×

শিক্ষা

জবির নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্বের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৩:৫৪ পিএম

জবির নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্বের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ

অপূর্ব কুমার সাহা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহার বিরুদ্ধে একই দপ্তরের দুই সহাকারী প্রকৌশলীকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই প্রধান প্রকৌশলীসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে পৃথক দুইটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন। অভিযোগপত্রের বিষয়ে বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রকৌশল দপ্তর ও রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈদ্যুতিক পোল মেরামতের জন্য ২৫ হাজার টাকা আসে। কিন্তু তাকে কাজ করতে না দিয়ে কাজ নিজের মানুষ দিয়ে কাজ করান নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা। পরে কাজটি ২০ হাজার টাকায় সম্পূর্ণ হলে বিল প্রদান করেন মাজহার। এরপর খরচ না হওয়া কাজের বাকি ৫ হাজার টাকা চান অপূর্ব কুমার। তার অধস্তন মাজহার সে টাকা তাকে না দিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে জমা দিতে চান।

বিষয়টি নিয়ে গত সোবরার (২০ সেপ্টেম্বর) দুইজনেই প্রধান প্রকৌশলীর রুমে গেলে দুইজনের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় অন্য একটি কাজের জন্য এ রুমে ঢুকেন আরেক সহকারী প্রকৌশলী গৌতম কুমার সিকদার। একসময় অপূর্ব রেগে গিয়ে মাজহারকে মারতে উদ্যত হন। কিন্তু সেটা ঠেকাতে গিয়ে চড় ও ঘুষি লাগে গৌতম কুমারের গালে। পরে আবার মারতে উদ্যত হন অপূর্ব। এসময় প্রধান প্রকৌশলী পরিস্থিতি শান্ত করেন।

ঘটনার বিষয়ে সহকারী প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমার নামে মেরামত কাজের টাকা আসলেও অপূর্ব স্যার নিজের মানুষ ঠিক করে কাজ করান। আমি শুধু তাদের কাজের বিনিময়ে বিল পরিশোধ করেছি। পরে আমার কাছে তিনি খরচ না হওয়া ৫ হাজার টাকা চান। আমি প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা বলে জমা দিতে চাইলে তিনি রেগে যান। তিনি অভিযোগ করেন কাজটি অসম্পূর্ণ। কিন্তু কাজটি তার মানুষ করেছেন। এক পর্যায়ে তিন আমার উপর চড়াও হন।

এছাড়া সহকারী প্রকৌশলী গৌতম কুমার সাহা বলেন, আমি ঠেকাতে গিয়ে মার খেলাম। যত যাই হোক একজন সিনিয়র হয়ে জুনিয়র কলিগের গায়ে হাত দিতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশে আইন রয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।

এদিকে আরও জানা যায়, গত বছরের ১৬ আগস্ট অপূর্ব কুমার সাহা একই দপ্তরের আরেক কর্মচারী টেলিফোন টেকনিশিয়ান রতন ঘোষকে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করেন। এ ঘটনায় পরদিন রতন ঘোষ বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি আবেদন করেন। সেখানে মারধরের বিষয়ে বলা হয়, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের টেলিফোনে লাইন টিক করার জন্য বিটিসিএলের রমনা অফিসে চিঠি দিই। কিন্তু তারা পাননি জানিয়ে অপূর্ব স্যার দপ্তরে সবার সামনে আমকে চড় থাপ্পড় দিয়ে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেন। তুই কিভাবে চাকরি করোস বলেও হুমকি দেন। মারধরের ঘটনাস্থলে সে সময় নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হোসেন, প্রকৌশলী মাসুদ রানা, মুহিত উল আল, গৌতম কুমার, জাহিদুল ইসলাম, হিমাদ্রত বাহাদুরসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এর পরদিন প্রকৌশল দপ্তরের প্রায় সকলের (১০/১২ জন প্রকৌশলী) সাক্ষরসহ বিচারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে আবেদন করেন রতন ঘোষ।

এ আবেদনের পর ফোন করে রতন ঘোষের স্ত্রীকে হুমকি ধামকি দেন অপূর্ব কুমার সাহা। ঘটনার দশদিন পর একই বছরের ২৭ আগস্ট রতনের স্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ জানিয়ে বলেন, অপূর্ব কুমার স্যার ২৬ আগস্ট আমাকে ফোন করে অভিযোগটি তুলে নিতে বলেন। আমি বলি এটা অফিসিয়াল বিষয় স্যার। আমি তো অফিসের কেউ না। এরপর তিনিসহ আরও কয়েকজন প্রকৌশলী পরিচয় দিয়ে অভিযোগ তুলে না নিলে খুন খারাপি হয়ে যাবে বলে আমাকে হুমকি ধামকি দেন। পরে আমি ভয়ে আর কল রিসিভ করছি না।

মারধরের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী অপূর্ব কুমার সাহা বলেন, এ বিষয়ে আমি কথা বলতে চাচ্ছি না। আপনি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সাথে যোগাযোগ করেন। পূর্বে এক কর্মচারীকে মারধরের বিষয়েও জানতে চাইলেরতিনি ফোন কল কেটে দেন। তবে বর্তমান ঘটনার বিসয়ে অপূর্ব কুমার সাহা তার অভিযোগপত্রে বলেন, সহকারী প্রকৌশলীরা তার সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং বলেন তার অধীনে কাজ করবেন না। এরপর নানারকম খারাপ ও উত্তেজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, আমার সামনে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে। পরে দুই পক্ষ অভিযোগ করেছে। এরআগেরও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমি বিষয়টি দেখছি। সমস্যাটি সমাধান না হলে দেশের প্রচলিত আইন রয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো ওহিদুজ্জামান বলেন, আমাদের কাছে অনুলিপি দিয়েছে ঘটনাটি জানার জন্য। প্রকৌশল দপ্তর বিষয়টি দেখছে। আমাদের কাছে সরাসরি অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে দেখব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App