×

সারাদেশ

গভীর রাতে চলন্ত বাসের ভেতর সন্তান প্রসব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৪ এএম

গভীর রাতে চলন্ত বাসের ভেতর সন্তান প্রসব

সোমবার রাত আড়াইটায় বাসের ভেতর নিরাপদে প্রসূতির সন্তান জম্মদানের মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।

মোহাম্মদ আবদুল্লাহ (৪০) নারায়ণগঞ্জ থেকে রিলাক্স পরিবহনে করে তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ফারেছা আক্তারকে (৩১) নিয়ে কক্সবাজারের চকরিয়ায় শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। রাত যখন আড়াইটা, তখন গাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়। ঠিক তখনই প্রসব বেদনা ওঠে ফারেছার। আবদুল্লাহ বাস চালককে বিষয়টি জানান। ফারেছার প্রসব বেদনা বেড়ে গেলে বাসচালক ও যাত্রীরা বিচলিত হয়ে পড়েন।

এরপর চালক পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে বাসটি থামান। কিন্তু ফারেছার অবস্থা এতই খারাপ ছিল বাসের সিট থেকে তাকে নামানো যাচ্ছিল না। উপায় না দেখে যাত্রীরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ডেকে নিয়ে আসেন।

চিকিৎসকরা এসে দেখেন, পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বাসের ভেতরেই করতে হবে সন্তান প্রসবের আয়োজন। যাত্রী ও বাস চালকের সহযোগিতায় বাসের সিটেই একটি পুত্রসন্তানের জম্ম দেন ফারেছা। বাসের ভেতর নিরাপদে প্রসূতির সন্তান জম্মদানের মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার রাত আড়াইটায়। বর্তমানে মা ও সন্তান দুজনে ভালো আছেন।

সন্তানের বাবা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, কঠিন একটি সময় পার করেছি। আমি কৃতজ্ঞ রিলাক্স পরিবহনের বাসচালক, বাসের যাত্রী, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. রাজিব দে, মিডওয়াইফ বিবি হালিমা ও শরিফা জেসমিনের কাছে।

স্ত্রীর এমন কঠিন সময়ে তাকে নিয়ে কেন শ্বশুরবাড়িতে আসতে হয়েছে এমন প্রশ্ন করা হলে আবদুল্লাহ বলেন, তার স্ত্রী ফারেছার সন্তান প্রসবের তারিখ ছিল আরও ১০ দিন পর। আর তার শারীরিক অবস্থাও ভালো ছিল। সবকিছু ঠিক দেখে চকরিয়ার হাসের দীঘি এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু হঠাৎ তার প্রসব বেদনা উঠলে আমি চোখে অন্ধকার দেখি। এ সময় আমাকে ও আমার স্ত্রীকে সাহস দিয়েছেন বাসে থাকা প্রতিটি যাত্রী ও চিকিৎসকরা।

আবদুল্লাহ ও ফারেছা দম্পতির প্রথম সন্তান এটি। আবদুল্লাহর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ। তিনি নারায়ণগঞ্জে রিকশা চালান।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক সহকারী সার্জন ডা. রাজিব দে বলেন, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে হঠাৎ করে বেশ কয়েকজন লোক জরুরি বিভাগে আসেন। তারা আমাকে জানান, বাসের এক যাত্রীর প্রসব বেদনা উঠেছে। আমরা দ্রুত বাসে উঠি। কিন্তু রোগীকে সেখান থেকে নামানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই বাসেই তার সন্তান প্রসব হয় আমাদের চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে।

পরে এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মা ও নবজাতককে দেখতে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিড় জমায় উৎসুক মানুষ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App