×

ফুটবল

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপে জামালরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০৯ এএম

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মালদ্বীপে জামালরা

মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ১৩তম আসরে অংশ নিতে মঙ্গলবার ঢাকা ছাড়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা

দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। আসরটিতে বাংলাদেশ শেষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০৩ সালে। এরপর সর্বশেষ ২০০৯ সালে সাফের সেমিতে খেলে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ২০০৯ সালের পর সাফের আরো চারটি আসর হয়েছে যথাক্রমে ২০১১, ২০১৩, ২০১৫ ও ২০১৮ সালে। কিন্তু প্রতিবারই বাংলাদেশ গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। মানে প্রায় এক যুগ ধরে সাফের শেষ চারেও খেলা হয়নি বাংলাদেশের। দীর্ঘদিন ধরে সাফে না পাওয়া সাফল্য এবার পেতে চায় বাংলাদেশ। আর এ স্বপ্ন নিয়ে মঙ্গলবার তারা মালদ্বীপে পৌঁছেছে। এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ হবে মালদ্বীপে।

দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা ছেড়ে গেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। এরই মধ্যে মালদ্বীপে পৌঁছেছেন জামাল-রেজাউলরা। ঢাকা ছাড়ার আগে বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া শুনিয়েছেন আশার কথা। প্রতিটি ম্যাচকেই দেখছেন ফাইনাল হিসেবে। ঢাকা ছাড়ার আগে জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘অনুশীলনে খেলোয়াড়রা কঠোর পরিশ্রম করছেন। খেলোয়াড়রা নিজেদের সেরাটা দিতে মরিয়া। আমরা কিছু একটা করে দেখাতে চাই। লক্ষ্য সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’ বাংলাদেশ অধিনায়ক আরো বলেন, ‘আমরা আশাবাদী সাফে সাফল্য পেতে। কোচও আমাদের মতো ট্রফি জিততে চাইছেন। আশা করছি, সেই লক্ষ্যে আমরা পৌঁছাতে পারব।’

এর আগে চারটি সাফের গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। গত চার আসরে ১২ ম্যাচ খেলে লাল-সবুজের দল জয় পেয়েছিল মাত্র তিনটিতে, ড্র দুটি এবং হেরেছে সাত ম্যাচে। ২০০৩ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর কেটেছে ১৮টি বছর, সাফল্য নেই। অবশ্য প্রতিবারই দক্ষিণ এশিয়ার সেরা এই টুর্নামেন্টে ট্রফি জয়ের স্বপ্ন থাকে। এবারও শিরোপার স্বপ্ন।

এবারের আসরের উদ্বোধনী দিন ১ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ৪ অক্টোবর সাফের সবচেয়ে সফল দল ভারতের মোকাবিলা করবে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। ৭ অক্টোবর জামালরা লড়বে সাফের বর্তমান ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ও স্বাগতিক মালদ্বীপের বিপক্ষে। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ঢাকায় হয় সাফের আসর। সেবারই দীর্ঘদিনের অপক্ষোর অবসান ঘটিয়ে শিরোপা নিজ দেশে নিয়ে যায় দ্বীপ রাষ্ট্রটি। এরপর ১৩ অক্টোবর নেপালের বিপক্ষে লড়বে লাল-সবুজের দল। আর ১৬ অক্টোবর হবে ফাইনাল। দলগুলোর মধ্যে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে ভারত (১০৭), এরপর মালদ্বীপ (১৬০) ও নেপাল (১৬৮)। বাংলাদেশের (১৮৯) চেয়ে পিছিয়ে কেবল শ্রীলঙ্কা (২০৫)।

এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এ ম্যাচটিতে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকবে। কিন্তু পরের ম্যাচগুলোতে বাংলাদেশকে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষা। এদিকে সাফে এবার পাঁচটি দেশ অংশ নিচ্ছে। যেহেতু পাঁচটি দেশ অংশ নিচ্ছে তাই এবার ফরমেটে আনতে হয়েছে পরিবর্তন। শেষবারও সেমিফাইনাল ম্যাচ থাকলে এবার গ্রুপপর্বের ম্যাচ শেষে সরাসরি ফাইনাল হবে। প্রত্যেক দল প্রত্যেকের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর গ্রুপপর্ব শেষে যে দুটি দল পয়েন্ট টেবিলের প্রথম ও দ্বিতীয়স্থানে থাকবে তারা ফাইনালে জায়গা করে নেবে এবং শিরোপার জন্য লড়াই করবে।

যেহেতু কোনো সেমিফাইনাল নেই। তাই গ্রুপপর্বের প্রত্যেকটি ম্যাচ হবে ফাইনালের মতো। মানে কোনো ম্যাচে খারাপ করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ চারটি ম্যাচ খেলবে এবং চারটিতেই ভালো ফলাফল করতে হবে। তবেই সেরা দুইয়ে থেকে ফাইনালে জায়গা করে নিতে পারবে। জামাল ভূঁইয়াও দেশ ছাড়ার আগে এ কথাটিই বলে গেছেন। তারা প্রত্যেকটি ম্যাচকে ফাইনাল হিসেবে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে কোনো সাফল্য পাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২০০৩ সালের পর কখনো কোনো শিরোপা জেতা হয়নি তাদের। আর তাই তো দিনে দিনে পিছিয়ে গেছে দেশের ফুটবল। সাফের শিরোপা যখন বাংলাদেশ জেতে তখনো দেশীয় ফুটবলের প্রতি মানুষের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। এরপর ক্রিকেটের সাফল্যের কারণে দেশের ফুটবল ঢাকা পড়ে যায়। এখন ফুটবলের পুরনো যৌবন ফিরিয়ে আনতে হলে বাংলাদেশকে ভালো কিছু করতেই হবে। আর এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ বড় একটি সুযোগ।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পারফরমেন্স অবশ্য ভালো না। সাফে খেলতে যাওয়ার আগে কিরগিজস্তানে গিয়ে তিন জাতি ফুটবল টুর্নামেন্টে খেলে বাংলাদেশ। সেখানে একটি ম্যাচেও জয় আসেনি। উল্টো কিরগিজস্তানের অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে একটি আনঅফিসিয়াল ম্যাচেও হারের স্বাদ পেতে হয়। এর জেরে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশের দায়িত্বে থাকা জেমি ডে কে সরিয়ে দেয়া হয় কোচের দায়িত্ব থেকে। তার জায়গায় নিয়োগ দেয়া হয় বসুন্ধরার কোচ অস্কার ব্রুজনকে। এখন ব্রুজনের অধীনে বাংলাদেশ কেমন সাফল্য পায় এটিই দেখার বিষয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App