×

জাতীয়

আইনের খসড়া চূড়ান্ত : পাঁচ বছরের বেশি দায়িত্বে নয় পৌর মেয়ররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২১, ০৯:০৪ এএম

আইনের খসড়া চূড়ান্ত : পাঁচ বছরের বেশি দায়িত্বে নয় পৌর মেয়ররা

ফাইল ছবি

পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে আর দায়িত্বে থাকবেন না পৌরসভার মেয়ররা। এমন বিধান রেখে স্থানীয় সরকার আইন-২০২১ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে গতকাল সোমবার এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে পাঁচ বছর পার হওয়ার পর পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ৬ মাসের জন্য প্রশাসক হিসেবে একজনকে নিয়োগ দিতে পারবে সরকার। মন্ত্রিসভার অনুমোদিত এই আইনটি সংসদে পাস হওয়ার পর এখনো মেয়াদোত্তীর্ণ পৌরসভায় যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তাদের অপসারণে আর বাধা থাকবে না। এছাড়া যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ১২ মাস বকেয়া থাকলে পৌরসভা বাতিল হয়ে যাবে। বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

সর্বশেষ পৌরসভা আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০০৯ সালে। প্রসঙ্গত, আগামীতে জেলা পরিষদ আইন ও ইউনিয়ন পরিষদ আইনও সংশোধন হচ্ছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সংশোধিত আইন অনুযায়ী পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। পৌরসভার ‘সচিব’-এর নাম পরিবর্তন করে ‘পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা’ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এতদিন পৌর মেয়রদের মেয়াদ শেষ হলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করে যেতেন। কিন্তু সংশোধিত আইন অনুযায়ী, পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হলেই তাদের দায়িত্ব ছাড়তে হবে। নির্বাচিত মেয়র দায়িত্ব ছাড়ার পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত প্রশাসক পৌরসভার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কোনো অফিসার বা সরকার নির্ধারিত কোনো ব্যক্তি প্রশাসক হতে পারেন। প্রশাসক ৬ মাসের জন্য নিয়োগ পাবেন। এর মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে সিটি করপোরেশনে প্রশাসক নিয়োগের বিধান থাকলেও পৌরসভার ক্ষেত্রে এসব বিধান ছিল না। নতুন সংশোধনের মাধ্যমে সেই বিধান যুক্ত করা হলো।

সংশোধিত আইন অনুযায়ী, যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া এক বছরের বেশি সময় ধরে পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া রাখলে সেই পৌরসভা বাতিল করা হবে। এতদিন পৌরসভা হওয়ার ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে দেড় হাজার মানুষের বসবাসের বাধ্যবাধকতা ছিল। সংশোধিত খসড়ায় সেটা দুই হাজার করা হয়েছে। কোনো ইউনিয়ন পরিষদকে যদি পৌরসভায় রূপান্তরিত করা হয়, সেখানে যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা থাকেন, তার দায়িত্ব যদি পৌরসভার অর্গানোগ্রামে উপযুক্ত হয়, তাহলে তিনি সেখানে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংযুক্ত হবেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এর আগে আইনে ছিল, পরবর্তী পৌরসভা নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ওই কমিটি বা ওই চেয়ারম্যান দায়িত্বে থাকবেন। এর ফলে দেখা গেছে, অনেক জায়গাতে পাঁচ বছর পরে বিভিন্ন ইস্যুতে চেয়ারম্যানরা বা বিভিন্ন লোক মামলা মোকদ্দমা করে ১৫ বছর, ১৬ বছর, ১২ বছর ধরে চেয়ারম্যান থেকেছেন। যেহেতু আইনে কিছু পরিষ্কার ছিল না, সেজন্য কিছু করা যাচ্ছিল না। এটা নিয়ে এর আগেও মন্ত্রিসভাতেও আলোচনা হয়েছে বলে তিনি জানান।

বিশেষ খাতকে অত্যাবশ্যক ঘোষণার বিধান : অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন ২০২১ নামের আরেকটি আইনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। অ্যাসেনশিয়াল সার্ভিসেস অ্যাক্ট ১৯৫২ এবং অ্যাসেনশিয়াল সার্ভিসেস সেকেন্ড অর্ডিন্যান্স ১৯৫৮ মিলিয়ে নতুন আইনটি করা হয়েছে। এই আইনটি সংসদে পাস হলে বিশেষ পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত অত্যাবশ্যকীয় খাতে ধর্মঘট করা যাবে না। মালিকরা লেঅফও করতে পারবেন না। যদি কেউ করেন তাহলে তাদের শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

অত্যাবশ্যক বলতে ডাক, টেলিযোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, ইন্টারনেট, ডিজিটাল সেবা, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, রেলওয়ে, জল, স্থল বা আকাশপথে যাত্রী পরিবহন, বিমানবন্দর, স্থল বন্দর, নদী বন্দর পরিচালনা, কাস্টমসের মাধ্যমে পণ্য ছাড়করণ, প্রতিরক্ষা বা সশস্ত্র বাহিনীর কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত কার্যক্রম, খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহের সঙ্গে সম্পৃক্ত কার্যক্রম ইত্যাদি বোঝাবে। সরকার ছয় মাসের জন্য এসব খাতকে অত্যাবশ্যকীয় বলে ঘোষণা করতে পারবে। তখন সেখানে ধর্মঘট, লেঅফ বা কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। কেউ সেটি লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ড বা জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে। শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ২৫ হাজার বা ৫০ হাজার অথবা ৬ মাসের কারাদণ্ড হবে। মালিকদের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App