×

মুক্তচিন্তা

যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম চাই

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২১, ১২:৪৯ এএম

আমরা কেন কোটি কোটি টাকা খরচ করে লাখ লাখ বেকার জন্ম দিচ্ছি! আমাদের তরুণদের জীবন যেমনিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনিভাবে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় করা হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলোর জরিপ অনুযায়ী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা দুই-তৃতীয়াংশ কোনো জব পান না। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থাও যে খুব ভালো অবস্থানে তা নয়। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কী খবর! ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কী খবর, সেখানে কি জরিপ হয়েছে! হলে আরো শোচনীয় অবস্থা হবে তা বোঝাই যাচ্ছে। একজন মানুষকে জীবনে বাঁচার জন্য জ্ঞানী হতে হবে। এখন সে জ্ঞানের স্তর কতটুকু হবে? তা কি অনার্স-মাস্টার্স নাকি এসএসসি-এইচএসসি পরিমাণ, সেটা সম্ভবত একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকমের। আমাদের সবাইকেই যে অনার্স-মাস্টার্স পাস করে জ্ঞানীর পরিচয় দিতে হবে এমন নয়। তাহলে আমরা জ্ঞানচর্চার পর যে কাজটি করব তা হলো শ্রমবাজারে প্রবেশ। বৈশ্বিক শ্রমবাজারের পরিধি বিশাল। এখানে সুযোগ পাওয়া দক্ষতা থাকলে কঠিন নয়। আমাদের এ জন্য গৎবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একটি যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম তৈরির দিকে এগোতে হবে। প্ল্যান না করে, শ্রেণিকর্ম না করে কেবলই পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে পাস করে যে শিক্ষার্থী শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে নিজেকে জ্ঞানী বলে সে কি সত্যি জ্ঞানী! চাকরি পাওয়ার মতো দক্ষতা কি তার অর্জন হয়েছে? এই দায় কার! জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রতিটি বিভাগে গড় শিক্ষক থাকেন চার-পাঁচজন। এই চার-পাঁচজন শিক্ষককে অনার্স, মাস্টার্স, পাস কোর্স, ইন্টারমিডিয়েটসহ সব শ্রেণির পাঠদান করাতে হয়। তাদের পক্ষে কি এটা সম্ভব! তারাও তো মানুষ। ফলে সদিচ্ছা থাকলেই তাদের পক্ষে সব শিক্ষার্থীকে সেভাবে সময় দেয়ার সুযোগ হয় না। তারপর রয়েছে শ্রেণিকক্ষের অপ্রতুলতা, এক বা দুটি শ্রেণিকক্ষে অনার্স চার বর্ষ, মাস্টার্স পাঁচটি গ্রুপকে কী করে ক্লাস নেবে? শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন না করে কেবলই সার্টিফিকেটের জ্ঞানী যতদিন বের হবে ততদিন শিক্ষার সঙ্গে চাকরির সঙ্গে মিল পাবেন না। তারপর শিক্ষার বিষয়গুলোকে যুগোপযোগী করতে হবে। যে বিষয় পড়ে আমার চাকরির বাজারে কোনো কাজেই আসবে না, সে জ্ঞান দিয়ে কী হবে! মৌলিক পাঠ্যের পাশাপাশি যদি চাকরির বাজার ফলো করে ৫০-৪০ ভাগও বইপত্র সংযোজন করা যায়, এই শিক্ষার্থীরা অন্তত বের হয়ে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে সার্ভিস দিতে পারবে। আমাদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এত অর্থ খরচ করার পরও সে শিক্ষার্থীদের যারা চাকরি নামের হীরক খণ্ড পেয়ে যান, তাদের দক্ষ করতে গিয়ে কোম্পানিগুলোর কত শত শত কোটি টাকা খরচ হয় তা কি জানা আছে! ফলে অনেক কোম্পানি বাইরের দেশ থেকে ওয়ার্কার নিয়ে আসে। অথচ আমাদের তরুণরা চাকরির খোঁজে পাগলপ্রায়। শিক্ষা কারিকুলামের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি অনুরোধ- আপনারা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। ভাবনার জন্য প্রয়োজনে বড় বড় কোম্পানির কর্তাদের ডাকুন তাদের কী ধরনের গ্র্যাজুয়েট দরকার, সে ধরনের ফর্মুলা তৈরি করুন। অন্যথায় বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ আরো তিমিরাচ্ছন্ন হবে।

সিরাজুল মুস্তফা : চট্টগ্রাম। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App