×

খেলা

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথ শুক্রবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫৮ পিএম

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বৈরথ শুক্রবার

বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন ও অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া

দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৩তম আসর মাঠে গড়াচ্ছে আজ। মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে হবে এবারের আসর। আর প্রথম দিনেই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে দুর্বল দল শ্রীলঙ্কা। শুক্রবার উদ্বোধনী দিনে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বিকাল ৫টায় মাঠে নামবে। টি-স্পোর্টস ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচের স্বাগতিক ও ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ খেলতে নামবে নেপালের বিপক্ষে। ম্যাচটি রাত ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচটিকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। তবে এদিন দলের সঙ্গে অনুশীলনে যোগ দিতে পারেননি সোহেল রানা। মালদ্বীপে গিয়ে তার জ্বর এসেছে। ফলে তাকে ছাড়াই অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ। জানা গেছে জ্বরের কারণে আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিতেও থাকবেন না তিনি। বৃহস্পতিবার মালে স্টেডিয়ামে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের কোচ অস্কার ব্রুজন সোহেলের বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন সোহেল না থাকলেও বাংলাদেশকে খুব বেশি সমস্যায় পড়তে হবে না। এ ব্যাপারে প্রধান কোচ বলেন, সোহেলের বিকল্প আমাদের রয়েছে। আমরা ম্যাচের দিকেই নজর রাখছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাচটিতে কোচ অস্কার ব্রুজন ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলাতে চান। এই ফরমেশনে অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে সোহেল গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া সোহেল সম্পর্কে বলেন, সে অবশ্যই ভালো খেলোয়াড়। তবে তার জায়গা নেয়ার মতো খেলোয়াড় আমাদের রয়েছে। কোচ অস্কার ৪-৩-৩ ফরমেশনে সোহেলের জায়গায় সাদ উদ্দিনকে খেলানোর সম্ভাবনা বেশি। তাছাড়া বৃহস্পতিবার দলের সঙ্গে অনুশীলন করেননি ডিফেন্ডার রেজাউল করিম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটিকে সামনে রেখে আজ অনুশীলনে প্রায় দুই ঘণ্টা সময় ব্যয় করে বাংলাদেশ। পর্যন্ত তিনি ম্যাচের একাদশ ঠিক করেননি। শুক্রবার ম্যাচের আগে তিনি ঠিক করবেন লঙ্কানদের বিপক্ষে জামাল ভুঁইয়ার সঙ্গে বাকি কোন দশজনকে মাঠে নামাবেন তিনি। এদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ যেহেতু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলবে তাই জয়ের ব্যাপারে বাংলাদেশ বেশ আশাবাদী। কারণ একে তো শ্রীলঙ্কা বাংলাদেশের চেয়ে শক্তির বিচারে পিছিয়ে আছে। তার ওপর তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সংখ্যাও অন্য দলগুলোর চেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ লঙ্কানদের বিপক্ষে সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছে ১৬টি। এর মধ্যে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা জয়ই তুলে নিয়েছে ১০টি ম্যাচে। হেরেছে ৪টি ম্যাচে। আর বাকি দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। অবশ্য ভয়ের কথা হলো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে ৪টি ম্যাচে হেরেছে তার মধ্যে সর্বশেষটি হেরেছে ২০১৮ সালে। আর বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সর্বশেষ ওই ২০১৮ সালেই মুখোমুখি হয়েছিল। সেবার লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা ম্যাচটিতে হেরে যায় ১-০ গোলের ব্যবধানে। অবশ্য এটি ছিল একটি প্রীতি ম্যাচ। সাফে সর্বশেষবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ লড়ে ২০০৯ সালে। সেবার লঙ্কানদের বাংলাদেশ হারিয়েছিল ২-১ গোলের ব্যবধানে। সাফে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ সব মিলিয়ে ম্যাচ খেলেছে ৪টি । এর মধ্যে জয় পেয়েছে ৩টি ম্যাচে। আর বাকি একটি ম্যাচে হেরেছে। সেই হারটি এসেছিল ২০০৮ সালে। ওই আসর থেকেই মূলত পেছাতে থাকে বাংলাদেশের ফুটবল। ফিফার সর্বশেষ প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হলো ১৮৯। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অবস্থান ২০৫ নাম্বারে। দক্ষিণ এশিয়ান ফুটবলে বাংলাদেশের অবস্থান হলো পঞ্চম। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা সপ্তমস্থানে। মানে একদম তলানিতে। সবদিক বিবেচনা করে শুক্রবারের ম্যাচটিতে বাংলাদেশই ফেবারিট। যদি না বড় কোনো অঘটন না ঘটে তাহলে লঙ্কানদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটিতে নিশ্চিতভাবেই জয় পাবে জামাল-সুফিলরা। এখন পর্যন্ত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১১টি আসর হয়েছে। এর মধ্যে একবারই শিরোপা জয় করতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। সেটি ২০০৩ সালে। সেবার ঘরের মাঠে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে খেলতে নামে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর আর কখনো জেতা হয়নি শিরোপা। শিরোপা জয়ের আগে ও পরের দুই আসরেও ফাইনালে খেলে বাংলাদেশ। সেটি ১৯৯৯ ও ২০০৫ সালে। কিন্তু দুবারই তাদের রানার্সআপের শিরোপা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এর মাধ্যমে সাফের টানা ৩টি আসরে বাংলাদেশ ফাইনালে খেলে। কিন্তু পরবর্তীতে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আর নিজেদের দাপট ধরে রাখতে পারেনি। ২০০৫ সালে ফাইনালে খেলার পর বাংলাদেশ সাফের সেমিতে জায়গা করে নিতে সমর্থ হয় ২০০৯ সালে। সেবার ঢাকার মাঠে হয় এ প্রতিযোগিতাটি। এখন বাংলাদেশ চাইছে সাফে নিজেদের শিরোপার খরা কাটাতে। এ মিশন নিয়েই দেশ ছেড়েছেন জামালরা। মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া জানিয়ে গেছেন আশার কথা। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশ কেমন করে। ১৯৯৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছিল সার্ক গোল্ডকাপ নামে। প্রথম আসরের স্বাগতিক দেশ ছিল শ্রীলঙ্কা। ১৯৯৭ থেকে দক্ষিণ এশীয় শ্রেষ্ঠত্বের এ প্রতিযোগিতার নাম হয়ে যায় ‘সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ’। এ নামে প্রথম আসরটি আয়োজন করে নেপাল। বাংলাদেশ সেবার বাদ পড়েছিল গ্রুপপর্ব থেকেই। প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের সঙ্গে ড্র করার পর ভারতের কাছে বাংলাদেশ হারে ৩-০ গোলে। এরপর বাংলাদেশ গ্রুপপর্ব থেকে বাদ হতে হয়েছে ২০০৮ সালে কলম্বো আসরে, ২০১১ সালে দিলি আসরে, ২০১৩ সালে কাঠমান্ডু আসরে, ২০১৫ সালে কেরালা আসরে ও ২০১৮ সালে নিজ ঘরের মাঠে অর্থাৎ ঢাকায়। কিন্তু এবার ভালো কিছু হবে এমন প্রত্যাশা সবার। সাফের এবারের আসরে বাংলাদেশ কেমন করতে পারে সেটি আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচেই অনেকটা বোঝা যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App