×

খেলা

বিশ্বকাপে ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারেন চার টাইগার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২১, ১০:৩০ পিএম

বিশ্বকাপে ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারেন চার টাইগার

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

বিশ্বকাপে ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে পারেন চার টাইগার

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিম ও মোস্তাফিজুর রহমান।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার দিন ঘনিয়ে আসছে। আর মাত্র ১৫ দিন পর আরব আমিরাতে শুরু হবে চার-ছক্কার লড়াই। ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বেশ ভালো সাফল্য পেলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সফলতার গল্প নেই। বিশ্বকাপ শুরু হতে দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, সমর্থকরা হিসাব-নিকাশ করছেন, আলোচনা করছেন তাদের দল কেমন করবে। বাংলাদেশি সমর্থকরাও এদিক দিয়ে পিছিয়ে নেই। তারা এবার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ এবার ভালো কিছু করবে।

তাদের স্বপ্ন দেখাটা অযৌক্তিক নয়। কারণ বিশ্বকাপের জন্য এবার বাংলাদেশ দলে যাদের রাখা হয়েছে তারা প্রত্যেকেই নিজেদের জায়গা থেকে সেরা। বলা যায় এবারের বাংলাদেশ দলটা বেশ ব্যালেন্সড। টাইগারদের স্কোয়াডের মধ্যে সবাই মোটামুটি হাল ধরার ক্ষমতা রাখেন। তবে এদের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি যাদের ওপর ভরসা করতে পারেন তারা হলেন- পেসার মোস্তাফিজুর রহমান, অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারা যে কোনো মুহূর্তে ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন। বলা যায় বাংলাদেশ দলে ম্যাচ উইনার তারা।

মোস্তাফিজুর রহমান: বোলিং বিভাগে বাংলাদেশের এখন সবচেয়ে বড় আশার স্থল হলেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বাংলাদেশের এখন সেরা বোলার। প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের ধসিয়ে দেয়ার জন্য এখন তার ওপরই ভরসা করছে টাইগার সমর্থকরা। মোস্তাফিজ এখন খেলছেন আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। বলতে গেলে এখন আইপিএল কাপাচ্ছেন তিনি। আইপিএলে নিয়মিত উইকেট তুলে নেয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষ দলের রানের টুটি চেপে রাখছেন। দেশসেরা এ টাইগার পেসার আইপিএলে এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত রাজস্থানের হয়ে ১১টি ম্যাচ খেলেছেন। আর এই ১১ ম্যাচ খেলে তিনি উইকেট তুলে নিয়েছেন ১৩টি। বর্তমানে আইপিএলে ডেথ ওভারে রান আটকে রাখার দিক দিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন তিনি। স্থগিত হওয়া আইপিএলের বাকি ম্যাচগুলো খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছেন তিনি। সেখানেই এখন নিজের ভেলকি দেখাচ্ছেন মোস্তাফিজ। ম্যাচের শেষ দিকে রান আটকানোর জন্য তার ওপরই আসল ভরসা রাজস্থানের পুরো দলের। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হবে আরব আমিরাতের মাটিতে। ফলে বাংলাদেশের সমর্থকরা এখন স্বপ্ন দেখছেন তারা ভালো কিছু করবেন বিশ্বকাপে।

আইপিএলে খেলতে যাওয়ার আগে মোস্তাফিজ ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ খেলেন। বাংলাদেশের এ ২টি সিরিজ জয়ে বড় ভূমিকা রাখেন তিনি। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপটি হবে মোস্তাফিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। ২০১৬ সালে ভারতের মাটিতে হওয়া সর্বশেষ চার-ছক্কার লড়াইয়ে খেলেন তিনি। সেবার ৩টি ম্যাচ খেলে মোস্তাফিজ শিকার করেন ৯টি উইকেট। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২টি উইকেট, ভারতের বিপক্ষে ২টি উইকেট ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫টি উইকেট শিকার করেন। এখন মোস্তাফিজ যে ফর্মে আছেন। এটি যদি তিনি বিশ্বকাপেও ধরে রাখতে পারেন তাহলে বাংলাদেশের জন্য তা হবে বিশাল ব্যাপার।

সাকিব আল হাসান: ব্যাটিং ও বোলিং উভয় ক্ষেত্রেই সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের আশা-ভরসার স্থল। যদিও সাম্প্রতিক সময়ে তার মাঠের দিনগুলো ভালো যাচ্ছে না। এমনকি আইপিএলে খেলতে গেলেও দলে তার জায়গা হচ্ছে না। বাংলাদেশ আইসিসির সর্বশেষ কোনো ইভেন্টে খেলে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে। সেই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে পুরো বিশ্বকাপে হয়েছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। আর সেই ২০১৯ সালেও আইপিএল খেলতে গিয়ে বসে থাকতে হয়েছিল সাকিবকে। কিন্তু পরবর্তী সময় নিজের ভেলকি দেখান তিনি। এবারো এমন কিছু হবেই বলা প্রত্যাশা সব টাইগার সমর্থকদের। সাকিব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ম্যাচ খেলেছেন ২৪টি। এই ম্যাচগুলো খেলে তিনি ৩০টি উইকেট শিকার করেছেন। অপরদিকে রান করেছেন ৫৬৭।

মুশফিকুর রহিম: উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে তার ভক্তরা ডাকেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল হিসেবে। কারণ তার ব্যাটে বাংলাদেশ ভরসা করতে পারে। দল বিপদে পড়ার পর অসংখ্যবার তিনি বাঁচিয়েছেন। ২০১৯ সালে ভারতের মাটিতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দিল্লিতে হওয়া ম্যাচটিতে ঐতিহাসিক জয় পায়। সে ম্যাচটিতে তিনি ৪৩ বল খেলে ৬০ রান করেন। এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে প্রায় জয় এনে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাংলাদেশের কপাল খারাপ ছিল। কারণ ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচটিতে বাংলাদেশ মাত্র ১ রানে হেরে যায়। মুশফিকুর রহিম সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই সিরিজের নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। তবে আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোতে প্রায় সময়ই জ্বলে ওঠেন মুশফিক। ফলে এবারো তিনি ভালো কিছু করবেন বলে সবার প্রত্যাশা। মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত মুশফিকুর রহিম টাইগারদের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছেন ২৫টি ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোর মধ্যে তিনি ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন ২০টি ম্যাচে। রান করেছেন ২৫৮। এক ইনিংসে তার সর্বোচ্চ রান ৪৭।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ: টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ হলেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের অন্যতম বড় কাণ্ডারি। মুশফিকের মতো তিনিও দল বিপদে পড়লে মাথা ঠাণ্ডা রেখে বেশ ভালোভাবে খেলতে পারেন। বাংলাদেশ দল এখন পর্যন্ত সব ফরমেট মিলিয়ে যে কটি ম্যাচে জয় পেয়েছে সেটিতেই অবদান রেখেছেন মাহমুদউল্লাহ। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে নিয়মিত পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ বাংলাদেশের হয়ে বিশ্বকাপে মোট ২২টি ম্যাচ খেলেছেন। এর মধ্যে ব্যাট করেছেন ১৮টি ম্যাচে। এ ম্যাচগুলো খেলে তিনি রান করেছেন ১৯৪। অপরদিকে বল হাতে তিনি তুলে নিয়েছেন ৮টি উইকেট। মাহমুদউল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ে যে পারফরম্যান্স করছেন এটি যদি বিশ্বকাপেও ধরে রাখতে পারেন তাহলে বাংলাদেশের সাফল্য পাওয়া খুব কঠিন কিছু হবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App