×

ফুটবল

জর্ডান বধে মরিয়া সাবিনারা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৭ পিএম

জর্ডান বধে মরিয়া সাবিনারা

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে রবিবার মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। তাদের প্রতিপক্ষ জর্ডান।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে ২০২২ সালে হতে যাচ্ছে নারীদের এশিয়ান কাপ প্রতিযোগিতা। এই আসরের বাছাইপর্বের মিশনে আজ থেকে মাঠে নামছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বাছাইয়ে তাদের প্রতিপক্ষ ইরান ও জর্ডান। প্রথম ম্যাচে সাবিনারা খেলতে নামবেন জর্ডানের বিপক্ষে। উজবেকিস্তানে বাছাইপর্বের দুই ম্যাচে ইরান ও জর্ডানকে হারাতে পারলে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়ান কাপের টিকেট পাবে বাংলাদেশ।

তবে দীর্ঘ আড়াই বছর পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে ফিরে সাবিনাদের জন্য মিশনটা একটু কঠিন হবে। বাছাইপর্বে খেলতে যাওয়ার আগে নেপালের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশের মেয়েরা। সেখানে আশানুরূপ প্রত্যাশা দেখাতে পারেননি সাবিনারা। প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলের ব্যবধানে হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করে বাংলার মেয়েরা। এদিকে র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে ৭৪ ধাপ এগিয়ে থাকা জর্ডানের বিপক্ষে রবিবার মুখোমুখি হচ্ছে সাবিনারা। বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায় ম্যাচটি উজবেকিস্তানের মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এশিয়ান কাপের মূল পর্বে পৌঁছতে জয় ছাড়া অন্য বিকল্প ভাবছেন না বাংলাদেশের মেয়েরা।

বাংলাদেশ দলের সেরা স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রানী সরকার এক সাক্ষাৎকারে জানান, আমরা চাইব জর্ডানের বিপক্ষে গোল করতে। জর্ডানের মেয়েরা শারীরিকভাবে শক্তিশালী কিন্তু আমরা চেষ্টা করলেই গোল করতে পারব। শারীরিকভাবে আমরাও শক্তিশালী, ওরা চেষ্টা করবে, আমরাও করব। অনেক দিন পর টুর্নামেন্ট খেলতে নামছি। যেহেতু এশিয়ান কাপের বাছাইপর্ব গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন না হয়ে মূলপর্বে যাওয়া যাবে না, তাই জয়ের চিন্তা ছাড়া অন্য কোনো লক্ষ্য নেই আমাদের।’ এ সময় কৃষ্ণা দলের প্রতি ভরসা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি মনে করি আগের থেকে বাংলাদেশ দল আরো ভালো। আসলে অনেক দিন পর আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলব তাই আমরা চাইব নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে। নেপালের বিপক্ষে ভালো খেলতে পারলে যদিও আত্মবিশ্বাস বাড়তো কিন্তু তাদের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে আমরা মানসিকভাবেও প্রস্তুত হয়েছি। নেপালের দুই ম্যাচে যে ভুলগুলো করেছি সেগুলো শুধরে নিয়ে জর্ডান ম্যাচে আরো ভালো করার চেষ্টা করব।’

উজবেকিস্তানে এশিয়ান বাছাইপর্বের ম্যাচে ৮টি গ্রুপে লড়াই করবে মোট ২৪টি দল। প্রতিটি গ্রুপে তিন দল থেকে যারা চ্যাম্পিয়ন হবে, তারাই পৌঁছে যাবে ভারত এশিয়ান কাপ মূলপর্বের মিশনে। বড় বড় দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করে এই মিশনে বাংলাদেশের নারীদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে একবারে যে আশা নেই এমনটি বলা যায় না।

এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে বাংলাদেশ পড়েছে ‘জি’ গ্রুপে। গ্রুপটিতে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হিসেবে থাকছে শক্তিশালী ইরান ও জর্ডান। র‌্যাঙ্কিংয়ে যেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৭ সেখানে ৭৪ ধাপ এগিয়ে জর্ডানের অবস্থান ৬৩তম। অন্যদিকে ইরানও ৬৫ ধাপ এগিয়ে থেকে অবস্থান করছে ৭২তম স্থানে। তার ওপর র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০১তম স্থানে থাকা নেপালের মেয়েদের বিপক্ষে সাবিনাদের দুইটি প্রস্তুতি ম্যাচে ফলাফলও সন্তোষজনক নয়। এক ম্যাচে হার আবার অন্যটিতে ড্র। সেখানে ৭৪ ধাপ এগিয়ে থাকা জর্ডানকে বাংলার মেয়েরা হারাতে পারবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়। অবশ্য বাংলার মেয়েরা ইরান, জর্ডানের মত দেশগুলোকে আগেও হারিয়ে ছিল, যদিও সেটা ছিল বয়স ভিত্তিক আসরে। তবুও আশা রাখছেন কৃষ্ণারা।

সম্প্রতি শেষ হওয়া দেশের ঘরোয়া লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা কৃষ্ণা নিজেদের শতভাগ ফিট দাবি করে বলেন, ‘লিগ শেষ করে যখন ক্যাম্পে আসছি তখন প্রথম দিকে একটু কষ্ট হয়েছে, অনেক কঠোর অনুশীলন ছিল। তিন থেকে চার সপ্তাহ অনেক পরিশ্রম করছি। আমাদের ফিটনেস লেভেল ঠিক আছে। আমরা ১০০ ভাগ নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছি। আগে যেহেতু ইরান, জর্ডানের বিপক্ষে খেলেছি তাই একটু আত্মবিশ্বাসও পাচ্ছি। যদিও সেটা বয়সভিত্তিক দল ছিল। এখন তো সিনিয়র লেভেলের খেলা তাই পার্থক্য তো থাকবেই। তখন খেলেছি অনূর্ধ্ব-১৬ আর এখন তো জাতীয় দল। আমি মনে করি আগে যে বয়স ছিল আমাদের এবং শরীরে শক্তি কম ছিল, বুদ্ধি কম ছিল। সে তুলনায় আমরা বড় হয়েছি, এমনকি আমাদের সব কিছুতেই উন্নতি ঘটছে। শারীরিক, মানসিক বা টেকনিকের দিক থেকে।’

বাংলাদেশ দল আগের থেকে এখন আরো ভালো দাবি করে কৃষ্ণা জানান, যখন আমাদের ফিটনেস আন্তর্জাতিক মানের হয়েছে তখন আমাদের ট্যাক্টিকেল বিষয়গুলো নিয়েও কোচ কাজ করেছেন। জর্ডান, ইরানের মেয়েরা বড়-শক্তিশালী কিন্তু আমরাও কোনো অংশে কম নয়। কারণ আমাদের অধিকাংশ মেয়েদের বয়স ২০ এর ওপরে। বয়স অনুযায়ী এবং যে কঠোর পরিশ্রম সব কিছু ঠিক ঠাক ভাবেই করছি, তাই আমি মনে করি ওদের মতো আমরাও শক্তিশালী। আমরা ভালো খেলার জন্য মাঠে নামব এবং আমাদের লক্ষ্য থাকবে ওদের হারানো। আমি ব্যক্তিগতভাবে আসলে যেহেতু লিগে সেরা গোলদাতা হয়েছি সেগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করবো। স্কোরিংয়ে এবং দলে খেলোয়াড়দের সাহায্য করার জন্য আমি আমার সর্বোচ্চটা দিবো।

ইরান ও জর্ডানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে জয় তোলা যদিও আপাতত অসম্ভবই মনে হচ্ছে, তারপরও সাবিনাদের আত্মবিশ্বাস প্রত্যাশার বাসা বাধছে। কারণ এই দলটিতে এমন কিছু তরুণী আছে যারা অনূর্ধ্ব-১৬ দলে খেলা অবস্থায় জর্ডান, ইরান, ফিলিপাইন, অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তানের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষগুলোকে হারিয়ে এসেছে। দুই ম্যাচে জয় না পেলেও এক ম্যাচে জয়, অন্য ম্যাচে ড্র করলেও সুযোগ থাকবে বাংলাদেশের সামনে। তবে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ গোল সংখ্যায় এগিয়ে থাকতে হবে। জর্ডানের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ইরানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App