×

আন্তর্জাতিক

পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে, দাবি ফ্রান্সের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০২:২৩ পিএম

পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে, দাবি ফ্রান্সের

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন চুক্তিতে আপত্তি তুলেছে ফ্রান্স। ছবিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।

পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে, দাবি ফ্রান্সের

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

পেছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে, দাবি ফ্রান্সের

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার নিউক্লিয়ার সাবমেরিন নিয়ে চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির সুযোগ দিচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে ঘোর আপত্তি তুলেছে ফ্রান্স।

বিশ্ব গণমাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই চুক্তি এইউকেইউএস হিসেবে পরিচিত হয়েছে। ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জিঁ-ইয়েভস লে দ্রিয়েন বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের জোট গঠন ‘পেছন থেকে ছুরিকাঘাতের শামিল’। কেননা এর আগে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়া ফ্রান্সের নৌযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নোভাল গ্রুপের সঙ্গে সাবমেরিন চুক্তি করেছিলো। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তির মধ্য দিয়ে অস্ট্রেলিয়া ওই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে এবং এর মধ্য দিয়ে ফ্রান্স লাঞ্ছিত হয়েছে বলে দাবি করেছে ফ্রান্স।

এ ব্যাপারে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার আপোষ না করার নীতি গ্রহণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশই বিবাদে জড়াতে চাইছে না। ফলে ফ্রান্স সাম্প্রতিক সময়ে একাই ৩ শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াকে রুখে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে।

[caption id="attachment_308346" align="aligncenter" width="700"] ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ[/caption]

ফ্রান্স কেন ক্ষুব্ধ?

ফ্রান্সের নৌযান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নোভাল গ্রুপের সঙ্গে ২০১৬ সালে সাবমেরিন বাণিজ্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু সম্প্রতি ত্রিদেশীয় অংশীদারিত্বমূলক চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্সের ওই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছে ফ্রান্স। প্রায় ৬ হাজার ৬০০ কোটি ডলারের সেই চুক্তি ভঙ্গের ক্ষোভে ফুঁসছে ফ্রান্স সরকার। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া থেকে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া কেন সাবমেরিন চায়?

অস্ট্রেলিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় জলসীমায় যে কোনো ধরনের হুমকি থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে নিউক্লিয়ার সাবমেরিন চুক্তি করেছে এবং ফ্রান্সের সঙ্গে পূর্বের চুক্তি বাতিল করেছে। এইউকেইউএস চুক্তির মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ চীন সাগরে নিজের নৌবাহিনীর ক্ষমতা বাড়াতে পারবে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থাকলে চীনের প্রভাবও কমানো সম্ভব হবে।

[caption id="attachment_308345" align="aligncenter" width="700"] যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন[/caption]

চুক্তি নিয়ে প্রতিক্রিয়া

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই চুক্তিকে ‘বিশ্বাসভঙ্গের চুক্তি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে ফ্রান্স। এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছেন। তিনি ‘এটি বিশ্বাসভঙ্গের চুক্তি নয়’ এমন দাবি করেছেন। অপরদিকে দীর্ঘ দিন ধরে মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ফ্রান্সে অবস্থান নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশসহ বিশ্বের অনেক দেশই স্তম্ভিত হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলোচনার আগ্রহ দেখিয়েছেন। জার্মান সরকার এই বিষয়ে অবগত আছে- কিছুদিন আগে এমন কথা বললেও এখন অবধি নীরব ভূমিকা পালন করছে। নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন দাবি করেছেন, ফ্রান্সের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব কখনোই শেষ হবে না।

আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাচ্ছেন ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রী। তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন না তিনি।

এদিকে এইউকেইউএস চুক্তির সমালোচনা করেছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনও। তিনি বলেন, এই চুক্তির ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্রের প্রতিযোগিতা শুরু হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App