সরকার গোটা রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, কয়েকদিন আগে আমি পত্রিকায় দেখলাম, সাময়িক বিচারপতি নিয়োগ হয়েছে। এটাও দলীয়ভাবে হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে লোক নেয়া হচ্ছে সব দলীয় ভিত্তিতে। যেখানে চাকরির জন্য যাবে সেখানে দলীয় ভিত্তিতে নেয়া হয়। এভাবে পুরো প্রশাসনকে তারা (সরকার) দলীয়করণ করে ফেলেছে, রাষ্ট্রকে দলীয়করণ করে ফেলেছে।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ স্মৃতি পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের পাঁচ শতাধিক নেতা গুম হয়ে গেছেন, সহস্রাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তারপরও তারা আবার নির্বাচনের কথা বলে, গণতন্ত্রের কথা বলে। আরে আপনারা জেনে-শুনে এমন একটা অবস্থা তৈরি করেছেন যে, এখানে কেউ যেন ভোট দিতে না পারে। কেউ যেন কোনো বিচার না পায়। আজকে আপনি যে কোর্টেই যান সেই কোর্টে বিএনপি দেখলেই তার জন্য আলাদা বিচার, আর বিএনপির বাইরে আলাদা বিচার। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে ‘জোটবদ্ধ’ আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ শুধু বিএনপির জন্য নয়, আজকে দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে, কাজের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জোট বাঁধতে হবে, বিভক্তি নয়। আমাদের নিজেদের মধ্যে ঐক্যকে আরো সুদূঢ় করতে হবে। সমস্ত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে একটি গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ-ফ্যাসিস্ট-দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

সংগঠনের আহবায়ক গাজীপুর জেলার আহবায়ক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে ও জেলা নেতা মজিবুর রহমান ও সাখাওয়াত হোসেন সবুজের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব শহিদুল ইসলাম বাবুল, গাজীপুর বিএনপির ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, খন্দকার আজিজুল রহমান পেয়ারা, হেলাল উদ্দিন, ভিপি ইব্রাহিম, আবু তাহের মসুল্লী, রাশেদুল হক এবং প্রয়াত হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান বক্তব্য রাখেন।