×

জাতীয়

রূপগঞ্জ ট্রাজেডি: ৩ মাস পর ছেলের মরদেহ পেলেন বাবা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৯:০২ পিএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের হাসেম ফুড কারখানায় অগ্নিকান্ডের প্রায় ৩মাস পর ছেলের লাশ বুঝে পেলেন এক অভাগা বাবা।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে নিহত ইসমাইল হোসেন মহিউদ্দিনের (১৮) লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে নারায়ণগঞ্জ জেলা সিআইডি পুলিশ। সবশেষ ছেলের লাশ বুঝে পেয়ে কিছুটা হলেও মনকে সান্ত্বনা দিতে পারছেন বলে জানান বাবা মো. ইউসুফ।

এ নিয়ে গত ৮ জুলাই রুপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ৪৬জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলো। নোয়াখালী হাতিয়া উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের কৃষক মোঃ ইউসুফের ছেলে ইসমাইল। ৩ছেলে ১মেয়ের মধ্যে সবার বড় ছিল সে।

ইসমাইলের বাবা ইউসুফ জানান, ইসমাইল নাটোরের একটি সেমাই তৈরির কারখানায় কাজ করতো। দুর্ঘটনার দেড় মাস আগেই সে সাড়ে ৯ হাজার টাকা বেতনে হাসেম ফুড কারখানা চতুর্থ তলার সেমাই কারখানায় চাকরী নেয়। দুর্ঘটনা দুইদিন আগেও তার সাথে ফোনে কথা হয়েছিলো ছেলের। কারাখানায় দুর্ঘটনার খবর শুনতে পেরে তিনি ওই দিনই গ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জে আসেন। তবে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন সন্ধান পাননি। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ডিএনএ নমুনা দেন। গত ১ সপ্তাহ আগে পুলিশ তাকে ফোন করে জানায় তার ছেলের লাশ সনাক্ত হয়েছে। লাশ নিতে আজ বুধবার তাকে ঢাকা মেডিকেলে আসতে বলা হয়।

তিনি বলেন, পরিবারের খরচ চালাতে একা খুব কষ্ট হতো। এজন্যই ছেলে কারখানায় কাজ নিয়েছিল। দুর্ঘটনার পর থেকে ছেলের শোকে ছেলের মা নুরবানু অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরাতো ছেলের লাশের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম ছেলের লাশ আর পাবোই না। তারপরও আজ লাশটি পেয়ে মনকে কিছুটা সান্ত্বনা দিতে পারছি। গ্রামের কবরস্থানে ছেলের লাশ দাফন করবো।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক মো. আতাউর রহমান জানান, ডিএনএ প্রোফাইলিং ম্যাচিং করার মাধ্যমেই এই লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়। এটি নিশ্চিত হতে পেরে আজকে লাশটি তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলো।

তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৪৮টি লাশের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিলো। সেখান থেকে প্রথমে ২৪টি লাশ এবং পরবর্তীতে ২১টি লাশ হস্তান্তর করা হয়। সবশেষে আজ একটি লাশ হস্তান্তর করা হলো। এখনো বাকি আরো দুটি লাশ ডিএনএর ফলাফল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

দুর্ঘটনার একমাস পর কারখানা থেকে পৃথক ভাবে আরো ৫টি কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। সে কঙ্কাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছিলো। সেগুলো থেকেও ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়েছিলো। সেগুলোর কার্যক্রম প্রকিয়াধীন রয়েছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা। লাশ হস্তান্তরের সময় জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে লাশের দাফন কাফনের জন্য স্বজনদের কাছে ২৫হাজার টাকা দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য গত ৮ জুলাই বিকেলে রুপগঞ্জ উপজেলার কর্ণগোপ এলাকায় হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ কারখানার এই ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App