×

খেলা

শেষ ম্যাচ রাঙাতে পারবেন সাবিনারা!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৪৭ পিএম

শেষ ম্যাচ রাঙাতে পারবেন সাবিনারা!

এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নেন সাবিনারা।

ভারতের মাটিতে ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হবে নারীদের এএফসি এশিয়ান কাপ। সেই আসরে অংশগ্রহণ করতে হলে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে আগে পেরোতে হবে বাছাইপর্বের বাঁধা। উজবেকিস্তানে অনুষ্ঠেয় সেই আসরের জন্য এরই মধ্যে একটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সেই ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। আজ ‘জি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইরানের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামবেন সাবিনারা। শেষ ম্যাচে বড় ব্যবধানে জয়ের দেখা পেলে হয়তো প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাওয়ার টিকেট পেতেও পারে বাংলাদেশ। তবে সেক্ষেত্রে ইরানকেও বড় ব্যবধানে জিততে হবে জর্ডানের বিপক্ষে। প্রথম ম্যাচে হেরে সমীকরণটা অনেক কঠিন হলেও স্বপ্ন দেখতেই পারেন সাবিনারা। বুধবার উজবেকিস্তানের রাজধানী তাসখন্দের বুনিয়দকর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ইরানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে ২৪টি দল আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গ্রুপে থাকা তিন দল থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এক দল যাবে ২০২২ সালের চূড়ান্ত পর্বে। প্রতিটি দল এক ম্যাচ করে দুই দেশের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলবে। সুতরাং এ প্রতিযোগিতায় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন অর্থাৎ গ্রুপের দুই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে তবেই ভারতের টিকেট নিশ্চিত করা যাবে। সে পরিকল্পনায় অবশ্য বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়েছে প্রথম ম্যাচ হেরে। অবশ্য একটা সুযোগ আছে বাংলাদেশের সামনে। বাংলাদেশ যদি বুধবার ইরানকে বড় ব্যবধানে হারাতে পারে, তাহলে সেই সুযোগ আসবে সাবিনাদের সামনে। সেক্ষেত্রে ইরানকেও বড় ব্যবধানে হারাতে হবে জর্ডানকে। বাংলাদেশ যদি ইরানকে ৬-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারাতে পারে, একই সঙ্গে ইরান শেষ ম্যাচে জর্ডানকে ৫-০ গোল ব্যবধানে হারাতে পারলে সাবিনারা হয়ে যাবেন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। এক্ষেত্রে সমান পয়েন্ট পাওয়া তিন দলের মধ্য গোলসংখ্যায় এগিয়ে থাকা দল চ্যাম্পিয়নের আসন দখল করে। কিন্তু এটি খুবই জটিল প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশের মূল পর্বে যাওয়ার আশাও ক্ষীণ। কিন্তু আশার আলো দেখতে পারেন বাংলার নারীরা। দলের অন্যতম স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রাণীর বড় ব্যবধানে জয়ের রয়েছে অনেক কীর্তি। যদিও সেগুলো ছিল বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে।

ইরানের বিপক্ষে বাংলার মেয়েরা আন্তর্জাতিক ম্যাচে একবারই মুখোমুখি হয়েছিল। সেটিও ছিল এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচ। ২০১৩ সালের ওই ম্যাচে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল হেরেছে ২-০ গোলে। আট বছর পরও ইরান বাংলাদেশের চেয়েও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের তারা বাংলাদেশের চেয়ে ৬৫ ধাপ এগিয়ে আছে ৭২তম স্থানে। আর বাংলাদেশের মেয়েদের ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অবস্থান ১৩৭তম। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে দুই দলের শক্তি সামর্থ্যরে ফারাক অনেক বেশি। ফুটবল এমন একটি খেলা, যেখানে আপনাকে বুদ্ধিদীপ্ত খেলার পাশাপাশি শারীরিক গড়নেও এগিয়ে থাকতে হবে। এই দিক দিয়ে শারীরিক গঠন, উচ্চতা, ওজন সব কিছু মিলিয়ে তারা বাংলাদেশের মেয়েদের তুলনায় এগিয়ে। তাছাড়া খেলাটাও হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ উজবেকিস্তানে। একই অঞ্চলের দেশ হওয়ায় তাসখন্দের স্টেডিয়ামটি ইরানের কাছে হোম ভেন্যুর মতো। এত প্রতিকূলতার মাঝেও বাংলাদেশকে নামতে হবে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই। ২০১৩ সালে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে খেলা সব ফুটবলার হয়তো এখন বাংলাদেশ দলে নেই। কিন্তু আছেন সাবিনা, কৃষ্ণারা। ইরানের মূল দলের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচে জয় না পেলেও পেয়েছে বয়সভিত্তিক ম্যাচে। ২০১৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ এএফসি এশিয়ান কাপে বাংলার মেয়েরা জয় পেয়েছিল ৩-০ গোল ব্যবধানে। এই একটি সাফল্য বাংলার মেয়েদের মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির বিপক্ষে সাহস জোগাচ্ছে।

বাংলাদেশ দলের স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রাণী নিজেদের শতভাগ ফিট দাবি করে টুর্নামেন্টের শুরুতে বলেন, ‘অনেক কঠোর অনুশীলন করেছি। তিন থেকে চার সপ্তাহ অনেক পরিশ্রম করছি। আমাদের ফিটনেস লেভেল ঠিক আছে। আমরা ১০০ ভাগ নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছি। আগে যেহেতু ইরান, জর্ডানের সাথে খেলেছি, তাই একটু আত্মবিশ্বাসও পাচ্ছি। যদিও সেটা বয়সভিত্তিক দল ছিল। এখন তো সিনিয়র লেভেলের খেলা, তাই পার্থক্য তো থাকবেই। তখন খেলেছি অনূর্ধ্ব-১৬ আর এখন তো জাতীয় দল। আমি মনে করি আগে যে বয়স ছিল তখন আমাদের শরীরে শক্তি কম ছিল, বুদ্ধিও কম ছিল। সে তুলনায় আমরা বড় হয়েছি, এমনকি আমাদের সব কিছুতেই উন্নতি ঘটছে। শারীরিক, মানসিক বা টেকনিকের দিক থেকে।’ কৃষ্ণা ওই সাক্ষাৎকারে আরো বলেন, ‘আমরা চাইব ইরানের বিপক্ষে গোল করতে। তাদের মেয়েরা শারীরিকভাবে শক্তিশালী কিন্তু আমরা চেষ্টা করলেই গোল করতে পারব। শারীরিকভাবে আমরাও শক্তিশালী, ওরা চেষ্টা করবে, আমরাও করব।’

এর আগে বাংলাদেশ দল নেপালে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল। কিন্তু সেই ম্যাচগুলোয় নিজেদের রাঙাতে পারেননি সাবিনারা। প্রথম ম্যাচ হেরেছিল ২-১ ব্যবধানে। পরের ম্যাচ অবশ্য ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন কৃষ্ণারা। কিন্তু মাঠ ছেড়েছিলেন গোলশূন্য ড্র করে। এরপর এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে জর্ডানের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল নেমেছিল যেন গোল হজম করতে। রক্ষণাত্মক ভঙ্গিতে খেলেও হার এড়াতে পারেননি ছোটনের শিষ্যরা। এবার মিশন ইরান। প্রথম ম্যাচে হারের তিক্ত স্বাদ ভুলে বাংলাদেশ দল নিজেদের শেষ ম্যাচ রাঙাতে পারবে তো?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App