×

জাতীয়

দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে: রেহমান সোবহান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:১৩ পিএম

দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে: রেহমান সোবহান

সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।

দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে: রেহমান সোবহান

শনিবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ছবি: ভোরের কাগজ

দেশে সুশাসনের মারাত্মক ঘাটতি আছে বলে মনে করেন সিপিডির চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান। এজন্য গ্রাহকের টাকা লোপাটের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন তিনি। রেহমান সোবহান বলেন, ই–কমার্সের মাধ্যমে প্রথমবার এ ঘটনা ঘটেনি। এর আগেও বহুবার একই ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু বিচার হয়নি।

শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় অনলাইন বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত উদ্যোক্তা ও আইনজীবীরা বলেন, দেশের অনলাইন বাণিজ্য বা ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণে নতুন কোনো আইন প্রয়োজন নেই। একই সঙ্গে ই-কমার্সে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন করে আলাদা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন তারা। সংশ্লিষ্টরা বলেন, নতুন আইন কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন না করে বরং সরকারের উচিত হবে বিদ্যমান যেসব আইন আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে নজর দেয়া; একই সঙ্গে সরকারের এক সংস্থার সঙ্গে আরেক সংস্থার সমন্বয় করা।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন আইনজীবী তানজীব উল আলম, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, চালডাল ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিম আলিম, শপ আপের চিফ অব স্টাফ জিয়াউল হক, অ্যাসিক্স বিডির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফসানা আসিফ, ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহিদসহ অন্যরা।

ওয়াসিম আলিম বলেন, ই–কমার্স নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও আলাদা কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থা নেই। সরকারের বিদ্যমান যেসব সংস্থা আছে, তাদের মাধ্যমে নজরদারি বাড়ালে সেটি আরও বেশি কার্যকর হবে। ফাহিম মাশরুর বলেন, ই–কমার্সে শৃঙ্খলা আনতে হলে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও কার্যকর করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ই–কমার্স নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বড় ভূমিকা ছিল। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চোখের সামনে এসব ঘটনা ঘটেছে। এখানে তাদের অবহেলা ছিল স্পষ্ট। ব্যাংকগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ফাহিম মাশরুর বলেন, দেশে বড় একটি সমস্যা বেকারত্ব। অসংখ্য তরুণ বেকার। কর্মহীন। তারাই ই–কমার্সে বিনিয়োগ করছে। চাকরি না থাকলে তো এখানে আসবেই। ব্যাংকের সুদের হার কম। শেয়ারবাজারও নিরাপদ নয়। তাহলে তরুণ জনগোষ্ঠী যাবে কোথায়? একটা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করে ফেললাম, আর সঙ্গে সঙ্গে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে—এমনটা ভাবা ঠিক হবে না।

জিয়াউল হক বলেন, এই যে ব্যাংকিং চ্যানেলে এত টাকা লেনদেন হলো, ব্যাংকের ভূমিকা কী ছিল। ই–কমার্সকে যদি নজরদারি করা হয়, তাহলে নতুন আইনের প্রয়োজন হবে না। আফসানা আসিফ বলেন, আমাজনের সঙ্গে আমাদের দেশের ই–কমার্সের বড় পার্থক্য হলো এখানে পণ্য ডেলিভারিতে অনেক সময় নেয়। তাছাড়া আমাজনের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা আছে, যেটা আমাদের দেশে নেই।

সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, ই–কমার্স নতুন একটি শিল্প। ই–কমার্সে যা কিছু ঘটেছে, তাতে একক কাউকে দোষ না দিয়ে বলা যায়, এখানে সবারই দোষ ছিল। যে টাকা লোপাট হয়েছে, এখন জরুরি সে টাকা ফিরিয়ে আনা।

আবদুল ওয়াহিদ বলেন, ‘আমরা তিন বছর আগেই সরকারকে বলেছিলাম এ ধরনের একটা জটিলতা তৈরি হতে পারে। ই–কমার্সে যে স্বচ্ছতা নেই, তা সরকারকে জানানো হয়েছিল। ইভ্যালিসহ অন্যদের বিজনেস মডেল নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু তখন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’ ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মধ্যে বড় ধরনের সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে জানান তিনি।

তানজীব উল আলম বলেন, বিদ্যমান আইনেই সব সমস্যার সমাধান আছে।

প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতার ঘাটতি স্পষ্ট। প্রতিযোগিতা কমিশন আছে। তাদের আইন আছে। তাদের তৎপর হওয়া দরকার ছিল। কিন্তু হয়নি। ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রস্তুত ছিল না। তিনি আরও বলেন, যেহেতু এ খাতের কেউ নতুন করে আইন চায় না, তাই সরকারের আগ বাড়িয়ে উচিত হবে না নতুন করে কোনো আইন কিংবা নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করা। নতুন প্রতিষ্ঠান করলে বিদ্যমান প্রতিষ্ঠান আরও দুর্বল হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App