আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর টিকার নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তারপর টিকা প্রদান প্রক্রিয়া শুরু হলে ১ম ডোজ দিতে সাত-আট দিন লাগবে। টিকা ছাড়াই যদি হলে উঠানো যেতো তাহলে এতোদিন কেন বন্ধ রাখলাম? আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। হল খুলে দেয়ার পর যাতে আবার বন্ধ করতে না হয় তাই এক ডোজ টিকা নেয়ার সময় পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ করছি। বুধবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সম্পর্কে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা চাইলে আন্দোলন করতে পারে, এটা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি তাদের যেহেতু তারা এতাদিন ধৈর্য ধরেছে আর কয়েকটা দিন অপেক্ষা করার অনুরোধ করবো। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ক্যাম্পাস খুলে দিতে আমাদের পরিকল্পনা ও প্রস্ততির ঘাটতি নেই। তবে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আছে হলে উঠতে হলে অন্তত এক ডোজ টিকা নিতে হবে।

[caption id="attachment_308688" align="aligncenter" width="700"] ফাইল ছবি[/caption]

টিকা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি সম্পর্কে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম জানান, অনেক শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয় পত্র না থাকায় তারা এতোদিন আবেদন করতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) সেসব শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধনের তথ্য চেয়েছে। সে নির্দেশনাকে সামনে রেখে আমরা সকল শিক্ষার্থীর টিকা রেজিস্ট্রশন তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজিসি) পাঠানোর জন্য কাজ করছি। তারা তথ্যগুলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। ২৭ তারিখের মধ্যেই এ রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।

শিক্ষার্থীরা কিভাবে টিকা নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে টিকা দেয়ার ব্যাপারে আমরা মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। ‘টিকা ব্যবস্থাপনা’ মন্ত্রণালয় করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা সুরক্ষার টেকনিক্যাল হ্যান্ডস নেই। মন্ত্রণালয় যেকোন ভাবেই শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদান সম্পন্ন করবে। প্রয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে টিকা বুথ স্থাপন করবে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রশাসন তাঁদের সব ধরণের সহযোগিতা করবে।

ফারজানা ইসলাম জানান, প্রক্রিয়া অবলম্বন করেই শিক্ষার্থীদের হলে উঠানো হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার তারিখ ঘোষণা হবে। আমরা করোনার ভয়াবহতার মধ্যেও যেভাবে ‘ডিজাস্টার অর্ডিন্যান্স’ পাস করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম অনলাইনে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছি সেভাবে সুষ্ঠু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই ক্যাম্পাস ও হল খোলা হবে। যাতে কোনভাবেই আমাদের পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করতে না হয়।

তিনি আরও জানান, আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে নেই। অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রেখেছি। সকল ব্যাচের শিক্ষার্থীরা অনলাইনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

ক্যাম্পাস খোলার পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, খোলার পর শিক্ষার্থীরা ১৫ দিন হলে অবস্থান করবে। হলে থেকেই অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করেই ক্লাসে বসাতে হবে। অন্যদিকে কিছু কিছু ক্লাস শিক্ষার্থী সংখ্যার তুলনায় সংকীর্ণ। সেক্ষেত্রে আমাদের শিফটভিত্তিক ভাগ করে অথবা একদিন পর পর ক্লাস নেওয়া লাগতে পারে।