানেত্রী খুশী কবীর, নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপিকা মাহ্ফুজা খানম, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ ড: সেলিম জাহান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, প্রাক্তন বিএমএ সভাপতি ডাঃ রশিদ ই মাহবুব, ড: মইনুল ইসলাম, প্রাক্তন ইউ জিসি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড: আবুল বারকাত, সিপিডি সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, রীব-এর নির্বাহী পরিচালক মেঘনা গুহঠাকুর্তা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রো উপাচার্য ডঃ তাজুল ইসলাম, অধ্যাপক এ এন রাশেদা, অধ্যাপক ড: সুশান্ত কুমার দাশ, অধ্যাপক বদিউর রহমান, অধ্যাপক কাবেরী গায়েন, প্রকৌশলী আবুল কাশেম, এলআরডি’র নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, সিনিয়র এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, উদিচীর চৌধুরী মাহ্মুদ সেলিম, চিকিৎসক ও খেলাঘরের বিশিষ্ট নেতা ডাঃ লেনিন চৌধুরী, এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী এবং অধ্যাপক এম এম আকাশ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App