ওষুধের কৃত্রিম সংকট : সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:০৫ এএম
ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও ঠাণ্ডাজনিত রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব ওষুধের সংকটের খবর গণমাধ্যমে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকট উদ্বেগজনক। নাপা, নাপা এক্সট্রা, এইচ প্লাস, নাপা সিরাপ ও জিংক ট্যাবলেটসহ প্যারাসিটামল জাতীয় কয়েকটি কোম্পানির ওষুধ সংকট দেখা দিয়েছে। করোনাকালীন এই সময়ে ওষুধ না পেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। চাহিদার সঙ্গে বেড়েছে প্রয়োজনীয় ট্যাবলেটের দাম। রংপুর অঞ্চলের দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ঝালকাঠি ও সিলেটসহ সারাদেশে হবিগঞ্জ, যশোর, বাঞ্ছারামপুর, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহে সংকটের খবর আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় ওষুধের সরবরাহ কম থাকায় সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া অনেক মানুষ অপ্রয়োজনে আগে থেকেই এসব ওষুধ ঘরে মজুত রাখছেন। এ প্রবণতাকেও সংকটের জন্য দায়ী করছেন তারা। ওষুধ কোনো বিলাসী ভোগ্যপণ্য নয়। এর ওপর মানুষের জীবন-মরণ নির্ভর করে থাকে। এ ক্ষেত্রে ক্রেতার স্বার্থ রক্ষা করাই অনেক বেশি জরুরি। ওষুধের মূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে কোম্পানিগুলোর উচ্চাভিলাষী বিপণন নীতি ও অধিক মুনাফা করার প্রবণতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। ওষুধ কোম্পানিগুলোর অতি মুনাফা প্রবণতার বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এটি অনৈতিক। সরকারকে অবিলম্বে এদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী অসাধু ব্যবসায়ীদের এই মনোভাব অমানবিক। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের সরবরাহ চালু রাখা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেই প্রত্যাশা। উদ্বেগের বিষয়, ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে দেশে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। কার্যত প্রায় গোটা ওষুধের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে ওষুধ শিল্প মালিক সমিতি। সরকারের আইনের দুর্বলতার কারণেই ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য আইন সংশোধন করা প্রয়োজন। বৈশ্বিক এ দুর্যোগের সময় কেউ যদি ওষুধের সংকট তৈরি করে বা বেশি দাম নেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ পেলে সেখানে অভিযান পরিচালনা করতে হবে।