×

খেলা

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অর্থের ছড়াছড়ি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩৯ পিএম

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অর্থের ছড়াছড়ি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের প্রাইজমানি ধরা হয়েছে ৫৬ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই বাড়তি রোমাঞ্চ। প্রতিটি বল ঘিরেই জমে থাকে উত্তেজনা। আগামী ২৪ অক্টোবর এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করবে ভারত ও পাকিস্তান। দু’দলের লড়াই এখন কেবল দেখা যায় আইসিসি ও এসিসি ইভেন্টেই। লম্বা সময় পরপর মুখোমুখি হয় বলে ম্যাচ ঘিরে আগ্রহের মাত্রাও থাকে তুঙ্গে। বিশ্বকাপে মর্যাদার লড়াইয়ের চাপে বারবারই ভেঙে পড়েছে পাকিস্তান।

ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ১২ বারের দেখায় একবারো তারা হারাতে পারেনি ভারতকে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ৭টি, বাকি ৫টি টি-টোয়েন্টিতে। ইংল্যান্ডে ২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বশেষ দেখা হয়েছিল দুদলের। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ পর্বে আবার দেখা হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের।

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত পাকিস্তানের এ ম্যাচ নিয়ে এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে নানা রকমের আলোচনা। ক্রিকেট বিশ্ব মেতেছে এই ম্যাচ কেমন উত্তেজনা ছড়াবে, তা নিয়ে। শুরু হয়ে গেছে ম্যাচটির সম্ভাব্য ফল নিয়ে নানা ধরনের ভবিষ্যদ্বাণীও। শুধু ক্রিকেটপ্রেমীরাই নন, এসব নিয়ে আলোচনায় মেতেছেন দুদলের সাবেক ক্রিকেটাররাও।

এক সপ্তাহ পর শুরু হচ্ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসর। ১৭ অক্টোবর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত হতে যাওয়া প্রতিযোগিতায় ১৬টি দল অংশ নিতে যাচ্ছে। কোনো দলই খালি হাতে ফিরবে না। সব মিলিয়ে প্রাইজমানি ধরা হয়েছে ৫৬ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এবার চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১৬ লাখ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৪ কোটি টাকা। রবিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে প্রাইজমানি ঘোষণা করেছে আইসিসি। রানার্স আপ দল পাবে ৮ লাখ ডলার। তবে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ না হলেও এই বিশ্বমঞ্চ থেকে খালি হাতে ফিরবে না কোনো দল। প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ১৬টি দলের প্রত্যেকেই পাবেন নির্ধারিত ৫.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি অংশ।

সেমিফাইনালে বিদায় নেবে যে দুদল তাদের জন্যও বড় অঙ্কই বরাদ্দ রাখা হয়েছে এবার। ৪ লাখ ডলার করে পাবে বিদায়ী সেমিফাইনালিস্টরা। ১০ ও ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে এবারের বিশ্বকাপের দুই সেমিফাইনাল। ২০১৬ বিশ^কাপের মতোই এবারের আসরেও সুপার টুয়েলভে প্রতিটি ম্যাচে জয়ের জন্য থাকছে বোনাস অর্থ। এই রাউন্ডের ৩০টি খেলার প্রতিটিতেই বিজয়ী দল পাবে ৪০ হাজার ডলার। শুধু তাই নয় সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় নেয়া দলগুলোর জন্যও রয়েছে উপহার। বিদায়ী ৮টি দলের প্রত্যেকে ৭০ হাজার ডলার করে পাবে।

প্রথম রাউন্ড খেলা দলগুলোর জন্যও ভেবেছে আইসিসি। দুই টেস্ট সদস্য বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সহযোগী দেশ নামিবিয়া, পাপুয়া নিউগিনি, ওমান, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে লড়বে এই রাউন্ডে। এই রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়া চার দলের প্রত্যেকে ৪০ হাজার ডলার করে পাবে।

ভারতের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে হারা পাকিস্তান কি এবার ১৩তম লড়াইয়ে এসে জয়ের মুখ দেখবে? তারা কিন্তু এবার ভাগ্য বদল করতে মরিয়া। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান রমিজ রাজা সম্প্রতি বলেছেন, একটি বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার কথা হয়েছে যে এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান জিতলে পিসিবিকে তারা ব্ল্যাঙ্ক চেক (টাকার অঙ্ক না বসিয়ে সই করা চেক) দেবে!

সব ধরনের ক্রিকেট মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে দুদলকে সমানে সমানই বলতে হবে। পরিস্থিতি যখন এই, কে জিতবে ২৪ অক্টোবরের সেই আগুনে লড়াই? এমন প্রশ্ন ভেসে বেড়াচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বে। আকিব জাভেদ এ লড়াইয়ে পাকিস্তানকে পিছিয়ে রাখলেও শহীদ আফ্রিদি নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করতে গিয়ে কৌশলী পন্থাই বেছে নিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক, যে দল চাপটা ভালোভাবে সামলাতে পারবে, সে দলই জিতবে। এছাড়া সে দলেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি থাকবে, যে দলে ভুলের সংখ্যা কম হবে।

অন্যদিকে ইনজুরির কারণে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়েছেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান শোয়েব মাকসুদ। এবার তার পরিবর্তে ডাক পেয়েছেন ৩৯ বছর বয়সি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। অথচ আগের স্কোয়াডে তার জায়গা মেলেনি।

গত পরশু এক বিবৃতিতে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে শোয়েব মালিকের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

পাকিস্তানের ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে খেলার সময় পিঠে চোট পেয়েছিলেন শোয়েব মাকসুদ। ইনজুরির কারণে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপে নিজ দল সাউদার্ন পাঞ্জাবের সর্বশেষ ম্যাচেও খেলতে পারেননি মাকসুদ। কিন্তু চোট সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গেছে, তাকে পুরোপুরি ফিট হয়ে ওঠার আগে বেশ কয়েক দিন মাঠের বাইরে থাকতে হবে। প্রথমবার দলে জায়গা পাওয়া মাকসুদকে ফিট হিসেবে বিশ্বকাপ দলে পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে রাজি ছিল পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু আসন্ন বিশ্বকাপে খেলার ফিটনেস অর্জন করতে পারেননি তিনি। ফলে তার বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মালিককে নেয়ার ঘোষণা দেয় পিসিবি।

আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) অন্তর্ভুক্তি হচ্ছে। বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৭ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য নতুন এই প্লেয়িং কন্ডিশন চালু করা হচ্ছে। প্রত্যেক দল প্রতি ইনিংসে সর্বোচ্চ ২টি করে রিভিউ পাবে। গভর্নিং বডি গত বছর জুনে এক ঘোষণায় জানায়, কোভিড মহামারির কারণে অনভিজ্ঞ আম্পায়ারের কথা মাথায় রেখে সব ফরম্যাটের ম্যাচের প্রত্যেক ইনিংসে একটি করে বাড়তি ডিআরএস রাখা হয়। তাতে করে সাদা বলের ফরম্যাটের প্রত্যেক ইনিংসে রিভিউর সংখ্যা বেড়ে ২টি হয় আর টেস্টে ৩টি।

এছাড়া বৃষ্টিবিঘ্নিত বা বিলম্বিত ম্যাচে ন্যূনতম ওভারের সংখ্যাও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বের খেলায় ডিএলএস মেথডে ফল পেতে অন্তত পাঁচ ওভার ব্যাট করতে হবে প্রত্যেক দলকে। যে কোনো টি-টোয়েন্টিতেই এমন নিয়ম। কিন্তু সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ফল কার্যকরে প্রত্যেক দলকে ব্যাট করতে হবে অন্তত ১০ ওভার করে আগের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী, পুরুষ ও নারীদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ডিআরএস ব্যবহার করা হতো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে অংশগ্রহণ করা দলের সম্মতিক্রমে।

পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ডিআরএস প্রথম হলেও ২০১৮ সালে নারীদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ছিল রিভিউ সিস্টেম। তাদের ২০২০ সালের বিশ্বকাপেও বহাল ছিল এই নিয়ম। অন্যদিকে পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সর্বশেষ হয়েছিল ২০১৬ সালে। তখন টি-টোয়েন্টিতে ডিআরএসের ব্যবহার শুরু হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App