×

খেলা

দশ গোলে শেষ সাবিনাদের এশিয়ান কাপের স্বপ্ন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৫২ পিএম

দশ গোলে শেষ সাবিনাদের এশিয়ান কাপের স্বপ্ন

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বুধবার ইরানের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে কাটিয়ে বল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন মনিকা চাকমা। ইন্টারনেট

উজবেকিস্তানে এশিয়ান কাপের কোয়ালিফাইয়ারে বুধবার ‘জি’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইরানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশের মেয়েরা। এ ম্যাচে বাংলাদেশকে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারায় ইরানের মেয়েরা। এর আগে সাবিনারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় জর্ডানের। সে ম্যাচেও ৫-০ গোলের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশের মেয়েরা। টানা দুটি ম্যাচ হারায় এশিয়ান কাপের মূল পর্বে আর খেলা হচ্ছে না লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। বাছাইপর্ব থেকেই তাদের বিদায় নিতে হলো।

জর্ডানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারার পর সবার প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ ইরানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে এবং মূল পর্বে জায়গা করে নেয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত টিকে থাকবে। তবে টানা দুটি ম্যাচে হারায় সব আশা শেষ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫-০ গোলের জয় তুলে নিয়ে ইরানের মেয়েরা এখন তাদের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ‘জি’ গ্রুপের শেষ পর্বে ইরান ও জর্ডান খেলতে নামবে। এখন এই ম্যাচ পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। এই দুই দলের মধ্যে যে দেশ জয় পাবে, সে দল মূল পর্বে খেলার টিকেট পাবে।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ইরানের অধিনায়ক বেহনাজ তেহেরখানি দুটি গোল করেন। দুটি গোলই করেন পেনাল্টি থেকে। অন্যদিকে দলের হয়ে একটি করে গোল করেছেন মেলিকা মোতেভাল্লি, গুলনুশ খোশরাভি ও হাজার দাভাগি।

বাংলাদেশ প্রথম গোলটি হজম করে মোতেভাল্লির পা থেকে। সেট পিস থেকে শট করলে বলের অবস্থান ঠিকমতো বুঝতে পারেননি গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। ফলে বল জালে জড়িয়ে যায়। তবে এরপর ইরানের নেগিন জেন্ডির একটি ব্যাকহিল পাস অসাধারণভাবে ঠেকিয়ে দেন রূপনা। কিন্তু আরেকটি সেট পিস থেকে খোশরাভি হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন। ফলে গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা আরো পিছিয়ে যায়। এরপর খুব দ্রুতই ম্যাচ বাংলাদেশের হাত থেকে ফসকে যেতে থাকে।

ম্যাচে ফেরার আশা শেষ হয়ে যায় যখন মনিকা চাকমা হ্যান্ডবল করে বসেন। আর পেনাল্টি থেকে গোল করার সুযোগ পেয়ে তাহেরখানি গোল করে ব্যবধান ৩-০ করে ফেলেন ম্যাচের ৩০ মিনিটের খেলা শেষ হওয়ার আগেই। ম্যাচের ৫০ মিনিটের সময় দাভাগি ২০ মিনিট দূর থেকে গোল করেন। এরপর আরেকটি হ্যান্ডবল থেকে পাওয়া পেনাল্টি থেকে ব্যবধান ৫-০ করেন ইরানের অধিনায়ক। বাংলাদেশ ম্যাচে একটি গোল পেতে পারত। কিন্তু কপাল খারাপ হওয়ায় টুর্নামেন্টে কোনো গোল না করেই দেশে ফিরতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ম্যাচের শেষ দিকে শিউলি আজিমের করা একটি হেড অল্পের জন্য গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ের পর এখন ইরানের ভাবনায় শুধুই জর্ডান। তাদের বিপক্ষে যদি জয় তুলে নিতে পারে, তাহলে নারীদের ফুটবলে ইরান প্রথমবার বড় কোনো টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। অন্যদিকে বাংলাদেশের এখন চিন্তায় থাকবে ২০২৬ সালের এশিয়ান কাপ। তারা অবশ্যই চাইবে পরবর্তী এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিতে।

এদিকে মেয়েদের এশিয়ান কাপে খেলবে ১২টি দেশ। আয়োজক ভারতসহ মোট চারটি দেশ সরাসরি জায়গা করে নিয়েছে। বাকি আটটি দেশ যাবে বাছাইপর্বের বাঁধা পার হয়ে। ভারত আয়োজক হিসেবে সরাসরি খেলবে। অন্যদিকে ২০১৮ এশিয়ান কাপের চ্যাম্পিয়ন জাপান, রানার্সআপ অস্ট্রেলিয়া ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারী দেশ চীন সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করে।

এদিকে উজবেকিস্তানে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে খেলতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশ নেপালের মেয়েদের বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলে। ওই দুটির প্রথমটিতে বাংলাদেশ ২-১ গোলের ব্যবধানে হারে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালিদের রুখে দেয় ০-০ গোলে।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ হারলেও ম্যাচের শেষ দিকে তারা ম্যাচের ফেরার জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায়। এমনকি বেশ কয়েকটি ভালো সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু ফিনিশিংয়ের অভাবে বাংলাদেশকে হারের স্বাদ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। দ্বিতীয় ম্যাচে নেপালিদের আর গোল করতে দেয়নি সাবিনারা। আর দ্বিতীয় ম্যাচের ফলাফলের পর সমর্থকরা আশা করছিল হয়তো এশিয়ান কাপের বাছাইয়েও তারা ভালো কিছু করবেন। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েদের ফিরতে হচ্ছে সম্পূর্ণ খালি হাতে।

এমনকি তারা বাছাইয়ে কোনো গোলও উপহার দিতে পারেননি। বাংলাদেশের মেয়েদের খেলা শেষ চারটি ম্যাচের ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে বাংলার মেয়েদের পারফরম্যান্স খুব ভালো ছিল না। শেষ চারটি ম্যাচে বাংলাদেশ মাত্র একটি গোল দিতে পেরেছে। আর গোল হজম করেছে ১২টি, যা দলের খেলোয়াড় বা সমর্থক কারো জন্যই সুখকর না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App