×

খেলা

আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে টাইগাররা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১০:২০ পিএম

আত্মবিশ্বাস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে টাইগাররা

তারণ্য নির্ভর টাইগারদের বিশ্বকাপ দল

দুয়ারে কড়া নাড়ছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ১৭ অক্টোবর বাছাইপর্বের মাধ্যমে এ টুর্নামেন্টের সপ্তম আসরের পর্দা উঠবে। উদ্বোধনী দিনেই স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। তাই বিশ্বকাপ পূর্ববর্তী অনুশীলন ক্যাম্পের জন্য রবিবার (৩ অক্টোবর) রাতেই ওমানের উদ্দেশে রওয়ানা হচ্ছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ওমানের মাস্কাট বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ দল যাবে বিকল্প পথে।

উত্তর আরব সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় শাহীনের প্রভাবে ওমানের মাস্কাট বিমানবন্দরে বিমান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এতে টাইগারদের নির্ধারিত সময়ে ওমান যাত্রা নিয়ে জেগেছিল শঙ্কা। তবে সেই শঙ্কার মেঘ কেটে গেছে। রবিবার রাতেই মাহমুদউল্লাহ বাহিনী ওমানের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে। তবে গন্তব্যস্থল হবে মাস্কাটের পরিবর্তে সালালা এয়ারপোর্ট। সালালা এয়ারপোর্ট থেকে মাস্কাট বিমানবন্দরের দূরত্ব বিমানপথে প্রায় দেড় ঘণ্টার।

মূলত মাস্কাট বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা যে ফ্লাইটগুলোর, সেগুলোই হাজার কিলোমিটার দূরের সালালা বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। বাংলাদেশ দল তাই পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ রাত পৌনে এগারোটার ফ্লাইটেই বিশ্বকাপের উদ্দেশে যাত্রা করবে। এছাড়া বাংলাদেশ এবার বিশ্বকাপে খেলতে গেছে অভিজ্ঞ ও তরুণ দলের মিশেলে। টাইগার দলে এবার রয়েছেন আটজন ক্রিকেটার। যারা প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গেছেন।

তারা হলেন- লিটন দাস, নাইম শেখ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, শামীম হোসেন পাটওয়ারী, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদি হাসান, শরিফুল ইসলাম ও নাসুম আহমেদ। তরুণদের দলে সুযোগ দিয়ে নিজেদের মধ্যে বিশ্বকাপ খেলার যে আত্মবিশ্বাস আছে এটিই দেখাল বাংলাদেশ।

যাদের সুযোগ দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে দুজন শামীম পাটোয়ারী ও পেসার শরিফুল ইসলাম অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে বিশ্বকাপ শিরোপা জয় করেছেন। এবার তাদের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়। দলের বাকি খেলোয়াড়রা কয়েক দিন আগে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের অংশীদার ছিলেন।

বাংলাদেশ দলে যে আটজনকে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ দেয়া হয়েছে তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই দলে জায়গা করে নিয়েছেন। ফলে বিশ্বকাপে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ভালো কিছুই আশা করতে পারে।

এদিকে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মোট ১৬টি দেশ খেলছে। এবার যে ১৬টি দেশ বিশ্বকাপ খেলবে এর মধ্যে ১৫টি দল আগেই বিশ্বকাপ খেলেছে। এবার বিশ্বকাপে অভিষেক হতে যাচ্ছে পাপুয়া নিউগিনির। এবারের বিশ্বকাপে প্রায় সব দলই বাংলাদেশের মতো তরুণদের নিয়ে দল গঠন করেছে।

আসলে টি-টোয়েন্টি খেলাটিই হলো তরুণদের নিয়ে। তাই তো দেশগুলো অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তরুণদের বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। এবারো এর ব্যতিক্রম হয়নি। আমরা যদি শীর্ষ কয়েকটি দেশের দিকে তাকাই তাহলে দেখব তারাও তরুণদের নিয়ে দল গঠন করেছে।

ভারত বিশ্বকাপের জন্য এবার যাদের ডেকেছে তাদের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন সাতজন নতুন খেলোয়াড়। পাকিস্তান তাদের দলটি একেবারে তরুণদের নিয়ে সাজিয়েছে। তাদের দলের চার ভাগের তিনভাগের বেশি খেলোয়াড় এবার প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে।

এদিকে বিশ্বকাপে অংশ নিতে ওমানে যাওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-মুশফিকুর রহিমসহ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা ১৭ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। জানা গেছে, তারা সবাই করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন। ফলে নির্ধারিত সময়ে ওমান যাত্রায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের আর কোনো বাধা নেই। এছাড়া টাইগার দলের প্রাণভোমরা সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান যোগ দেবেন আইপিএল শেষ করে। আর নিজ নিজ দেশে অবস্থানরত হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, ব্যাটিং কোচ অ্যাশওয়েল প্রিন্স, পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসন, স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ, ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক, ফিজিও আর ট্রেনার সবাই ছুটি শেষে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন ওমানে। এরপর সেখানে পৌঁছে শিষ্যদের সঙ্গে কাজ শুরু করবেন কোচরা।

এদিকে ওমান পৌঁছে শুধু একদিন কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনীকে। এরপর ৫, ৬ ও ৭ অক্টোবর দুপুর দেড়টায় ওমানে অনুশীলন করবে টাইগাররা। সেখান থেকে ৯ অক্টোবর লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা উড়াল দেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে ১০ অক্টোবর কোয়ারেন্টাইন শেষে পরেরদিন অনুশীলনে নামবে মুশফিকরা।

১২ অক্টোবর আবুধাবিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়। ১৩ অক্টোবর ফের অনুশীলনের পর ১৪ অক্টোবর দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আয়ারল্যান্ড। এরপর দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে ১৫ অক্টোবর ওমান ফিরে যাবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। সেখানে ১৬ অক্টোবর ফ্লাডলাইটের আলোর নিচে অনুশীলন করবে তারা। ১৭ অক্টোবর বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়।

এরপর ১৯ অক্টোবর বাছাইপর্বে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় স্বাগতিক ওমানের মুখোমুখি হবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। পরে ২১ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাপুয়া নিউগিনি। এই ম্যাচটি হবে স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়। বাছাইপর্বের বাধা উতরাতে পারলে টাইগাররা যাবে সুপার টুয়েলভে (সুপার ১২)। সেখানে ২৫ অক্টোবর শারজাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। ২৭ অক্টোবর টাইগারদের প্রতিপক্ষ গ্রুপ ‘এ’-র রানার্সআপ দল। ৩ নভেম্বর দুবাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। ৫ ও ৭ নভেম্বর খেলবে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। ম্যাচগুলো হবে দুবাই ও শারজাতে।

এদিকে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী প্রতি গ্রুপের চার দলের মধ্য থেকে দুই দল যাবে সুপার টুয়েলভে। যেখানে আগে থেকেই আছে ৮টি দল। সুপার টুয়েলভে ম্যাচ হবে ৩০টি। এখানে দলগুলোকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে, ছয়টি করে দল থাকবে এক গ্রুপে।

বাংলাদেশের এখন আগে লক্ষ্য থাকবে বাছাইপর্বের বাধা টপকে সুপার টুয়েলভে জায়গা করে নেয়া। এ বিশ্বকাপের আগে ২০১৪ ও ২০১৬ সালের বিশ্বকাপেও বাছাইপর্ব খেলে বাংলাদেশ। আর দুইবারই বাংলাদেশ বাছাইপর্বের বাধা খুব সহজে টপকে গেছে। এবারো এমন কিছুই হবে। কারণ যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ বাছাইয়ের ম্যাচ খেলবে তারা সবাই শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App