×

খেলা

বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বৈরথ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৬:৪০ পিএম

বাংলাদেশ-মালদ্বীপ দ্বৈরথ

মালদ্বীপের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে অনুশীলন শেষে শিষ্যদের পরামর্শ দিচ্ছেন হেড কোচ অস্কার ব্রুজন

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ২০০৩ সালের পর কখনো শিরোপা জেতা হয়নি বাংলাদেশের। এবার সেই শিরোপার খরা কাটানোর কঠিন মিশনে নেমেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। সেই মিশনে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে রুখে দেয় বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) তাদের সামনে প্রতিপক্ষ সাফের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ। মালের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি। খেলাটি বাংলাদেশের দর্শকরা টি স্পোর্টসের পর্দায় সরাসরি উপভোগ করতে পারবেন।

এদিকে প্রথম ম্যাচে জয় ও দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র করার পর বাংলাদেশ এখন ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয়স্থানে। এবার সাফে পাঁচটি দেশ অংশ নেয়ায় গ্রুপ পর্বে প্রত্যেকটি দেশ প্রত্যেকের বিপক্ষে খেলবে। আর গ্রুপ পর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে থাকা দুই দেশ সরাসরি ফাইনালে খেলবে। বাংলাদেশ যেহেতু তাদের প্রথম দুটি ম্যাচের একটিতেও হারেনি, ফলে আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় পেলে ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে যাবে জামালরা। সাফের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ তাদের প্রথম ম্যাচে হেরে গেছে নেপালের বিপক্ষে। ফলে তাদের উপর এখন ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য প্রচণ্ড চাপ আছে। তারা চাইবে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে করেই হোক ঘুরে দাঁড়াতে। এজন্য তারা বাংলাদেশের উপর চাপ তৈরি করার চেষ্টা করবে। এখন বাংলাদেশই যদি মালদ্বীপকে হারিয়ে দিতে পারে তাহলে তা হবে দারুণ একটি ব্যাপার।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরিসংখ্যানটা ভালো না। এমনকি দ্বীপ দেশটির বিপক্ষে খেলা শেষ তিনটি ম্যাচের সবগুলোতেই হেরেছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে সবমিলিয়ে এখনো জয়ের পাল্লার ভারী দিকটা বাংলাদেশের দিকে। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ একে অপরের বিপক্ষে মোট ১২টি ম্যাচ খেলেছে। বাংলাদেশ জয় তুলে নিয়েছে পাঁচটি ম্যাচে। মালদ্বীপ জয় তুলে নিয়েছে চারটি ম্যাচে। আর বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।

২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছিল ফাইনালে এই মালদ্বীপকেই হারিয়ে। সেবার ঢাকার মাঠে দর্শকভর্তি স্টেডিয়ামে চরম উত্তেজনাকর ফাইনালে খেলতে নামে বাংলাদেশ। ফাইনাল ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়, পরবর্তীতে বাংলাদেশ টাইব্রেকারে মালদ্বীপকে হারিয়ে শিরোপা জয় করে। এরপর মালদ্বীপের বিপক্ষে আরো তিনবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। কিন্তু তিনবারই হারতে হয়। এর মধ্যে ২০১১ ও ২০১৫ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় তারা।

বাংলাদেশ সর্বশেষ মালদ্বীপের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় ২০১৬ সালে। সেবার তাদের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে খেলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে ম্যাচটিতে বাংলাদেশকে একটুও ছাড় দেয়নি মালদ্বীপ। তারা ম্যাচটি জিতে নেয় ৫-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে। অথচ এই মালদ্বীপের বিপক্ষে এক সময় বাংলাদেশ ছিল এক আতঙ্কের নাম। ১৯৮৫ সালে দক্ষিণ এশিয়ান ফেডারেশন গেমসে মালদ্বীপকে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছিল ফুটবলের টাইগাররা। তবে দিনে দিনে বাংলাদেশের ফুটবল গেছে নিচের দিকে।

অন্যদিকে মালদ্বীপ উঠেছে উপরের দিকে। সাফের সর্বশেষ আসরে তো তারা শিরোপাই জিতে নিল। তবে এবার সাফের শুরুটা মালদ্বীপের হয়েছে হারের মাধ্যমে। তাও তারা হেরেছে তাদের চেয়ে শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকা নেপালের বিপক্ষে। ফলে বাংলাদেশ আজ মালদ্বীপের বিপক্ষে ভালো কিছু দেখার আশা করতেই পারে। কারণ সাফে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ কোন ম্যাচে না হারায় তারা বেশ উজ্জীবিত।

এদিকে মালদ্বীপের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটির আগে দুঃসংবাদ পেতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। আর সেটি হলো বাংলাদেশের হয়ে প্রথম দুই ম্যাচ মাতানো বিশ্বনাথ ঘোষ ও রাকিব হোসেনকে মালদ্বীপের ম্যাচটিতে পাওয়া যাবে না। ভারতের বিপক্ষে ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষ সরাসরি লাল কার্ড দেখায় এখন এক ম্যাচের জন্য তাকে বসে থাকতে হবে। অপরদিকে টানা দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখেছেন মিডফিল্ডার রাকিব হোসেন। ফলে বিশ্বনাথের মতো তিনিও খেলতে পারবেন।

তবে এ বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করছেন না কোচ অস্কার ব্রুজন। ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষের জায়গায় তার হাতে একাধিক বিকল্প রয়েছে। বিশ্বনাথের জায়গায় রহমত মিয়া, টুটুল হোসেন বাদশা, রিয়াদুল হাসান রাফিকে খেলাতে পারবেন তিনি। তবে দুই হলুদ কার্ড দেখে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হওয়া রাকিব মিডফিল্ডে কার্যকর ছিলেন।

দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা এ দুই খেলোয়াড়কে না পাওয়ার প্রসঙ্গে প্রধান কোচ অস্কার ব্রুজন বলেন, ‘তাদের দুই জন ছাড়াই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে মালদ্বীপ ম্যাচের জন্য। সময় আছে আর দুই দিন।’ আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাংলাদেশের ফুটবলারদের প্রতিনিয়ত কার্ড দেখা একটা অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়মিত একাদশের দুই ফুটবলারের শূন্যতা পূরণটাও মালদ্বীপের বিপক্ষে বড় চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের।

সবকিছু ছাপিয়ে আজ যদি বাংলাদেশ মালদ্বীপের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে পারে তাহলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানে উঠে আসতে পারবে। কারণ মালদ্বীপকে হারালে বাংলাদেশের পয়েন্ট হবে ৭। বর্তমানে দুই ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে আছে নেপাল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App